(লেখাটা অনেক দিনের পুরনো - ডিসেম্বর ২০০৭ - গুরুচণ্ডা৯ থেকে তুললাম)
একটা মেয়ের কথা দিয়ে শুরু করি৷ উনিশ বছরের মেয়েটা, তার একুশ বছর বয়সী সঙ্গী৷ মেয়েটা সন্তানসম্ভবা৷ কিন্তু দেশের আইন অনুযায়ী এই শিশুটি অবৈধ, কারণ মেয়েটির বয়স কুড়ির কম৷ শিশুটি যদি জন্মায়, কোনো খাতায় তার নাম উঠবে না৷ তার কোনো পরিচয় নেই, নিয়ম অনুযায়ী শিশুটির কোনো অস্তিত্ব নেই৷ ডাক্তারী কারণে মেয়েটি গর্ভপাত করাতে পারে না, তাই এক দূর গ্রামে গিয়ে শিশুটির জন্ম দেয়, আর তারপর অল্প কিছু পয়সার বিনিময়ে বেচে দেয় অন্য কারো কাছে৷
এমন খবর প্রায়সই ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে চোখে পড়ে৷ কিন্তু না, যে দেশটার কথা বলছি সেটা ভারত নয়৷ বলছি চীনের কথা৷ বেজিং অলিম্পিকের জন্যে সুসজ্জিত চীন৷ অলিম্পিককে সফল করার জন্যে অসম্ভব যত্নশীল চীন - খবরে কিছু না কিছু প্রায় রোজই থাকে - এবং সাথে থাকে বিতর্কও - পরিবেশ এর মধ্যে একটা বড় ইস্যু - যেমন মাউন্ট এভারেস্টের কতদূর উচ্চতা অবধি যেন রাস্তা তৈরী হবে - এরকম একটা খবর ছিলো কিছুদিন আগেও৷ ছিলো আরো একটা খবর - পরিবেশের মতন এত সুদূরপ্রসারিত ইস্যু না হলেও, খবর হিসেবে অনেক বেশি ভয়ংকর হয়তো - চীনের হারিয়ে যাওয়া শিশুদের খবর৷
১৯৯৫ সালে চীনের অনাথাশ্রমের অবস্থা নিয়ে একটা ডকুমেন্টারি তৈরী হয়েছিলো - দ্য ডায়িং রুমস৷ এতই বিতর্কিত, যে চীন এবং যুক্তরাজ্যের সম্পর্কটা পাকাপাকিভাবে তুবড়ে যাওয়ার মতন অবস্থায় পৌঁছয়৷ সেই ডকুমেন্টারির প্রোডাকশন ম্যানেজার Jezza Neumann ফিরে যান চীনে ডায়িংরুমের পরের খবর জানতে - তৈরী হয় "China's Stolen Children" - চীনের দম্পতিপিছু একটি সন্তান আইনের অন্যদিকটার খবর৷ হিসেব বলে - দিনে অন্তত: ১৯০টি শিশু হারিয়ে যায় বা চুরি হয় - তাদের বিছানা থেকে, রাস্তা থেকে; বছরে ৭০,০০০; যারা বিক্রি হয়ে যায়৷
