২৯শে সেপ্টেম্বর ২০০৮ - রমজানের সময়ে, রাত্রি সাড়ে ন'টা নাগাদ মালেগাঁওয়ের অঞ্জুমান চক আর ভিকু চকের মাঝে শাকিল গুডস ট্রান্সপোর্ট কোম্পানির বাড়ির সামনে, জনবহুল একটা এলাকায় বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরক ডিভাইস বসানো ছিলো একটা LML Freedom স্কুটারে, রেজিস্ট্রেশন নম্বর MH-15-P-4572 - বিস্ফোরণের ফলে ছ'জন মারা যায়, আহত হয় আরো শ'খানেক লোক, সম্পত্তি নষ্টের পরিমাণ চার লক্ষ টাকার ওপর। যেহেতু সেই সময়টা ছিলো রমজানের, আর ঠিক পরের দিন, মানে ৩০শে সেপ্টেম্বর শুরু হওয়ার কথা ছিলো নবরাত্রি উৎসবের, বোঝাই যায়, যে বিস্ফোরণ যারা ঘটিয়েছিলো তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিলো আতঙ্ক ছড়ানো, আর মানুষ মেরে, সম্পত্তি ধ্বংস করে সাম্প্রদায়িক বিভেদ তৈরী করা। ঘটনার পরেই বিশাল পুলিশবাহিনী স্পটে পৌঁছে যায়, কিন্তু প্রায় হাজার পনেরো ক্ষুব্ধ মানুষের ভিড়ে থমকে যায়। ইঁট ছোঁড়ে বিক্ষুব্ধ জনতা, বেশ কয়েকজন পুলিশ আহত হয়, কয়েকটা গাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই ক্ষোভ প্রশমিত হওয়ার পরেই বিস্ফোরণের তদন্তে নামে পুলিশ। এই গন্ডগোলের জন্যে আলাদা করে রায়টিং এর কেস নথিভুক্ত হয় আজাদ নগর থানায়, কেস নম্বরঃ ১৩১/২০০৮।
বোমা বিস্ফোরণ নিয়ে আজাদ নগর থানাতেই কেস রেজিস্টার হয় ৩০শে সেপ্টেম্বর ভোর তিনটেয়, কেস নম্বরঃ ১৩০/২০০৮, আইপিসি ৩০২, ৩০৭, ৩২৬, ৩২৪, ৪২৭, ১৫৩-এ, ১২০-বি, এক্সপ্লোসিভ সাবস্ট্যান্সেস অ্যাক্টের ৩/৪/৫ ধারায়। পুলিশ একে একে গ্রেপ্তার করে বেশ কয়েকজনকে - যাদের মধ্যে ছিলেন সাধ্বী প্রজ্ঞা সিং ঠাকুর, শিবনারায়ণ গোপালসিং কালসাংরা, শ্যাম ভওয়রলাল সাহু, রমেশ শিবজী উপাধ্যায়, সমীর শারদ কুলকার্নি, অজয় ওরফে রাজা একনাথ রাহিরকর, রাকেশ দত্তাত্রেয় ধাওরে, জগদিশ চিন্তামন মাহত্রে, লেফটেন্যান্ট কর্ণেল শ্রীকান্ত প্রসাদ পুরোহিত ওরফে বলবন্ত রাও ওরফে শ্রেয়ক রণদিভে, সুধাকর উদয়ভান ধর দ্বিবেদী ওরফে দয়ানন্দ পান্ডে ওরফে স্বামী অমৃতানন্দ দেবতীর্থ ওরফে সারদা সর্বজ্ঞ পীঠের শঙ্করাচার্য্য আর সুধাকর ওঙ্কার চতুর্বেদী। ওয়ান্টেড লিস্টে নাম ওঠে রামজী রামচন্দ্র গোপালসিং কালসাংরা, সন্দীপ বিশ্বাস ডাঙ্গে, প্রভীন মুতালিক ইত্যাদিদের।
