স্লোগান দিতে গিয়ে আমি বুঝেছি এই সার, সাবাস যদি দিতেই হবে সাবাস দেবো তার, ভাঙছে যারা, ভাঙবে যারা খ্যাপা মোষের ঘাড় ৷
Tuesday, August 22, 2006
পাগলা সানাই...
বিসমিল্লার পাগলা সানাই,
হাত পেতে নিয়ে চেটেপুটে খাই
স্মৃতিবিজড়িত পাগলা সানাই...
চলে গেলেন সানাইয়ের একছত্র বাদশা - উস্তাদ বিসমিল্লা খান। পাগলা সানাই কিন্তু রয়ে যাবে আমাদের সকলের মধ্যে...যাবেই।
Monday, August 21, 2006
গান যখন আচ্ছন্ন করে...
"Now you're telling me
You're not nostalgic
Then give me another word for it
You who are so good with words
And at keeping things vague
Because I need some of that vagueness now
It's all come back too clearly
Yes I loved you dearly
And if you're offering me diamonds and rust
I've already paid"
গানটা বায়েজ লিখেছিলেন ডিলানকে নিয়ে, ডিলান যখন বায়েজকে এড়িয়ে চলতে শুরু করেন তখন বায়েজ বলেছিলেন - "I was heartbroken" - সেটা যে কত গভীর, তা বায়েজের গানটা শুনলে প্রতি লাইনে বোঝা যায়।
বায়েজের প্রতিটা গানই দুর্দান্ত - ওঁর গলার স্বরে একটা অদ্ভুত কিছু রয়েছে যেটা মনের মধ্যে গেঁথে যায়। আরেকটা গানের কথা না বললে বায়েজের গান সম্পর্কে লেখা পুরো হবে না - "Song of Bangladesh" - ১৯৭১ সালের পয়লা আগস্টের "Concert for Bangladesh" নিয়ে আমার এক বন্ধু/ভাই লিখেছে তার ব্লগে, ওকে পাঠিয়েছিলাম বাংলাদেশ নিয়ে বায়েজের এই গানটা...
"Bangladesh, Bangladesh
Bangladesh, Bangladesh
When the sun sinks in the west
Die a million people of the Bangladesh
The story of Bangladesh
Is an ancient one again made fresh
By blind men who carry out commmands
Which flow out of the laws upon which nation stands
Which is to sacrifice a people for a land
Bangladesh, Bangladesh
Bangladesh, Bangladesh
When the sun sinks in the west
Die a million people of the Bangladesh
Once again we stand aside
And watch the families crucified
See a teenage mother's vacant eyes
As she watches her feeble baby try
To fight the monsoon rains and the cholera flies
And the students at the university
Asleep at night quite peacefully
The soldiers came and shot them in their beds
And terror took the dorm awakening shrieks of dread
And silent frozen forms and pillows drenched in red
Bangladesh, Bangladesh
Bangladesh, Bangladesh
When the sun sinks in the west
Die a million people of the Bangladesh
Did you read about the army officer's plea
For donor's blood? It was given willingly
By boys who took the needles in their veins
And from their bodies every drop of blood was drained
No time to comprehend and there was little pain
And so the story of Bangladesh
Is an ancient one again made fresh
By all who carry out commands
Which flow out of the laws upon which nations stand
Which say to sacrifice a people for a land
Bangladesh, Bangladesh
Bangladesh, Bangladesh
When the sun sinks in the west
Die a million people of the Bangladesh"
আজ পঁয়ত্রিশ বছর পরেও ঘটনাগুলো রয়েই গেছে, দেশের নাম বদলে যায়, আক্রমণকারীর পরিচয় বদলে যায় - ঘটনাগুলো একই রয়ে যায়। তাই "Song of Bangladesh" কখনো পুরনো হয় না। বায়েজও তাঁর জায়গায় থেকে যান - ওয়াশিংটন স্কোয়্যারের ভিড়ে যুদ্ধবিরোধী মানুষগুলোর কন্ঠে, আরো অনেক প্রতিবাদী গায়ক-গায়িকার সাথে...
এবং আমাকে এই মুহুর্তে দিওয়ানা - ফিদা - পাগল - যা খুশী বলতে পারেন, একটুও তর্ক করবো না, বায়েজে আমি এতটাই আচ্ছন্ন।
Thursday, August 17, 2006
স্বপ্ন দেখতে দেখতে...
