Monday, August 08, 2022

#ShadowArmiesOfHindutva - Part 3

আইআইটি বম্বের অধ্যাপক এক বন্ধুর লেখা পড়ছিলাম - কেন্দ্রীয় মন্ত্রক থেকে সরকারি চিঠি এসেছে সকলকে পরিবার, বন্ধুবান্ধব সকলকে নিয়ে একটা সিরিয়াল দেখতে বলে। চিঠিতে লেখা হয়েছে ছাত্রদেরও বলতে সিরিয়ালটা দেখতে, আর তারপর তাদের নিয়ে একটা ক্যুইজ করতে, যাতে ছাত্ররা কী "শিখেছে" জানা যায়। সিরিয়ালটা ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বছরে #AzadiKaAmritMahotsav উপলক্ষ্যে, আর সেখানে পরাধীন ভারতের টাইমলাইন ধরা হয়েছে ১৫০০ সাল থেকে - মানে মোটামুটি মুঘল সাম্রাজ্যের শুরু (যদিও সেটা সঠিকভাবে দেখলে ১৫২৬ খ্রীষ্টাব্দ) থেকে৷ যদি মুসলমান শাসনকেই পরাধীন ধরা হয়, তাহলে মুঘল শাসনের আগের প্রায় তিনশো বছরকে কোন অঙ্কে বাদ রাখা হল সেটা অবশ্য বোঝা যায় না - হতে পারে তুঘলকের সাথে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর মানসিকতার মিল আছে বলেই হয়তো...

তবে একটা ব্যাপার স্পষ্ট, অধ্যাপক বন্ধুও লিখেছেন - মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষকে "ওরা" হিসেবে চিহ্নিত করার অফিশিয়াল প্রক্রিয়ার শুরু এখান থেকেই। এতদিন বিজেপি মুখে বলতো, তথাকথিত "ফ্রিঞ্জ" গোষ্ঠীগুলো কুপিয়ে, পুড়িয়ে, পিটিয়ে করে দেখাত। এইবার তার "ফর্মালাইজেশন" শুরু হল। যদিও, এই তত্ত্বের শুরু বহু আগে। আজকে সেইটাই একবার ফিরে দেখি - এই তত্ত্বের সাথে ফ্যাসিস্ট আর নাৎসী আদর্শের ঠিক কতটা যোগাযোগ ছিলো।

************************************************
তিরিশের দশকের শেষার্ধ - মানে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার বছর দুয়েক আগের কথা…

ছাড়া পাওয়ার পরেই, ১৯৩৭ সালে হিন্দু মহাসভার প্রেসিডেন্ট হ'ন সাভারকর, আর এই পদে ছিলেন ১৯৪২ অবধি। যদিও সাধারণভাবে বলা হয় যে আরএসএস আর হিন্দু মহাসভার মধ্যে সম্পর্ক বিশেষ ভালো ছিলো না, আর সাভারকরের আমলেই এই দুই সংগঠনের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় - তবে ঘটনাপ্রবাহ দেখে মনে হয় সেটা সম্পূর্ণ গল্পকথা। এরকম ছাড়াছাড়ি তো হয়ইনি, বরং দিব্যি যোগাযোগ বহাল ছিলো। আরএসএস এর প্রতিষ্ঠাতা হেডগেওয়ার নিজেই হিন্দু মহাসভার সভাপতি ছিলেন ১৯২৬ থেকে ১৯৩১ অবধি, আর সাভারকরের জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার উৎসবে আরএসএস সদস্যদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মত ছিলো। সেই সময়ে আরএসএস আর হিন্দু মহাসভার বেশ কিছু সভায় সাভারকর বক্তৃতা দেন - যার মূল পয়েন্টগুলো ছিলো তৎকালীন আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি আর ভারতে হিন্দু-মুসলমান সম্পর্ক নিয়ে।

১৯৩৮ সালের পয়লা আগস্ট, পুণের এক সভায় (প্রায় ২০০০০ লোকের উপস্থিতিতে) সাভারকর জার্মানি আর ইতালিতে নাৎসী আর ফ্যাসিস্ট সরকারের সমর্থনে বক্তৃতা দেন। আক্রমণের মূল লক্ষ্য ছিলেন জওহরলাল নেহরু।

"Who are we to dictate to Germany, Japan or Russia or Italy to choose a particular form of policy of government simply because we woo it out of academical attraction? Surely Hitler knows better than Pandit Nehru does what suits Germany best. The very fact that Germany or Italy has so wonderfully recovered and grown so powerful as never before at the touch of Nazi or Fascist magical wand is enough to prove that those political “isms” were the most congenial tonics their health demanded.