বিস্ফোরণের তদন্তে নেমে নাসিকের ফরেন্সিক টিম জানায় যে সেই বিস্ফোরণে আরডিএক্স আর অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ব্যবহার হয়েছিলো। বিস্ফোরণে ব্যবহৃত আরো একটি বাইক (রেজিস্ট্রেশন নম্বর GJ-05-BR-1920) রেজিস্টার্ড ছিলো প্রজ্ঞাসিং চন্দ্রপালসিং ঠাকুরের নামে। ওয়ান্টেড লিস্টে নাম থাকা তিনজন এবং আরো কিছু লোক মিলে সেই এলএমএল ফ্রীডম বাইকে বিস্ফোরক ডিভাইস বসিয়েছিলো।
খুব ছোট করে, এই হল মালেগাঁও ব্লাস্ট কেসের সামারি - যেটা আপনারা হয়তো খবরের কাগজে পড়ে থাকবেন। ঘটনাটা মনে করিয়ে দিলাম, নামধামসহ - এর পরের কথাগুলো রিলেট করতে সুবিধা হবে বলে।
এগারোজন অভিযুক্তের নাম ছিলো পুলিশ রিপোর্টে - আর খেয়াল করলে দেখা যায় যে এদের মধ্যে তিনটে ডিসটিংক্ট গ্রুপ রয়েছে - প্রথমতঃ ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব, দ্বিতীয়তঃ সেনাবাহিনীর বর্তমান ও প্রাক্তন সদস্য, আর তৃতীয়তঃ সংঘ পরিবারের বর্তমান ও প্রাক্তন কর্মী/সদস্য। এবং, ঘটনাচক্রে, এদের অধিকাংশই মহারাষ্ট্রীয় ব্রাহ্মণ, বিশেষ করে চিৎপাবন - একেবারে সেই হিন্দু মহাসভার রমরমার দিনগুলোর সময় সাভারকরের শিষ্যদের মত। সেই বছরের ২৬শে জানুয়ারি হওয়া ফরিদাবাদের যে মিটিঙের কথা আগের পর্বে লিখেছিলাম, সেই মিটিঙেই এঁরা ভারতের এক নতুন সংবিধানের খসরা তৈরী করা শুরু করেন - যেখানে এই চিৎপাবন ব্রাহ্মণদের ভারতীয় এয়ারফোর্সে ঢোকানোর জন্যে আলাদা ব্যবস্থা রাখার কথা বলা হয়…
যে তিন ধরণের মানুষের কথা লিখলাম, তাদের মধ্যে ধর্মীয় ব্যক্তিত্বরা - সন্ন্যাসী বা মহন্ত - চিরকালই হিন্দু জাতীয়তাবাদী মুভমেন্টের সাথে জড়িয়ে ছিলেন - অধিকাংশ ক্ষেত্রে ধর্মীয় নেতা হিসেবে বৈধতা দেওয়ার জন্যে, কিছু ক্ষেত্রে সক্রিয় সদস্য হিসেবেও। এর আগেও হিন্দু মহাসভাকে সমর্থন করেছেন কবীর পীঠের শঙ্করাচার্য্যের মত ব্যক্তিত্ব, বা গোরক্ষনাথ মঠের আচার্য্য মহন্ত দিগ্বিজয়নাথ…যাঁদের উত্তরাধিকারীরা হিন্দু মহাসভা থেকে ক্রমে ভারতীয় জনতা পার্টিতে চলে এসেছেন। নব্বইয়ের দশকে, বিজেপির জনা ছয়েক সাংসদ ছিলেন গেরুয়াধারী সন্ন্যাসী, যদিও এঁদের বেশিরভাগেরই সেরকম কোনো ধর্মীয় জনভিত্তি ছিলো না - হয় তাঁরা নামীদামী কোনো সম্প্রদায়ের সন্ন্যাসী ছিলেন না, বা একদম শূন্য থেকে নিজেদের আশ্রম তৈরী করেছিলেন। যদিও, এঁদের প্রধান সম্পদ ছিলো জোরালো বক্তব্য রাখার ক্ষমতা - প্রধাণতঃ জঙ্গি মনোভাবের - যেমন সাধ্বী ঋতম্ভরা বা উমা ভারতীর মত লোকেরা…