আইডিয়াটা মন্দ নয় - বাড়ি যেতে হলে দশ ঘন্টা প্লেনে কাটাতে হয়, অসহ্য। ঘুম পাড়ানি ইঞ্জেকশন নিতে আমি অন্ততঃ খুব রাজি। তার সঙ্গে "কাস্টমাইজড স্বপ্ন" - ঘুমোতে ঘুমোতে স্বপ্ন দেখবেন হাওয়াইয়ের সমুদ্রতটে বসে আছেন, বা এভারেস্টের চুড়োয়...স্বপ্ন শেষ হলেই আপনার গন্তব্যস্থল...বাড়ি। মন্দ কি?
Wednesday, August 16, 2006
আবাপ দেখতে পাচ্ছি না...
প্রসঙ্গতঃ, ইউনিকোড নিয়ে এই লেখাটা ভালো লাগলো, এই নিয়ে একসাথে এগোনো খুব জরুরী।
Tuesday, August 15, 2006
রাজনীতির শিকার না অরাজনীতির?
জনতার আদালতে, আনন্দবাজারের বিচারে দোষী হল "ছাত্র রাজনীতি"...এই পোস্টটা সেই নিয়েই। সৌমিকের মৃত্যু নিঃসন্দেহে দুঃখজনক, কিন্তু দোষী কি রাজনীতি, না কিছু আহাম্মক যারা রাজনীতিতে ঢুকে বসে থাকে? দিন দুয়েক আগে টাইমস অব ইন্ডিয়া মতামত জানতে চেয়েছিলো, খুব স্বাভাবিকভাবেই যা বলেছি তার ৮০% গায়েব...
প্রথমে একটা কথা আছে আবাপ-র বক্তব্য নিয়ে - "বাইরের সক্রিয় রাজনৈতিক সহায়তায় ভিতরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা থাকে" - একেবারে গপ্পোকথা৷ আমাদের সঙ্গে এস এফ আই জেলা বা রাজ্য কমিটির যোগাযোগ ছিলো ঠিকই, এবং থাকাই স্বাভাবিক, কিন্তু বি ই কলেজের আভ্যন্তরীন ইস্যুতে আমরা কখনো কাউকে নাক গলাতে দিই নি৷ জেলায় যদি ছাত্র ধর্মঘটের ডাক থাকতো, তার প্রচার আমরা নিজেরা করতাম, কলেজের ভিতরে বাইরে থেকে এস এফ আই কমরেডরা এসে কাজ করতো না - এই ব্যাপারে আমাদের ক্লিয়ার আন্ডারস্ট্যান্ডিং ছিলো - হ্যাঁ, বিভিন্ন লেভেলে মীটিং হয়েছে, কখনো আমাদের ঘরেই, কিন্তু ওই অবধিই৷ কাজেই বাইরে থেকে অন্য কর্মীরা এসে ভোটের সময় গণ্ডগোল করতো - এটা রীতিমতন কষ্টকল্পনা৷ বরং ভোট বা ছাত্র পরিষদের ধর্মঘটের সময় অম্বিকা ব্যানার্জীকে কলেজে ছাত্র পরিষদের বেঞ্চিতে বসে থাকতে দেখেছি৷
অবশ্য বাইরের সাধারণ লোকজনের সঙ্গে বি ই কলেজের ছাত্রদের সম্পর্ক কোনকালেই স্বাভাবিক ছিলো না৷ অনেক ক্ষেত্রেই "আমি কি হনু" ভাব দেখাতে গিয়ে এক শ্রেণীর ছাত্র একটা বাজে ধারণা তৈরী করতো৷
তবে, নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি অবধি কলেজের অবস্থা অনেক সুস্থ ছিলো, কারণ চেষ্টা করা হত একটা সুস্থ রাজনৈতিক পরিস্থিতি রাখার৷ তখন কলেজে ছাত্র ফেডারেশন ছাড়াও ছিলো ছাত্র পরিষদ এবং নকশালপন্থী পি এস এ - স্ট্রাইক-টাইকের সময় কলেজ গেটে গণ্ডগোল হয়নি তা নয় - কিন্তু হকি-স্টিক, রড, চেন - না:, সে অবস্থায় পৌঁছত না৷ একবারই বড় গণ্ডগোল হয়েছিলো - কিছু বিশেষ ছাত্র কয়েকজন কর্মচারী এবং, ডেপুটি রেজিস্ট্রারের গায়ে হাত তোলার পরে - সেই গণ্ডগোলটা এতটাই ছড়িয়েছিলো যে আশে পাশের মানুষজন জড়িয়ে পড়েছিলো৷ কিছুদিনের জন্যে হোস্টেল খালি করে দিতে হয় - আমরা তখন ফার্স্ট ইয়ার, সম্ভবত ৯২ সালের শুরুর কথা - তবে সেই কয়েকজন ছাত্র ক্ষমা চেয়ে নেয়, শাস্তিও হয়, এই ঘটনা ওখানেই শেষ হয়ে গেছিলো৷