এই নিয়ে কেউ কথা বলে না - সরকার তো নয়ই, কারণ এই নিয়ে কথা বলা আর সমস্যার অস্তিত্ব মেনে নেওয়ার মধ্যে খুব অল্পই ফারাক৷ নয়ম্যানের ডকুমেন্টারিতে এই সমস্যার গভীরে ঢোকার চেষ্টা আছে৷ লুকিয়ে৷ সাড়ে তিন মাস ধরে ট্যুরিস্টের বেশে হাতেগোনা কিছু চীনা সাংবাদিকের সাহায্যে পুলিশ এবং সিকিউরিটির চোখ এড়িয়ে নয়ম্যান খুঁজে বের করেন সেই সমস্ত বাপ-মায়েদের যাঁদের ছেলেমেয়েরা হয় হারিয়ে গেছে, বা যাঁরা বাধ্য হয়েছেন ছেলেমেয়েগুলোকে অন্যের হাতে তুলে দিতে, বা বিক্রি করে দিতে - "এক সন্তান'" আইনের হাত থেকে বাঁচার জন্যে৷ কি বলে এই আইন? শিশুর জন্ম দিতে গেলে বাপমা-কে আগে "অনুমতিপত্র" পেতে হবে৷ গ্রামের দিকে প্রথম সন্তান মেয়ে হলে বাপমাকে আরো একটা সুযোগ দেওয়া হয় - আরেকটা বাচ্চার, শহরে আইন ভাঙলে জরিমানা৷ ছেলের চাহিদা বেশি - কারণ পরিবার বাড়ে তাদের দিয়ে, বংশ রক্ষা হয় তাদের দিয়ে৷ প্রথম মেয়েটিকে জন্মের আগেই মেরে না ফেললে ছেলের সম্ভাবনা তো থাকে না৷ তাই লিঙ্গভিত্তিক গর্ভপাত বৈনী হলেও প্রায় চার কোটি মেয়ে অজাত থেকে গেছে - ১৯৭৯ সালে এই "এক সন্তান" আইন চালুর পর থেকে৷ আর নিশ্চিত ছেলে? যেখানে ভ্রূণহত্যার বিবেকদংশন নেই? সে মেলে কালোবাজারে৷ শিশু বেচাকেনার হাটে৷ সেই থেকে শুরু এই হারিয়ে যাওয়ার গল্প৷
বাজারে বাচ্চার দামের তারতম্য আছে৷ অন্য সব বাজারের মতনই৷ মেয়ের দাম কম - অবশ্যই৷ কখনো সখনো মেয়ে বিক্রি হয়ে যায় দুশো ডলারে৷ ছেলেদের দাম সেখানে অনেক বেশি - সাতশো-হাজার ডলার (উন্নত বা অনুন্নত, সমাজতান্ত্রিক বা সমাজতান্ত্রিক নয় - এই একটা বিষ প্রায় সমস্ত সমাজের তলায় তলায় ফেরে - তাই রাজকন্যের বহুবছর পর রাজপুত্তুর জন্মালে গোটা জাপান উদ্বেল হয়ে ওঠে, মাসমাইনের মধ্যে লিঙ্গবৈষম্যের উপস্থিতি মেনে নেয় বিভিন্ন উন্নত দেশ, বা এই উন্নত দেশেই মেয়ে বলে জন্মের আগে মেরে ফেলার জন্যে বাপমা পাড়ি দেন অন্য দেশে - ভারতেই বেশিরভাগ৷৷৷বিষের রকমফেরমাত্র)৷ বয়সের ওপরেও দাম নির্ভর করে৷ একদম শিশু - বছরখানেকের কম বয়সে - দেখভাল করতে হয় অনেক, সময় দিতে হয় অনেক বেশি - তাই তাদের দাম কম৷ আবার বছর তিন-চার বয়সে ওরা নিজেদের বাপমা-কে বা অন্য লোকজনেদের চিনতে শিখে যায়, বাড়িটাকেও হয়তো চিনতে পারে - তখন এই হাতবদলের মধ্যে কিছুটা আশঙ্কা থেকে যায়, তাই তাদেরও দাম কম৷ বেশি দামে বিকোয় এক থেকে দুই বছরের বাচ্চারা৷ নয়ম্যানের ডকুমেন্টারির কেন্দ্রে এমনই এক হারিয়ে