অমৃতানন্দ দেবতীর্থ ছিলেন এই দ্বিতীয় ক্যাটেগরির ধর্মীয় নেতা - জঙ্গি মনোভাব আর চরম মুসলমান বিদ্বেষ ছিলো যাঁর অস্ত্র। উনি নিজেকে শ্রীসারদা সর্বজ্ঞপীঠের শঙ্করাচার্য্য বলে দাবী করতেন আর সেই পীঠের ধর্মীয় আচার ফের শুরু করার চেষ্টায় ছিলেন, যদিও বাস্তবে সারদাপীঠ বর্তমানে কাশ্মীরের লাইন অফ কন্ট্রোলের ওপারে (এই সমস্ত পীঠের সংখ্যা, মাহাত্ম্য আর কে শঙ্করাচার্য্য হবেন তাই নিয়ে বর্তমান এবং হলেও-হতে-পারেন শঙ্করাচার্য্যদের মধ্যেই প্রচন্ড বিতর্ক আর রেষারেষি রয়েছে - উৎসাহী পাঠক চাইলে ধীরেন্দ্র কুমার ঝা-এর Ascetic Games পড়ে দেখতে পারেন। মালেগাঁও ব্লাস্ট নিয়ে লেখায় এর ডিটেলড আলোচনা আর করছি না)।
দ্বিতীয় যে গোষ্ঠীর কথা বললাম - সেনাবাহিনীর প্রাক্তন ও বর্তমান সদস্য - হিন্দু জাতীয়তাবাদী মুভমেন্টে এঁদেরও উপস্থিতি নেহাত কম নয়। হিন্দু জাতীয়তাবাদ শুরু থেকেই এই মুভমেন্টে একটা মার্শাল বা সামরিক রূপ দিতে চেয়েছে। সাভারকরের ক্ষেত্রে যেমন "হিন্দুধর্মের সামরিকীকরণ" (militarise Hindudom) শুধুমাত্র একটা স্লোগান ছিলো না - দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সাভারকর সক্রিয়ভাবে কমবয়সী হিন্দু ছেলেদের আর্মিতে ঢোকানোর পক্ষে সওয়াল করেছিলেন, লক্ষ্য ছিলো এই প্রশিক্ষিত হিন্দু সৈন্যরা ভবিষ্যতে মুসলমানদের সাথে অবশ্যম্ভাবী সিভিল ওয়ারে হিন্দুত্বের পরম শক্তিশালী খুঁটি হয়ে উঠবে। হিন্দু মহাসভায় তাঁর অনুগামী ডঃ বিএস মুঞ্জে যে ভোঁসলে মিলিটারি স্কুল তৈরী করেছিলেন - যার কথা এই সিরিজের একদম প্রথম পোস্টে ছিলো - সেই স্কুলের পিছনেও সাভারকরের পূর্ণ সমর্থন ছিলো। এবং, অভিনব ভারতের সঙ্গেও ভোঁসলে মিলিটারি স্কুলের যোগসূত্রের প্রমাণ পাওয়া যায়। ২৬শে জানুয়ারির ফরিদাবাদ মিটিঙে কর্ণেল পুরোহিত জোরগলায় বলেছিলেন - "Whatever I have said today is in fact taken care of by the officers sitting there. The entire school is in my hands."