তবে এখনকার মতন ঘটনা - ছাত্রদের মধ্যে এরকম মারামারি - আমাদের কাছে নতুন৷ এই ট্রেন্ডটা দেখছি নব্বইয়ের দশকের শেষের দিক থেকে৷ মানে যে সময় থেকে কলেজে রাজনীতির ট্রেন্ড কমতে থাকে৷ নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝিই তত্কালীন ভিসি - স্পর্শমণি চট্টোপাধ্যায়, এবং রেজিস্ট্রার - এন উপাধ্যায় - রাজনৈতিক কাজের ওপর নানারকম নিষেধাজ্ঞা জারি করতে শুরু করেন - টি এন শেষন স্টাইলে, বা এবারের বিধানসভা নির্বাচন স্টাইলে৷ এর আগে থেকেই ছাত্র পরিষদ একটা "অরাজনৈতিক" ভাব বজায় রাখতো - অরাজনীতির রাজনীতি, যেটাকে আমরা কাউন্টার করার চেষ্টা করতাম৷ কলেজ কতৃপক্ষও সমস্ত রাজনৈতিক কাজের বিরোধিতা করায় এই অরাজনৈতিক ব্যাপারটা হাওয়া পায়, ছাত্র পরিষদ পাল্টে এখনকার ইন্ডিপেন্ডেন্ট কনসলিডেশন তৈরী হয় - এদের তো নিজেদের মধ্যেই খেয়োখেয়ি আছে...ছাত্র পরিষদের "অরাজনৈতিক" বক্তব্য ছিলো- "কলেজে এসেছিস, ফূর্তি করবি, মস্তি করবি - বাইরে কি হল তাই দিয়ে আমাদের কি দরকার" - আমরা এটাকে ঠেকাতাম৷ এই মস্তি/ফূর্তি কালচার কিন্তু আরো অনেক কিছু টেনে এনেছিলো - মদ, ব্লু ফিল্ম, কোরেক্স...আমরা হোস্টেলে প্রয়োজনে জোর করে ব্লু ফিল্ম আটকেছি, এই কালচার ঠেকানোর চেষ্টা করেছি পলিটিক্যালি৷ মুশকিল হল এই কালচারের বিরুদ্ধে লড়াই না থাকলে, এই কালচার ছেয়ে যায়...এবং সেটাই সম্ভবতঃ হয়েছিলো, সম্ভবত এখনও রয়ে গেছে৷
এছাড়া অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের প্রশ্ন আছে - আমার ব্যক্তিগত (এবং সম্ভবত অনেকের ব্যক্তিগত) ধারণায় স্পর্শমণি চট্টোপাধ্যায় অত্যন্ত বাজে অ্যাডমিনিস্ট্রেটর ছিলেন - যত নামকরা অ্যাকাডেমিকই হয়ে থাকুন না কেন৷ ওঁর আগে ড: বিমল সেনের একটা অসাধারণ পার্সোনালিটি ছিলো, যার জন্যে তিনি অনেক শ্রদ্ধা আদায় করে নিতেন৷ ড: সেনের সাথে মুখোমুখি প্রচণ্ড তর্ক হয়েছে, উনি একবার আমাকে সকলের সামনে বলেছিলেন "তুমি কি করে কলেজ থেকে বেরোও দেখবো" - কিন্তু ওঁর ওপর থেকে শ্রদ্ধা কমেনি - উনি আমাদেরও কিন্তু সমান রেসপেক্ট দিতেন৷ এই ব্যাপারটা পরের দিকে কমে এসেছিলো বলে মনে হয়৷
আরো একটা ব্যাপার আমার মনে হয় এখানে কাজ করেছে - আমাদের সময়ে ফার্স্ট/সেকেণ্ড/থার্ড ইয়ার - সব একই হোস্টেলে থাকতো - ফলে মেলামেশা অনেক বেশি ছিলো৷ এর খারাপ দিকও ছিলো - নির্বিচারে ragging, এর জন্যেই ৯৪-৯৫ সালে হোস্টেল আলাদা করে দেওয়া হয়৷ ছাত্র পরিষদ এর তুমুল বিরোধিতা করে, ছাত্রদের অধিকাংশও - বেশ কিছুদিন অনশন হয়েছিলো৷ এস এফ আই নীতিগত কারণে হোস্টেল আলাদা করে দেওয়াকে সমর্থন করেছিলো৷ আমার মাঝে মাঝে মনে হয় ওই আলাদা করে দেওয়াতে এক হোস্টেলে থাকার মতন মেলামেশা যে বন্ধ হয়ে গেছিলো, সেটাই এখনকার এই গোলমেলে অ্যাটিচিউডের একটা কারণ নয়তো? এখন অধিকাংশ গণ্ডগোল কিন্তু এক হোস্টেল বনাম আর এক হোস্টেল, অর্থাৎ, এক ইয়ার বনাম আরেক ইয়ার...