India may choose or reject particular form of government, in accordance with her political requirements. But Pandit went out of his way when he took sides in the name of all Indians against Germany or Italy. Pandit Nehru might claim to express the Congress section in India at the most. But it should be made clear to the German, Italian, or Japanese public that crores of Hindu Sanghatanists in India whom neither Pandit Nehru nor the Congress represents, cherish no ill-will towards Germany or Italy or Japan or any other country in the world simply because they had chosen a form of government or constitutional policy which they though (sic) suited best and contributed most to their national solidarity and strength.

এই পুরো বক্তৃতা ছাপা হয়েছিলো হিন্দু মহাসভার অফিশিয়াল প্রেস নোটে। 

ততদিনে হিটলার অস্ট্রিয়া আর চেকোস্লোভাকিয়া আক্রমণ করে বসেছেন - অস্ট্রিয়া আর সুদেটেনল্যান্ডকে জার্মানির সঙ্গে জুড়ে দেওয়ার জন্যে। হিটলারের দাবী অনুযায়ী তা ছিলো সুদেটেন জার্মানদের ইচ্ছাকে সম্মান করা। একই সভায় সাভারকর এই আগ্রাসনকেও সমর্থন করেন - 

"...as far as the Czechoslovakia question was concerned the Hindu Sanghatanists in India hold that Germany was perfectly justified in uniting the Austrian and Sudeten Germans under the German flag. Democracy itself demanded that the will of the people must prevail in choosing their own government. Germany demanded plebiscite, the Germans under the Czechs wanted to join their kith and kin in Germany. It was the Czechs who were acting against the principle of democracy in holding the Germans under a foreign sway against their will...Now that Germany is strong why should she not strike to unite all Germans and consolidate them into a Pan-German state and realise the political dream which generations of German people cherished."

হিন্দু মহাসভার এই প্রেস নোট নাৎসী আর ফ্যাস্টিস্ট শক্তির প্রতি সাভারকরের আকর্ষণকেই প্রমাণ করে - পরবর্তীকালে যেটা আন্তর্জাতিক অবস্থা সম্পর্কে হিন্দু মহাসভার নিজস্ব স্ট্যান্ড হিসেবেই পরিচিতি পাবে। খানিকটা নেহরু যেভাবে বন্ধু ও শত্রু বেছে নিয়েছিলেন - সেরকমই - শুধু দুজনের বন্ধু আর শত্রু ছিলো উলটো। সুদেটেনল্যান্ডে জার্মান সংখ্যালঘুদের সাথে তুলনা করে সেই বছরেরই অক্টোবর মাসে পুণেতে আর এক সমাবেশে সাভারকর বলেন যে ভারতে এরকম প্লেবিসাইট হলে মুসলমানরা মুসলমানদের সঙ্গে আর হিন্দুরা হিন্দুদের সঙ্গে থাকাকেই বেছে নেবে - "নেশন বিল্ডিং"-এর জন্যে কয়েক শতাব্দী ধরে একসঙ্গে থেকে আসা যথেষ্ট নয়, বরং "the common desire to form a nation was essential for the formation of a nation" - এই ছিলো সাভারকরের বক্তব্য। অবধারিতভাবে সাভারকরের এই গোটা বক্তৃতা নাৎসী মুখপত্র ভোয়েল্কলিশে বেয়োবাখটারে (Volkischer Beobachter) ছেপে বেরোয় ১৯৩৮ সালের নভেম্বর মাসে।