যাওয়া শিশু - চেন জি - ঠাকুমার সবজির দোকানের সামনে খেলতে খেলতে যে হারিয়ে গেছিলো৷ তাকে শেষবার দেখা যায় এক প্রতিবেশীর সাথে - ঝ্যাং - যার বক্তব্য হল বাচ্চাটাকে লজেন্স কেনার পয়সা দিয়ে অ্যাপার্টমেন্টের কাছেই সে ছেড়ে দিয়েছিলো৷ সে অর্থে চেন জিয়ের পরিবারের কাছে কোনো প্রমাণ না থাকলেও চেন জিয়ের ঠাকুমার কাছে ঝ্যাং বলে যে সে বাচ্চাটাকে বেচে দিয়েছে৷ জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশের হাত থেকে ছাড়া পেয়ে ঝ্যাং তার সাধারণ জীবনে ফিরে যায় - চেন জিয়ের পরিবার পারে না৷ হয়তো চেন জি-ও না৷ চেন জিয়ের মা আর বাবা ছেলেকে খুঁজে পাওয়ার জন্যে চেষ্টা করে চলেন - সংবাদমাধ্যম সরকারের কাছাকাছি বলে তাদের সাহায্য পাওয়া যায় না, একই দু:খের ভাগিদার অন্য বাবা-মায়েদের সাথে যোগাযোগ করতে হয় গোপনে, নিখোঁজ শিশুদের পোস্টার লাগানো বৈনী, তাই লুকিয়ে বেসরকারি গোয়েন্দা, আর পশ্চিমী সংবাদমাধ্যম৷
শুরু করেছিলাম যে মেয়েটির কথা বলে, তার সাথে এক এজেন্টের মোলাকাত দেখান নয়ম্যান এই ডকুমেন্টারিতে, যেখানে সেই এজেন্ট মেয়েটিকে বোঝায় কিভাবে এই ছেলেমেয়ে বেচাকেনার বাজারটা চলে; সে বোঝায় যে ছেলেদের দাম বেশি, কারণ চাহিদা বেশি; সে আওড়ায় সেই চেনা কথাগুলো - যা আমরা বহু বছর ধরে বার বার শুনেছি - ছেলেরা পরিবার চালায়, বংশবৃদ্ধি করে; সে জানায় পয়সাওয়ালা ক্রেতাদের দরকষাকষির ক্ষমতাও বেশি; সে বলে "If you want your baby to go to a family in a rich area you won't get as much money as if you sell to a poorer family." তার মতে সে কোন অন্যায় করছে না, সন্তানের জন্যে কাতর দম্পতিদের সাহায্যই করছে বরং৷ আর এরা টিঁকেও যায়৷ ঝ্যাং-এর মতন৷
China's Stolen Children নিয়ে চীন আপাতত বেশ রক্ষণাত্মক - সামনে অলিম্পিক, অনেক অনেক বড় একটা ইভেন্ট যার দিকে চোখ থাকবে কয়েকশো কোটি মানুষের; তাই ডকুমেন্টারিটাকে "গভীরতাহীন" আখ্যা দিয়ে বলা হয় "The trend of gender imbalance among the newly-born is a question that calls for scientific study and careful redressing. Finger-pointing is simply not the way forward."