আরো একটা পনেরই আগস্ট...
"সেদিন যখন জাতীয় পতাকায় মালা
আর গান্ধী-নেহরুর কপালে চন্দনের তিলক আঁকা হচ্ছিল,
কৃষাণী হরিদাসী তার ভগ্নকুটীরের খুঁটি ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে পারেনি,
শতছিন্ন পোশাকে বেরিয়ে পড়েছিল পথে,
স্বাধীনতার পতাকার আড়ালে
সে এক সুখী সমাজ ও জীবন দেখতে পেয়েছিলো৷
রমজান মিঞা, উদ্দাম মেঘনায়
যে দরাজ গলায় গান গেয়ে নৌকা বাইতো,
সে সেদিন জোর করে
তার নৌকোটাকে মাঝনদীতে ডুবিয়ে দিয়েছিলো,
সে জেনেছিলো রোদ-বৃষ্টি-ঝড়কে উপেক্ষা করে
তাকে আর নৌকা ঠেলতে হবে না৷
স্বাধীন হয়ে গেল সবাই, নদী ঝাঁপিয়ে
সেও সেদিন পথের মিছিলে ছুটে এসেছিলো৷
ভুতনাথ মাহাতো, যে রাজপথে রিক্সা চালাতো,
সে সেদিন ভোরে উঠে তার গাড়ি সাজালো,
মালায়, চন্দনে আর পতাকায়৷
পথে বেরলো সে, বড় আনন্দের দিন...
হঠাৎ ভুতনাথ লাফিয়ে উঠলে, চিত্কার করে উঠলো,
বন্দে মাতরম্, বন্দে মাতরম্৷
মেঘনা নদীর সেই মাঝি আজ গান ভুলে গেছে,
উদাস নয়নে সে এখন নদীর ধারে বসে থাকে৷
হরিদাসী এখন গঞ্জের নিষিদ্ধ এলাকায় সন্ধ্যের পরে দাঁড়িয়ে থাকে
একমুঠো অন্নের আশায়৷
ভুতনাথ মাহাতো শহরের ফুটপাথে রাত কাটায়,
নি:স্তব্ধ রাত্রে তার কাশির শব্দ শোনা যায়৷
অথচ, ঠিক তেমনি করে সেদিনের মতো আজও
হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ টাকায় ব্যয় করে
স্বাধীনতাদিবস পালিত হয়,
লালকেল্লার দুর্গ থেকে ভাষণ প্রতি ঘরে ঘরে শোনা যায়,
হরিদাসী, রমজান মিঞা, ভুতনাথ মাহাতো
চিত্কার করে বলে ওঠে -
স্বাধীনতা, তুমি কার?
স্বাধীনতা, তুমি কিসের জন্যে?"