এই সময়টাই ক্রিটিকাল - হিন্দু আর মুসলমানদের "আমরা-ওরা" হিসেবে দেখতে শুরু করার। সাভারকর হিন্দু মহাসভার সভাপতি থাকাকালীন মুসলমানবিরোধী রেটরিক ক্রমশঃ বাড়তে থাকে, ক্রমশঃ আরো অপ্রীতিকর হতে শুরু করে। সাভারকর ক্রমাগত ইহুদীদের প্রতি নাৎসী জার্মানির মনোভাবকে, বরং বলা ভালো Hitler’s answer to the Jewish Question কে সমর্থন করতে শুরু করেন - প্রকাশ্যেই, বিভিন্ন বক্তৃতায়, আর ভারতের মুসলমানদের জন্যেও একই "দাওয়াই"-এর কথা বলে চলেন।

"A Nation is formed by a majority living therein. What did the Jews do in Germany? They being in minority were driven out from Germany." (২১শে অক্টোবর, ১৯৩৮, মালেগাঁও)

অথবা

১৯৩৮ সালের ডিসেম্বর মাসে আরএসএস কর্মীদের এক সভায় -

"in Germany the movement of the Germans is the national movement but that of the Jews is a communal one"

এই দ্বিতীয় বক্তব্যটার সময়টা বোঝা বিশেষ করে জরুরী, কারণ তার ঠিক কিছুদিন আগেই, নভেম্বর মাসের ৯-১০ তারিখে ঘটে গেছে নাইট অফ দ্য ব্রোকেন গ্লাস বা কৃস্ট্যালনাখট - সারা পৃথিবী জেনে গেছে ইহুদীদের সম্পর্কে নাৎসীদের মনোভাব, ভারতে নেহরুর নেতৃত্বে কংগ্রেসও সেই কৃস্ট্যালনাখটের বিরোধিতায় মুখর হয়েছে।

১৯৩৯ সালের  শেষের দিকে, হিন্দু মহাসভার একুশতম সম্মেলনে সাভারকর সবচেয়ে স্পষ্টভাবে ভারতীয় মুসলমানদের সম্পর্কে তাঁর নিজের, এবং গোটা হিন্দু সাম্প্রদায়িক বৃত্তের মনোভাব খুলে বলেন - ২৯শে ডিসেম্বরের বম্বে ক্রনিকলে যার সামারি বেরোয়।

"...the Indian Muslims are on the whole more inclined to identify themselves and their interests with Muslims outside India than Hindus who live next door, like Jews in Germany."

খেয়াল করে দেখবেন - এই বক্তব্যের সাথে সাভারকরের "হিন্দুত্ব" বইয়ে লেখা নেশন আর নেশনহুড নিয়ে কথাবার্তার বিশেষ তফাত নেই। এবং সাভারকরের ক্ষেত্রে এই ধারণার সূত্রপাত তিরিশের দশকের অনেক আগেই - কারণ হিন্দুত্ব বইটা লেখা হয়েছিলো এর অন্ততঃ কুড়ি বছর আগে, আন্দামানে, যেটা লুকিয়ে ভারতে নিয়ে আসা হয়, এবং আন্ডারগ্রাউন্ডেই ছাপা হয় ১৯২৩ সালে।

"their holyland is far off in Arabia or Palestine. Their mythology and godmen, ideas and heroes are not the children of this soil. Consequently their names and their outlook smack of foreign origin."

অর্থাৎ, সাভারকরের ক্ষেত্রে, মুসলমানদের "ওরা" হিসেবে চিহ্নিত করার শুরু অনেক আগেই। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরপরই - যে সময়ে জার্মানিতেও ইহুদীদের দায়ী করা শুরু হয় বিশ্বযুদ্ধে হারের জন্যে। তিরিশের দশকে, বলা ভালো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরুর দিকে, সাভারকর এবং হিন্দু জাতীয়তাবাদীরা বরং নিজেদের আদর্শ খুঁজে পেয়েছিলেন নাৎসী আর ফ্যাসিস্ট শক্তির মধ্যে। আর, এই মনোভাবকেই আরএসএস নিয়ে গিয়েছিলো আরও গ্রাসরুট লেভেলে - যার ছাপ পাওয়া যায় গোলওয়ালকরের "We, or Our Nationhood Defined" বইয়ে - সেই গোলওয়ালকর, যিনি আরএসএস-এর প্রধান হয়েছিলেন ১৯৩৯ সালে।

"German race pride has now become the topic of the day. To keep up the purity of the Race and its culture, Germany shocked the world by her purging the country of the Semitic Races - the Jews. Race pride at its highest has been manifested here. Germany has also shown how well-nigh impossible it is for Races and cultures, having differences going to the root, to be assimilated into one united whole, a good lesson for us in Hindusthan to learn and profit by. Then the state language is German, and the foreign races living in the Country as minorities, though they have freedom to use their respective languages among themselves, must deal in the nation's language in their public life. The factor of religion, too, is not to be ignored."