একটা ছোট্ট পরিসংখ্যান দিই - ইন্টারেস্টিং লাগতেও পারে।
১৯৮৯-৯১ সাল নাগাদ, মানে যে সময়ে ভারতীয় জনতা পার্টি কোমর বেঁধে ইলেকশনে নামে, সেই সময়ে পার্টিতে বেশ কিছু এক্স-আর্মি লোকজনকে নেওয়া হয়, যাঁদের মধ্যে ছিলেন - দুজন রিটায়ার্ড এয়ারমার্শাল, ছ'জন রিটায়ার্ড লেফটেন্যান্ট জেনারেল, চারজন রিটায়ার্ড মেজর জেনারেল, চারজন রিটায়ার্ড ব্রিগেডিয়ার, চারজন রিটায়ার্ড কর্ণেল, দুজন রিটায়ার্ড মেজর, তিনজন রিটায়ার্ড ক্যাপ্টেন, দুজন রিটায়ার্ড উইং কম্যান্ডার, আর একজন করে রিটায়ার্ড এয়ার কমোডোর, লেফটেন্যান্ট কর্ণেল, স্কোয়াড্রন লীডার আর ফ্লায়িং অফিসার। এঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে বসানো হয় বিজেপির জাতীয় কার্য্যসমিতিতে আর পার্টির ডিফেন্স সেল-এ। এঁদের বিজেপিতে যোগ দেওয়ার কিছুদিন আগে আরো বেশ কয়েকজন প্রাক্তন সেনা হিন্দুত্ব ফোল্ডে চলে এসেছিলেন - যাঁদের মধ্যে একজন, ক্যাপ্টেন জগৎ বীর সিং দ্রোণ ততদিনে কানপুরের আরএসএস প্রধান। শুধু আর্মি নয়, আশি আর নব্বইয়ের দশকে পুলিশের বেশ কিছু বড়কর্তাও একে একে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে।
একটা কথা মনে রাখা ভালো - স্বাধীনতার অনেক বছর পরেও একটা সময় অবধি ধর্মীয় দাঙ্গার সময়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পারফরমেন্সে কোনো কালির দাগ ছিলো না। তবে ওই নব্বইয়ের দশকের শুরুতে একসাথে এতজন আর্মি অফিসারের বিজেপিতে যোগ দেওয়া স্বাভাবিকভাবে আর্মির ভিতরের "চেঞ্জিং ডায়নামিক্স" নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেয়। ২০০৩ সালে তেহেলকার এক সার্ভেতে জানা যায় সেনাবাহিনীর জওয়ানদের মধ্যে ১৯% কোনো না কোনো সময়ে ধর্মীয় বৈষম্যের মুখোমুখি হয়েছেন। সার্ভেতে যাঁরা পার্টিসিপেট করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে ২৪% মুসলমান।
গত শতাব্দীর শেষের দিক থেকে সেনাবাহিনীর ভিতরের ডায়নামিক্স যদি বদলেও থাকে, ২০০৮ এর আগে হিন্দু মৌলবাদী কোনো ঘটনায় কখনো আর্মি অফিসারকে জড়িত থাকতে দেখা যায়নি। অভিনব ভারত সেই ধারণার মূলে সজোরে আঘাত করে - সেই প্রথম - যখন অন্ততঃ দুজন আর্মি অফিসারের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়। একদম শুরুতেই গ্রেপ্তার হয়েছিলেন মেজর রমেশ উপাধ্যায় - প্রাক্তন ডিফেন্স সার্ভিসেস অফিসার - যিনি খুব জলদিই স্বীকার করেন যে নাসিকের ভোঁসলে মিলিটারি স্কুল কমপ্লেক্সের মধ্যেই সাধ্বী প্রজ্ঞা এবং আরো কয়েকজনের সাথে তিনি গোটা ঘটনার প্ল্যান তৈরীর মিটিঙে অংশ নিয়েছিলেন। পাব্লিক প্রসিকিউটর অজয় মিসার কোর্টে জানান - "Upadhyaya, who was posted in the artillery department while working with the Indian military, is suspected to have guided the arrested accused on how to assemble a bomb and procure RDX" (Retd Major trained Sadhvi in bomb-making: Prosecutor, Times of India, October 30, 2008).