Thursday, August 10, 2006
টুকিটাকি
" (১) এখন গরমকাল - বেজায় গরম, যাকে বলে "পীক সামার" - গোটা ইংল্যাণ্ডে লোক হাঁসফাঁস করছে৷ করবে নাই বা কেন,প্রধাণত: শীতের দেশ, সেখানে দুম করে বত্রিশ-তেত্রিশ-কোথাও পঁয়ত্রিশ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা অস্বস্তিকর তো বটেই৷ তুমুল জল্পনা - উনিশশো এগারোর রেকর্ড (সাঁইত্রিশ ডিগ্রী) হয়তো ভাঙতে পারে৷ সকালের মেট্রোতে খবর - "Commuters in London are travelling in temperatures higher than those in which cattle are transported. Buses in London have reached 52 degree Celcius, while the tube reached 47 degrees. According to the EU guidelines, cattle are not to be transported in temperatures above 27 degrees." হাঁসফাঁসানো লোকে কটিবস্ত্র গলিয়ে ঝাঁক বেঁধে দৌড়েছে সমুদ্রের ধারে৷ লণ্ডনের ট্রাফালগার স্কোয়্যারে ঘুরতে গেলে ওখানকার ফোয়ারাতে অগণিত স্নানদৃশ্য - মতান্তরে চোখের আরাম৷
(২) এইচ এম এস গ্লস্টার - যে কিনা বেইরুট থেকে একশো আশি জন আটকে পরা ব্রিটিশদের সাইপ্রাসে নিয়ে এসেছে, ক্রমশ আরো আসবে - আনুমানিক বিশ হাজার - ডানকার্কের পর এই প্রথম এত বড় ইভ্যাকুয়েশন৷
(৩) লেবাননের ওপর আরো ইজরায়েলী বোমা-বর্ষন৷
(৪) জি-৮ সামিটে বড়দা বুশ এবং ছোট ভাই ব্লেয়ারের ঘনিষ্ঠ কথোপকথন - যেখানে রাষ্ট্রপুঞ্জ, হেজবোল্লার পাশাপাশি আলোচনার বিষয়বস্তু হয় একটা সোয়েটার৷
(৫) ফুটবলের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ "সেল" - জুভেন্টাস, লাজিও, ফিওরেন্টিনা আর এ সি মিলানের শাস্তির পরে কোন ফুটবলারের বাজারে কত দাম৷
(৬) তৃতীয়বার বাবা হলেন গর্ডন ব্রাউন৷৷৷
...
এর মাঝে দুটো ছোট্ট খবর একবার সামনে এসেই মিলিয়ে যায়, বুলবুলভাজার হেডলাইন সেগুলোই...
(১) সেই এক নিরীহ ব্রাজিলিয় ইলেক্টিশিয়ানের কথা মনে পড়ে? সেই জাঁ চার্লস ডি মেনেজেস? বাইশে জুলাই, ২০০৫ যাকে সশস্ত্র পুলিশবাহিনী স্টকওয়েল টিউব স্টেশনের ভিতরে গুলি করে মারে "সুইসাইড বম্বার" সন্দেহে - কোন প্রশ্ন না করে, কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে? প্রায় এক বছর পর ক্রাউন প্রসিকিউশন সার্ভিসের রায় - কোন পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে কোন প্রমাণ নেই, হ্যাঁ, কিছু ভুল হয়েছিলো বটে৷
"Despite mistakes made in planning and communication by officers, there had been "insufficient evidence to provide a realistic prospect of conviction against any individual police officer"."
ইনডিপেন্ডেন্ট পুলিশ কমিশনের রিপোর্ট অন্ধকারে থেকে যায়, সম্ভবত পুরো ঘটনার কঠোর-সমালোচনার জন্যে৷ ক্রাউন প্রসিকিউশন সার্ভিসের রায় - ১৯৭৪ সালের "কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ এবং সুরক্ষা" আইনের সেকশন তিন এবং তেত্রিশ নম্বর ধারার আওতায় মেট্রোপলিটান পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্ত হোক - for "failing to provide for the health, safety and welfare" of Mr Menezes on 22 July - খুন নয়, ফেইলিং টু প্রোভাইড হেল্থ, সেফটি অ্যাণ্ড ওয়েলফেয়ার৷ পুলিশ কখনো খুন করে না৷
সাঁইত্রিশ ডিগ্রী তাপমাত্রায় স্টকওয়েল টিউব স্টেশনের পাশে জাঁ চার্লস ডি মেনেজেসের অস্থায়ী স্মৃতিসৌধে পড়ে থাকা ফুলগুলো শুকোতে থাকে...