দুমাস আগে ডকুমেন্টারিটি প্রদর্শিত হয় চ্যানেল ফোরে, আর এইচবিও এটিকে অ্যাকাডেমি পুরস্কারের জন্যে মনোনীত করে৷ নয়ম্যান আশা করেন চীনের সরকার "এক সন্তান' নীতি নিয়ে হয়তো আরেকবার চিন্তা করবে - নয়ম্যানের বিশ্বাস যে কারণে চার কোটি কন্যাভ্রূণহত্যা, যে কারণে চার কোটি চীনা পুরুষ কোনওদিনও কোনো সঙ্গিনী খুঁজে পাবে না৷
রেফারেন্স -
Shining a light into the shadowy world of China's stolen children - আটই অক্টোবর, ২০০৭
Has anyone seen our child? - তেইশে সেপ্টেম্বর, ২০০৭
China's Stolen Children
The Dying Rooms
http://uk.youtube.com/watch?v=b9YdA3WSiPM
একটা মেয়ের কথা দিয়ে শুরু করি৷ উনিশ বছরের মেয়েটা, তার একুশ বছর বয়সী সঙ্গী৷ মেয়েটা সন্তানসম্ভবা৷ কিন্তু দেশের আইন অনুযায়ী এই শিশুটি অবৈধ, কারণ মেয়েটির বয়স কুড়ির কম৷ শিশুটি যদি জন্মায়, কোনো খাতায় তার নাম উঠবে না৷ তার কোনো পরিচয় নেই, নিয়ম অনুযায়ী শিশুটির কোনো অস্তিত্ব নেই৷ ডাক্তারী কারণে মেয়েটি গর্ভপাত করাতে পারে না, তাই এক দূর গ্রামে গিয়ে শিশুটির জন্ম দেয়, আর তারপর অল্প কিছু পয়সার বিনিময়ে বেচে দেয় অন্য কারো কাছে৷
এমন খবর প্রায়সই ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে চোখে পড়ে৷ কিন্তু না, যে দেশটার কথা বলছি সেটা ভারত নয়৷ বলছি চীনের কথা৷ বেজিং অলিম্পিকের জন্যে সুসজ্জিত চীন৷ অলিম্পিককে সফল করার জন্যে অসম্ভব যত্নশীল চীন - খবরে কিছু না কিছু প্রায় রোজই থাকে - এবং সাথে থাকে বিতর্কও - পরিবেশ এর মধ্যে একটা বড় ইস্যু - যেমন মাউন্ট এভারেস্টের কতদূর উচ্চতা অবধি যেন রাস্তা তৈরী হবে - এরকম একটা খবর ছিলো কিছুদিন আগেও৷ ছিলো আরো একটা খবর - পরিবেশের মতন এত সুদূরপ্রসারিত ইস্যু না হলেও, খবর হিসেবে অনেক বেশি ভয়ংকর হয়তো - চীনের হারিয়ে যাওয়া শিশুদের খবর৷
১৯৯৫ সালে চীনের অনাথাশ্রমের অবস্থা নিয়ে একটা ডকুমেন্টারি তৈরী হয়েছিলো - দ্য ডায়িং রুমস৷ এতই বিতর্কিত, যে চীন এবং যুক্তরাজ্যের সম্পর্কটা পাকাপাকিভাবে তুবড়ে যাওয়ার মতন অবস্থায় পৌঁছয়৷ সেই ডকুমেন্টারির প্রোডাকশন ম্যানেজার Jezza Neumann ফিরে যান চীনে ডায়িংরুমের পরের খবর জানতে - তৈরী হয় "China's Stolen Children" - চীনের দম্পতিপিছু একটি সন্তান আইনের অন্যদিকটার খবর৷ হিসেব বলে - দিনে অন্তত: ১৯০টি শিশু হারিয়ে যায় বা চুরি হয় - তাদের বিছানা থেকে, রাস্তা থেকে; বছরে ৭০,০০০; যারা বিক্রি হয়ে যায়৷