বেশ কিছু প্রেস রিপোর্ট অনুযায়ী রমেশ উপাধ্যায় ছিলেন অভিনব ভারতের অ্যাক্টিং প্রেসিডেন্ট, যখন হিমানী সাভারকর ছিলেন প্রেসিডেন্ট। তবে গোটা গ্রুপের আসল কর্ণধার ছিলেন সেনাবাহিনীর আরেক সদস্য - লেফটেন্যান্ট কর্ণেল শ্রীকান্ত পুরোহিত - রমেশ উপাধ্যায় নাসিকে লিয়াজঁ অফিসার হিসেবে পোস্টেড থাকাকালীন পুরোহিতই তাঁর সাথে যোগাযোগ করেন। পুরোহিত এবং উপাধ্যায় একসাথেই কমবয়সী সদস্যদের মিলিটারি ট্রেনিং দিতেন, অস্ত্রশস্ত্রের ব্যবস্থাও করতেন। ২০০৪-০৫ সালে জম্মুকাশ্মীরে পোস্টেড থাকাকালীন পুরোহিত ডকুমেন্ট জাল করতে শুরু করেছিলেন - অন্যদের অস্ত্রের লাইসেন্সের জন্যে। ২০০৮ সালের জুলাই নাগাদ মধ্যপ্রদেশের পাঁচমারিতে পোস্টেড হয়ে আসার পর লাগাতার বেশ কিছু ট্রেনিং ক্যাম্পের ব্যবস্থা করেন হিন্দুত্বের সৈন্যদের প্রশিক্ষণ দিতে। এর মধ্যে অধিকাংশ ক্যাম্পই হত নাসিকের ভোঁসলে মিলিটারি স্কুলে - সেখানে যদিও পুরোহিতই প্রথম নয়, বরং ১৯৭৩ সাল থেকে ১৯৮৮ সাল অবধি রিটায়ার্ড মেজর পিবি কুলকার্নি এই ক্যাম্পগুলো চালাতেন। মেজর কুলকার্নির সাথে আরএসএস এর সম্পর্ক সেই ১৯৩৫ সাল থেকেই। আর শুধু অভিনব ভারত নয়, তার আগে ২০০১ সালেও বজরং দল ওই একই ভোঁসলে মিলিটারি স্কুলে অস্ত্রশিক্ষার ক্যাম্প করেছে - যেখানে ১০-১৫ বছরের ছেলেদের আগ্নেয়াস্ত্রের শিক্ষা দেওয়া হত।
মালেগাঁও ব্লাস্টের বিভিন্ন নথি, টেস্টিমোনিয়াল ঘেঁটে বোঝা যায় যে শুধু এই দুজন ন'ন, আরো বেশ কয়েকজন আর্মি অফিসার অভিনব ভারতের সাথে জড়িয়েছিলেন। কর্ণেল পুরোহিত মেইন ইনফ্লুয়েন্সার/রিক্রুটার হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন আরো বেশি বেশি করে সেনাবাহিনীর লোককে হিন্দুত্বের ছাতার তলায় টেনে আনার। শুধু সেনাবাহিনী নয়, সংঘ পরিবারের অন্যান্য সংগঠনের মধ্যে থাকা চরমপন্থী লোকেদেরও টেনে আনার…
"The interrogation of Purohit establishes him as a man with forthright views on Hindu extremism. He was extremely frank in expressing his concerns about Hindus getting killed by jehadi terror groups and strongly felt that something had to be done about it. He had shared such views – that Hindus needed to retaliate – on several occasions with his colleagues in the Army. Of course, none of these colleagues realised the seriousness of his opinion or that it would lead him to plot real revenge attacks.[...] Purohit was the key man behind Abhinav Bharat, building its cadre by drawing ‘extremist’ elements from VHP [Vishwa Hindu Parishad] and RSS. An expert at liaisoning, Purohit had a unique sixth sense in identifying radical members of the right-wing outfits like VHP and then motivating them to join Abhinav Bharat." ["I masterminded Malegaon Blast: Lt. Col", The Economic Times, 7 November 2008]
হিন্দুত্বের ইতিহাস ফলো করলে দেখবেন - সাভারকর নিজেও আরএসএসের তথাকথিত নিষ্ক্রিয়তায় ক্ষুব্ধ নাথুরাম গডসেকে টেনে এনেছিলেন নিজের হিন্দু রাষ্ট্র দলে - কারণ আরএসএস "বিশ্বাসঘাতক" গান্ধী আর মুসলমানদের বিরুদ্ধে "অ্যাকশন" নিতে দেরী করছিলো। পরের ঘটনা তো সবাই জানে…
বাকি রইলো মালেগাঁও ব্লাস্টে জড়িত তৃতীয় গোষ্ঠী - মানে সংঘ পরিবারের কর্মী/সদস্য…
