১৯৩০ এর দশকে আরএসএস এর এক নামকরা খুঁটি ছিলেন ডঃ বিএস মুঞ্জে - যিনি হেডগেওয়ারের মেন্টর হিসেবেও পরিচিত। তিরিশের দশকের শুরুতে ব্রিটিশ সরকারের সাথে ভারতের রাজনৈতিক নেতৃত্বের যে তিন রাউন্ড গোল টেবিল বৈঠক হয়েছিলো, সেখানে হিন্দু মহাসভার প্রতিনিধি হিসেবে আমন্ত্রিত ছিলেন মুঞ্জেও। ১৯৩১ সালের ১৫-২৪শে মার্চ মুঞ্জে রোম গেছিলেন মুসোলিনীর সাথে দেখা করতে। মুঞ্জের ডায়েরিতে প্রায় পনেরো পাতা জুড়ে ১৯শে মার্চ তারিখের সেই সাক্ষাতের বর্ণনা রয়েছে, আর রয়েছে ফ্যাসিস্ট সংগঠনগুলো সম্পর্কে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা। বিশেষ করে Balilla আর Avanguardisti - যে দুটো ফ্যাসিস্ট সিস্টেমের কর্নারস্টোন ছিলো - কমবয়সীদের "তৈরী" করার জন্যে - সেই দুটো নিয়ে প্রায় দুপাতা জোড়া প্রশংসা।
ভারতে ফেরার পর, ১২ই এপ্রিল, দ্য মারহাট্টা পত্রিকায় মুঞ্জের একটা সাক্ষাৎকার বেরোয় - যেখানে ভারতের হিন্দু সম্প্রদায়কে মিলিটারাইজ করার কথা বলেন মুঞ্জে - ফ্যাসিস্ট ইতালি আর নাজি জার্মানির ধাঁচে।
"In fact, leaders should imitate the youth movement of Germany and the Balilla and Fascist organisations of Italy. I think they are eminently suited for introduction in India, adapting them to suit the special conditions. I have been very much impressed by these movements and I have seen their activities with my own eyes in all details."
১৯৩৪ সালের ৩১শে মার্চ, মুঞ্জে, হেডগেওয়ার আর লালু গোখেলের মধ্যে এক বৈঠক হয় জার্মানি আর ইতালির ধাঁচে হিন্দুদের মিলিটারি অর্গানাইজেশন নিয়ে। নীচের ছবিটা মুঞ্জের ডায়েরি থেকে এই বৈঠকের বিবরণ...হাইলাইট করা অংশগুলো একটু খুঁটিয়ে দেখবেন...সনাতন ধর্ম আর ডিক্টেটর নিয়ে বক্তব্যটা ইন্টারেস্টিং লাগবে।
এই বিএস মুঞ্জের হাতেই নাসিকে প্রথম তৈরী হয়েছিলো ভোঁসলে মিলিটারি স্কুল ১৯৩৭ সালে। তার আগে অবশ্য ১৯৩৪ এই তৈরী হয় সেন্ট্রাল হিন্দু মিলিটারি এডুকেশন সোসাইটি, যার লক্ষ্য (ফের মুঞ্জেরই ভাষায়) ছিলো -
"to bring about military regeneration of the Hindus and to fit Hindu youths for undertaking the entire responsibility for the defence of their motherland, to educate them in the Sanatan Dharma, and to train them in the science and art of personal and national defence..."
অর্থাৎ, দেশটেশের চেয়ে এখানে অনেক বড় হল হিন্দু সম্প্রদায়টুকু। ১৯৩৭ সালে নাসিকে স্কুল তৈরীর অনেক পরে, ১৯৯৬ সালে নাগপুরে একটা শাখা তৈরী হয় এই ভোঁসলে মিলিটারি স্কুলের। নাসিকে ১৬০ একর আর নাগপুরে ৩০ একর জমির ওপর তৈরী এই দুটো স্কুল সেই শুরু থেকে হিন্দুত্বের "সৈন্য" তৈরী করার কাজ করে এসেছে সরকারের নাকের ডগায় বসে। সেনাবাহিনীর অনেক প্রাক্তনের মধ্যে হিন্দুত্বের যে রমরমা দেখতে পান বিভিন্ন চ্যানেলে আর মিডিয়ায়, তার পিছনে এই ভোঁসলে মিলিটারি স্কুলের অবদান খুব কম নয়। আর এই স্কুলেরই কৃতি ছাত্র এবং পরে শিক্ষক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল শ্রীকান্ত পুরোহিত - মালেগাঁও ব্লাস্টের অন্যতম কর্ণধার।
ভোঁসলে মিলিটারি স্কুল, সাভারকরের তৈরী অভিনব ভারত, সাধ্বী প্রজ্ঞা সিং ঠাকুর, অসীমানন্দ ইত্যাদিদের গল্পে পরে আসবো...
#ShadowArmiesOfHindutva
সূত্রঃ
(১) Shadow Armies: Fringe Organizations and Foot Soldiers of Hindutva, Dhirendra Kr. Jha
(২) Hindutva's Foreign Tie-up in the 1930s: Archival Evidence, Marzia Casolari, Economic & Political Weekly, Vol. 35, Issue 4, 22 Jan 2000
(৩) Nehru Memorial Museum and Library, Moonje Papers, microfilm, diary 1932-36
No comments:
Post a Comment