এই ধ্যানধারণার সূত্রপাত একটা আইডিয়া থেকে - যেখানে ভাবা হয় হিন্দুত্ব (সাভারকরের ভাষায়) আসলে জাতি এবং রক্তের সঙ্গে সম্পর্কিত, সংস্কৃতির সঙ্গে নয়। হিটলারের মেইন ক্যাম্পফ পড়লে দেখবেন খাঁটি জার্মান বা আর্য্য জার্মান সম্পর্কেও ভাবনাগুলো এরকমই। যদি আধুনিককালের সাহিত্য থেকে উদাহরণ দিলে বুঝতে সুবিধা হয়, তাহলে হ্যারি পটারের গল্পে মাডব্লাড বা মাগল, আর পিওর ব্লাডের ডেফিনেশন দেখে নিতে পারেন, সঙ্গে ভল্ডেমর্ট এবং তার সঙ্গীসাথীদের মনোভাবও।

মুসলমানদের সম্পর্কে গোলওয়ালকরের চিন্তাভাবনা ছিলো আরও উগ্র। ওই একই বইয়ে পরের অংশটাও পাওয়া যায় - 

"There are only two courses open to the foreign elements, either to merge themselves in the national race and adopt its culture, or to live at its mercy so long as the national race may allow them to do so and to quit the country at the sweet will of the national race.... From this standpoint, sanctioned by the experience of shrewd old nations, the foreign races in Hindusthan must either adopt the Hindu culture and language, must learn to respect and hold in reverence Hindu religion, must entertain no idea but those of the glorification of the Hindu race and culture, i.e., of the Hindu nation and must lose their separate existence to merge in the Hindu race, or may stay in the country, wholly subordinated to the Hindu Nation, claiming nothing, deserving no privileges, far less any preferential treatment—not even citizen’s rights. There is, at least should be, no other course for them to adopt. We are an old nation; let us deal, as old nations ought to and do deal, with the foreign races, who have chosen to live in our country."

এই অংশটা একটু অনুবাদ করে দিই যাতে পড়ে বুঝতে সুবিধা হয়। 

"এই বিদেশীদের জন্যে দুটিই রাস্তা খোলা রয়েছে। হয় তাদের রাষ্ট্রীয় জাতি হিসেবে তৈরী হতে হবে, অথবা তাদের রাষ্ট্রীয় জাতির আধিপত্য মেনে নিয়ে মাথা নীচু করে বাঁচতে হবে - যতদিন তাদের এই দেশে থাকার অনুমতি দেওয়া হবে, ততদিন পর্যন্ত। এবং যেদিন মনে করা হবে তাদের এই দেশে থাকার প্রয়োজন নেই, সেদিন তাদের দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে। পৃথিবীর অতিপ্রাচীন জাতিগুলির আদর্শে তৈরী এই দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী হিন্দুস্তানের সমস্ত বিজাতীয় মানুষকে হিন্দু সংস্কৃতি ও ভাষাকে আপন করে নিতে হবে, হিন্দু ধর্মকে শ্রদ্ধা করতে হবে, এবং একমাত্র হিন্দু জাতি ও সংস্কৃতি - অর্থাৎ হিন্দু রাষ্ট্রকে মহিমান্বিত করা ছাড়া অন্য কোনো ধারণা বহন করা যাবে না। হয় তাদের নিজস্ব সমস্ত সত্ত্বা বিসর্জন দিয়ে হিন্দু জাতির সাথে একাত্ম হতে হবে, অথবা হিন্দু জাতির শ্রেষ্ঠতা মেনে নিয়ে তাদের বশ্যতা স্বীকার করে, কোনো সুযোগসুবিধার দাবী না করে, কোনো অগ্রাধিকারের আশা না করে, এমনকী নাগরিক সুযোগসুবিধার চাহিদাও না রেখে এই দেশে থাকতে হবে। এ ছাড়া অন্য কোনো উপায় তাদের কাছে থাকবে না। আমরা প্রাচীন জাতি; প্রাচীন জাতিরা যেভাবে বিদেশীদের দেখেছে, আমরাও আমাদের দেশে থাকা বিদেশীদের সেইভাবেই দেখবো।"