এই নিয়ে কেউ কথা বলে না - সরকার তো নয়ই, কারণ এই নিয়ে কথা বলা আর সমস্যার অস্তিত্ব মেনে নেওয়ার মধ্যে খুব অল্পই ফারাক৷ নয়ম্যানের ডকুমেন্টারিতে এই সমস্যার গভীরে ঢোকার চেষ্টা আছে৷ লুকিয়ে৷ সাড়ে তিন মাস ধরে ট্যুরিস্টের বেশে হাতেগোনা কিছু চীনা সাংবাদিকের সাহায্যে পুলিশ এবং সিকিউরিটির চোখ এড়িয়ে নয়ম্যান খুঁজে বের করেন সেই সমস্ত বাপ-মায়েদের যাঁদের ছেলেমেয়েরা হয় হারিয়ে গেছে, বা যাঁরা বাধ্য হয়েছেন ছেলেমেয়েগুলোকে অন্যের হাতে তুলে দিতে, বা বিক্রি করে দিতে - "এক সন্তান'" আইনের হাত থেকে বাঁচার জন্যে৷ কি বলে এই আইন? শিশুর জন্ম দিতে গেলে বাপমা-কে আগে "অনুমতিপত্র" পেতে হবে৷ গ্রামের দিকে প্রথম সন্তান মেয়ে হলে বাপমাকে আরো একটা সুযোগ দেওয়া হয় - আরেকটা বাচ্চার, শহরে আইন ভাঙলে জরিমানা৷ ছেলের চাহিদা বেশি - কারণ পরিবার বাড়ে তাদের দিয়ে, বংশ রক্ষা হয় তাদের দিয়ে৷ প্রথম মেয়েটিকে জন্মের আগেই মেরে না ফেললে ছেলের সম্ভাবনা তো থাকে না৷ তাই লিঙ্গভিত্তিক গর্ভপাত বৈনী হলেও প্রায় চার কোটি মেয়ে অজাত থেকে গেছে - ১৯৭৯ সালে এই "এক সন্তান" আইন চালুর পর থেকে৷ আর নিশ্চিত ছেলে? যেখানে ভ্রূণহত্যার বিবেকদংশন নেই? সে মেলে কালোবাজারে৷ শিশু বেচাকেনার হাটে৷ সেই থেকে শুরু এই হারিয়ে যাওয়ার গল্প৷
বাজারে বাচ্চার দামের তারতম্য আছে৷ অন্য সব বাজারের মতনই৷ মেয়ের দাম কম - অবশ্যই৷ কখনো সখনো মেয়ে বিক্রি হয়ে যায় দুশো ডলারে৷ ছেলেদের দাম সেখানে অনেক বেশি - সাতশো-হাজার ডলার (উন্নত বা অনুন্নত, সমাজতান্ত্রিক বা সমাজতান্ত্রিক নয় - এই একটা বিষ প্রায় সমস্ত সমাজের তলায় তলায় ফেরে - তাই রাজকন্যের বহুবছর পর রাজপুত্তুর জন্মালে গোটা জাপান উদ্বেল হয়ে ওঠে, মাসমাইনের মধ্যে লিঙ্গবৈষম্যের উপস্থিতি মেনে নেয় বিভিন্ন উন্নত দেশ, বা এই উন্নত দেশেই মেয়ে বলে জন্মের আগে মেরে ফেলার জন্যে বাপমা পাড়ি দেন অন্য দেশে - ভারতেই বেশিরভাগ৷৷৷বিষের রকমফেরমাত্র)৷ বয়সের ওপরেও দাম নির্ভর করে৷ একদম শিশু - বছরখানেকের কম বয়সে - দেখভাল করতে হয় অনেক, সময় দিতে হয় অনেক বেশি - তাই তাদের দাম কম৷ আবার বছর তিন-চার বয়সে ওরা নিজেদের বাপমা-কে বা অন্য লোকজনেদের চিনতে শিখে যায়, বাড়িটাকেও হয়তো চিনতে পারে - তখন এই হাতবদলের মধ্যে কিছুটা আশঙ্কা থেকে যায়, তাই তাদেরও দাম কম৷ বেশি দামে বিকোয় এক থেকে দুই বছরের বাচ্চারা৷ নয়ম্যানের ডকুমেন্টারির কেন্দ্রে এমনই এক হারিয়ে যাওয়া শিশু - চেন জি - ঠাকুমার সবজির দোকানের সামনে খেলতে খেলতে যে হারিয়ে গেছিলো৷ তাকে শেষবার দেখা যায় এক প্রতিবেশীর সাথে - ঝ্যাং - যার বক্তব্য হল বাচ্চাটাকে লজেন্স কেনার পয়সা দিয়ে অ্যাপার্টমেন্টের কাছেই সে ছেড়ে দিয়েছিলো৷ সে অর্থে চেন জিয়ের পরিবারের কাছে কোনো প্রমাণ না থাকলেও চেন জিয়ের ঠাকুমার কাছে ঝ্যাং বলে যে সে বাচ্চাটাকে বেচে দিয়েছে৷ জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশের হাত থেকে ছাড়া পেয়ে ঝ্যাং তার সাধারণ জীবনে ফিরে যায় - চেন জিয়ের পরিবার পারে না৷ হয়তো চেন জি-ও না৷ চেন জিয়ের মা আর বাবা ছেলেকে খুঁজে পাওয়ার জন্যে চেষ্টা করে চলেন - সংবাদমাধ্যম সরকারের কাছাকাছি বলে তাদের সাহায্য পাওয়া যায় না, একই দু:খের ভাগিদার অন্য বাবা-মায়েদের সাথে যোগাযোগ করতে হয় গোপনে, নিখোঁজ শিশুদের পোস্টার লাগানো বৈনী, তাই লুকিয়ে বেসরকারি গোয়েন্দা, আর পশ্চিমী সংবাদমাধ্যম৷