(২) সোয়ান হান্টার শিপইয়ার্ড থেকে ধীরগতিতে বেরিয়ে যায় ইয়ার্ডে তৈরী হতে থাকা শেষ জাহাজটা - কাজ শেষ হবে গ্লাসগোতে৷ টাইন নদীর দুধার নীরব চোখে তাকিয়ে থাকে ক্রমশ: দূরে যেতে থাকা ষোল হাজার টনের RFA Lyme Bay -র দিকে৷ একশো ছেচল্লিশ বছরের জাহাজ তৈরীর ইতিহাস শেষ, বন্ধ হল টাইনের ধারের শেষ জাহার তৈরীর ইয়ার্ড৷ প্রতিরক্ষা দপ্তরের বক্তব্য ক্রমবর্ধমান খরচ, এবং কাজ শেষ হতে দেরীই এই কনট্র্যাক্ট বাতিল করে দেওয়ার কারণ, এবং, তার জন্যে দায়ী সোয়ান হান্টারের ম্যানেজমেন্ট৷ জাহাজের কোয়ালিটি নিয়ে কোন বিতর্কই নেই৷
কয়েক দশক আগেও এই একই সোয়ান হান্টারে কাজ করতো প্রায় পঁয়তাল্লিশ হাজার শ্রমিক, নয় নয় করে ষোলশোর বেশি জাহাজ তৈরী হয়ে বেরিয়েছে এই ইয়ার্ড থেকে...কিন্তু নর্থ-সাউথ ডিভাইড অন্যান্য ইয়ার্ড আর কোলিয়ারিগুলোর মতন এরও শেষ বাঁশি বাজিয়ে দিলো৷
সাঁইত্রিশ ডিগ্রী তাপমাত্রায় পুড়তে থাকে ধুলো ঢাকা নির্জন সোয়ান হান্টার - টাইন নদীর ধারের শেষ শিপইয়ার্ড৷৷৷হয়তো এবার এখানে জাহাজ ভাঙা হবে..."
Wednesday, August 02, 2006
ওরা ভবিষ্যতের সন্ত্রাসবাদী
বাংলালাইভ মজলিশে দূর্গার লেখাটা পড়ে থমকে গেলাম৷ কিছুদিন ধরেই এই বিষয়টা নিয়ে লেখার ইচ্ছে ছিলো, আজ মনে হল দূর্গার লেখাটা দিয়ে শুরু করি৷
"কাল ছবিটা তাড়াতে চেয়েছি অনেক, আজ আবার এই লেখাটায় করে সে এসে পৌঁছলো আমার সামনে৷ তুলে দিচ্ছি - 'He picks up the body of the smallest one and holds it up for a second to show us. The boy is dressed in green shorts and white sleeveless t-shirt. Aside from the white dust that covers his body, there are no signs of the blast trauma and falling concrete that likely killed him. His eyes are closed and the only evidence of his violent death seems to be the slight gritting of his teeth.'
মুছে দিতে চাই ওকে মন থেকে, এখানেই ক'দিন আগে পড়া দাওয়াইটাই কাজে লাগাতে চাই, "ভবিষ্যতের সন্ত্রাসবাদী" ভাবতে চাই ওকে, কিন্তু পারি না৷ ও ঠিক গিয়ে ঠাঁই নেয় ছোট্ট দুটো হাফপ্যান্ট পরা পায়ের পাশে, যে ঘুমিয়ে থাকা পা দুটোতে আদর করে আমি অফিসে এসেছি আজ৷ সত্যিই মনে হয় - পুরোপুরি অপ্রকৃথিস্ত না হয়ে গেলে এই পৃথিবীতে স্বাভাবিকভাবে থাকা খুবই কঠিন৷
ওরা ভবিষ্যতের সন্ত্রাসবাদী৷ একজন লিখেছিলেন (সেই বাংলালাইভেই) - যে তিনশোজন বোমার আঘাতে মারা গেছে, খোঁজ নিয়ে দেখলে জানা যাবে তার মধ্যে দুশোজনই সন্ত্রাসবাদী, আর পঞ্চাশজন 'ভবিষ্যতের সন্ত্রাসবাদী'৷ সেদিন চমকেছিলাম - কি অদ্ভুত সহজভাবে আমরা মানুষকে চিহ্নিত করে দিই...যে সাইঁত্রিশটা শিশু মারা গেলো, তাদের গায়ে আমরা সভ্য শিক্ষিত মানুষের দল কি অনায়াসেই ছাপ মেরে দিয়েছিলাম সেদিন...ওরা ভবিষ্যতের সন্ত্রাসবাদী...
"কত হাজার মরলে পরে, মানবে তুমি শেষে
বড্ড বেশি মানুষ গেছে বানের জলে ভেসে"
আজ নিজেকে সভ্য, শিক্ষিত বলতে লজ্জা করলো৷