রমেশ উপাধ্যায় নিজেই একসময় মুম্বইয়ে বিজেপির এক্স-সার্ভিসমেন সেল এর মাথায় ছিলেন। মালেগাঁও বিস্ফোরণের তদন্তে প্রথম গ্রেপ্তার হ'ন সাধ্বী প্রজ্ঞা সিং ঠাকুর - ইন্দোর এবং উজ্জয়িনীর অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের নেত্রী ছিলেন ১৯৯৭ সাল অবধি - এবিভিপির জাতীয় কর্মসমিতিতে যাওয়ার আগে অবধি। সমীর কুলকার্নি - যিনি অ্যাপারেন্টলি মধ্যপ্রদেশে অভিনব ভারত শুরু করেছিলেন (হিমানী সাভারকরের ভাষ্য অনুযায়ী) - ছিলেন আরএসএস এর সক্রিয় কর্মী। তবে সংঘ পরিবারের তথাকথিত "নিষ্ক্রিয়তা" দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে অভিনব ভারতে আসার সেরা উদাহরণ বিএল শর্মা - যিনি ১৯৪০ থেকে আরএসএস এর সাথে যুক্ত ছিলেন, আর রামজন্মভূমি আন্দোলনের সময় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের হয়ে মাঠে নামেন। ১৯৯১ আর ১৯৯৬ সালে বিজেপির টিকিটে লোকসভা ভোটে জেতার পরে ১৯৯৭ সালে সাংসদ পদ আর বিজেপি থেকে বেরিয়ে এসে পুরোদস্তুর বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কাজে জড়িয়ে পড়েন রাজ্য সম্পাদক হিসেবে। "অখন্ড ভারত" নিয়ে এগোতে বিজেপির "অনীহা" দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে লালকৃষ্ণ আদবানিকে একটা কড়া চিঠি লিখেছিলেন সেই সময়ে যেটা তিনি ২৬শে জানুয়ারির ফরিদাবাদ মিটিঙে পড়ে শোনান…
"The country should be taken over by the Army. How far is it feasible? It’s been a year that I have sent some three lakh letters, distributed 20,000 maps of Akhand Bharat on 26 January, but these Brahmins and traders have never done anything and neither will they do. I do not talk of casteism. It’s just that they don’t have the potential; they don’t have the aptitude for this kind of feelings. Ultimately they do things that are feasible. One Chanakya comes up and becomes a moderate ruler. Even if people have the capability it is only when a seed is planted in the mind [that] it can make huge differences. It is not that physical power is the only way to make a difference but to awaken people mentally. I believe that you have [to] set fire in the society, at least a spark."
যদিও এই চিঠি লেখা সত্ত্বেও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের অনুরোধে ফের ২০০৯ সালে শর্মা বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন…মানে তথাকথিত "নিষ্ক্রিয়তা" নিয়ে ক্ষোভ থাকলেও সংঘ পরিবারের মধ্যে থেকেই এঁরা প্রত্যেকে অভিনব ভারতের পরিকল্পনায় অংশ নিয়েছিলেন বিভিন্ন ক্যাপাসিটিতে।
মালেগাঁও ব্লাস্ট সেই গোটা পরিকল্পনার একটা ছোট্ট অংশ। পুরো পরিকল্পনা কী ছিলো? লিখবো আস্তে আস্তে।
#ShadowArmiesOfHindutva
(১) Shadow Armies - Fringe Organisations and Foot Soldiers of Hindutva, Dhirendra Kr. Jha
(২) Abhinav Bharat, the Malegao Blast and Hindu Nationalism: Resisting and Emulating Islamist Terrorism, Christophe Jaffrelot, Economic & Political Weekly, Vol. 45, Issue No. 36, 04 Sep, 2010
(৩) Chargesheets and Miscellaneous Documents regarding the Malegaon Case
No comments:
Post a Comment