নন্দীগ্রামের সংগঠিত হত্যা আমাদের একটা অদ্ভুত পোলারাইজেশনের সামনে দাঁড় করিয়েছে। দুদিকেই জর্জ বুশ উবাচ "ইফ ইউ আর নট উইথ আস, ইউ আর এগেইনস্ট আস" - স্বাভাবিকভাবে জেগে ওঠা কিছু প্রশ্ন করলে, বা জালিয়ানওয়ালাবাগের বা জেনারেল ডায়ারের সাথে তুলনাকে বাড়াবাড়ি বললে আপনি সিপিএমের দালাল, আর অন্যদিকে পুলিশি বাড়াবাড়ি বা লাগামছাড়া পার্টিকর্মীদের ইনভলভমেন্ট নিয়ে প্রশ্ন করলে আপনি মাওবাদি বা তৃণমূল।
স্বীকার করতে কোন দ্বিধা নেই যে আমি আপাদমস্তক সিপিএম সমর্থক, একসময়ের কর্মীও। দূরে থাকার কারণে এই দ্বিতীয় সত্ত্বাটার অবলুপ্তি ঘটে গেছে। কিন্তু তা হলেও, ১৫ই মার্চের গণহত্যার নিন্দে করতে আমার কলম কাঁপে না, দোষীদের শাস্তি দাবি করতে ঠোঁট কাঁপে না, মৃতদের সম্মান জানাতে চুপ থাকতে চাই, সত্য উদ্ঘাটনের দাবি করতে এই মুহুর্তের দোষারোপ বন্ধ করতে চাই। কিন্তু অনেক প্রশ্ন ওঠে - বিশেষ করে যখন দেখি শোকমিছিলের আড়ালে প্রোপাগাণ্ডা চলে। গুজব ছড়ায় - যার কোন প্রমাণ হয়তো নেই - চম্পলা সর্দার মনে আসে। স্বাভাবিক প্রশ্ন করলে উত্তর আসে - "মার শালাকে, ওটা কে? শালা দালাল, সব গুলিয়ে দিতে এসেছে।" বমি পায় যখন দেখি হত্যাকারী বা ঘাতকদের পরিচয়ের ভিত্তিতে মনস্থির করতে হয় - যে এটা গণহত্যা, নাকি গণআন্দোলন...নন্দীগ্রামের ঘটনাকে যাঁরা গণহত্যা বলেন, তাঁদের অনেকেই ছত্তিশগড়ের ঘটনাকে বলেন গণআন্দোলন বা নন্দীগ্রামেই সিপিএমের কর্মীকে পুড়িয়ে মারার ঘটনাকে বলেন মানুষের প্রতিবাদের নমুনা...
মানুষ হিসেবে পুরো ঘটনার প্রতিবাদ করতে দ্বিধা করিনি। সেদিন করেছি, আজও করছি, কালও করবো। কিন্তু মানুষ হিসেবেই যে প্রশ্নগুলো উঠছে সেগুলোও করবো - তাতে যদি দালালের ছাপ নিতে হয় সেটাও নেবো। শোকমিছিলের আড়াল থেকে যখন প্রোপাগাণ্ডার গন্ধ ওঠে, তার প্রতিবাদও করবো। চম্পলা সর্দার প্রসঙ্গে হাড়ে কাঁপুনি ওঠে তাঁদেরই যাঁরা সেই মিথ্যের সঙ্গী ছিলেন - এখনও তাঁদের উষ্কানির বিরুদ্ধে কথা বলবো। এর জন্যে যাঁরা বলেন "ইফ ইউ আর নট উইথ আস..." তাঁদের বলবো আয়না দেখতে।
এই মুহুর্তে আমাদের অনেকের মনোভাব হয়তো বাংলালাইভের এই "শেষ বসন্তের ডায়েরী"-র সাথে মেলে...
আর বন্ধু বৈজয়ন্তের পাঠানো লিংকে জেনোসাইডাল সোসাইটির কথা পড়ে আমারও হাড়ে কাঁপুনি ধরে। আমরা কি এই পথেই?
কে জানে! সময় বড় বিপন্ন। কোনও পথেই আর বিশ্বাস রাখতে পারছি না।
ReplyDeleteশমীক
বুদধোদেব বাবু out of control.
ReplyDelete