এইখানে একটা বড় পয়েন্ট মাথায় রাখা দরকার - সেই সময়ের বিভিন্ন পত্রপত্রিকা থেকে যে আইডিয়া পাওয়া যায়, সেটা হল এইরকমের ভাবনা শুধু উগ্র হিন্দুত্ববাদীদেরই ছিলো তা নয়, বরং মারাঠি উচ্চবর্ণীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে এইসবই ছিল প্রচলিত ধারণা, এবং বিভিন্ন মারাঠি খবরের কাগজ এবং ম্যাগাজিনে নাৎসী ও ফ্যাসিস্ট ডিক্টেটরদের বিভিন্ন কাজকর্মের প্রশংসা করে লেখাপত্রও ছাপা হত - যেগুলোর সঙ্গে সাভারকর বা গোলওয়ালকরের বক্তব্যের বিশেষ তফাত ছিলো না। ১৯৩৯ সালে, দ্য মারহাট্টা পত্রিকায় ইতালি ও জার্মানির প্রশংসা করে একটা সিরিজ ছাপা হয়, কেশরী-তে ছাপা হয় গণতন্ত্রের পতন ও ফ্যাসিবাদের উত্থান নিয়ে লেখা - যেখানে ফ্যাসিবাদকে গণতন্ত্রের চেয়ে উন্নত ব্যবস্থা বলে দাবী করা হয়। 

হয়তো এবার আন্দাজ করতে পারবেন - আগের একটা লেখায় মাধব কাশীনাথ দামলের পরিচয় দেওয়ার সময় কেন তার চিৎপাবন ব্রাহ্মণ পরিচয়টাকে আলাদা করে হাইলাইট করেছিলাম। সেই সময়ের মারাঠি উচ্চবর্ণ হিন্দু মনোবৃত্তিতে যা ছিলো, ক্রমশঃ সেই আইডিয়াগুলোই আরও পোক্ত হয়ে ওঠে হিন্দু মহাসভা আর আরএসএসের ছত্রছায়ায়। এবং আরএসএস এর ছত্রছায়ায় যে তথাকথিত "ফ্রিঞ্জ" সংগঠগুলো বেড়ে উঠেছিলো - যেমন সনাতন সংস্থা, হিন্দু ঐক্য বেদী, অভিনব ভারত বা ভোঁসলে মিলিটারি স্কুল - সেখানেও এই একই ধ্যানধারণা দেখতে পাওয়া যায়। বিজেপি যতই এই গোষ্ঠীগুলোকে "ফ্রিঞ্জ" বলে অস্বীকার করুক, গ্রাসরুট লেভেলে আরএসএস-এর সাথে এরাই সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং করে এসেছে এত বছর ধরে, যার ফল আমরা আজ দেখছি, আর একদম শুরুতেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের যে চিঠির কথা বলেছিলাম - সেখানেও সেই একই আইডিয়ার ফর্মালাইজেশন দেখতে পাচ্ছি। 

এই ছায়া সৈন্য বা শ্যাডো আর্মি - মানে, সনাতন সংস্থা, হিন্দু ঐক্য বেদী, অভিনব ভারত বা ভোঁসলে মিলিটারি স্কুলের আল্টিমেট গোল কী, আর তার জন্যে কী কী ঘটেছে, সেই গল্পেও আসবো আস্তে আস্তে।

#ShadowArmiesOfHindutva

সূত্রঃ 

(১) Hindutva’s Foreign Tie-up in the 1930s - Archival Evidence, Marzia Casolari, Economic & Political Weekly, Vol. 35, Issue 4, 22 Jan 2000
(২) Nehru Memorial Museum and Library, Savarkar papers, microfilm, rn 23, part 2, Miscellaneous Correspondence January 1938-May 1939
(৩) Hindutva: Who is a Hindu?, VD Savarkar, 4th ed, Bharat Mudranalaya, Pune, 1949, p 94
(৪) We, or Our Nationhood Defined, MS Golwalkar, Bharat Publications, Nagpur, 1939

No comments:

Post a Comment