শুরু করেছিলাম যে মেয়েটির কথা বলে, তার সাথে এক এজেন্টের মোলাকাত দেখান নয়ম্যান এই ডকুমেন্টারিতে, যেখানে সেই এজেন্ট মেয়েটিকে বোঝায় কিভাবে এই ছেলেমেয়ে বেচাকেনার বাজারটা চলে; সে বোঝায় যে ছেলেদের দাম বেশি, কারণ চাহিদা বেশি; সে আওড়ায় সেই চেনা কথাগুলো - যা আমরা বহু বছর ধরে বার বার শুনেছি - ছেলেরা পরিবার চালায়, বংশবৃদ্ধি করে; সে জানায় পয়সাওয়ালা ক্রেতাদের দরকষাকষির ক্ষমতাও বেশি; সে বলে "If you want your baby to go to a family in a rich area you won't get as much money as if you sell to a poorer family." তার মতে সে কোন অন্যায় করছে না, সন্তানের জন্যে কাতর দম্পতিদের সাহায্যই করছে বরং৷ আর এরা টিঁকেও যায়৷ ঝ্যাং-এর মতন৷
China's Stolen Children নিয়ে চীন আপাতত বেশ রক্ষণাত্মক - সামনে অলিম্পিক, অনেক অনেক বড় একটা ইভেন্ট যার দিকে চোখ থাকবে কয়েকশো কোটি মানুষের; তাই ডকুমেন্টারিটাকে "গভীরতাহীন" আখ্যা দিয়ে বলা হয় "The trend of gender imbalance among the newly-born is a question that calls for scientific study and careful redressing. Finger-pointing is simply not the way forward."
দুমাস আগে ডকুমেন্টারিটি প্রদর্শিত হয় চ্যানেল ফোরে, আর এইচবিও এটিকে অ্যাকাডেমি পুরস্কারের জন্যে মনোনীত করে৷ নয়ম্যান আশা করেন চীনের সরকার "এক সন্তান' নীতি নিয়ে হয়তো আরেকবার চিন্তা করবে - নয়ম্যানের বিশ্বাস যে কারণে চার কোটি কন্যাভ্রূণহত্যা, যে কারণে চার কোটি চীনা পুরুষ কোনওদিনও কোনো সঙ্গিনী খুঁজে পাবে না৷
রেফারেন্স -
Shining a light into the shadowy world of China's stolen children - আটই অক্টোবর, ২০০৭
Has anyone seen our child? - তেইশে সেপ্টেম্বর, ২০০৭
China's Stolen Children
The Dying Rooms
http://uk.youtube.com/watch?v=b9YdA3WSiPM
google slogan dite giye gaanta khujte khujte apnar blog er mukhomukhi holam...bola bahulyo..dekhe,pore besh laglo..likhe jan...blog ta bookmark korei fellam.
ReplyDeleter jeta kotha,je gaanta khujte khujte blog er sathe dekha,shei gaantai r khuje pelam na..jodi sondhane thake,ektu pathie deben..
priyasmita.prizone@gmail.com
abaro boli,blog er naam dekhe akrishto hoe porte eshe onek prapti holo..