কোন পোস্ট মডার্ন সাহিত্য নয়, জ্বালাময়ী বক্তৃতাও না - শুধুমাত্র টুকরো টুকরো ঘটনা, কে কি বলেছেন আর তার ইনফারেন্স...এবং একটা অকপট স্বীকারোক্তি৷
তর্কটা বহুদিন ধরেই চলছে...অনেকটাই ঘেঁটে যাওয়া, খেই হারিয়ে ফেলা, এবং আরো ঘেঁটে দেবার জন্যেই এই লেখা৷ দুধকে ঘেঁটেই তো মাখন বেরোয়...
৬ই অক্টোবর - ল্যাঙ্কাশায়ার টেলিগ্রাফে কমনসের লেবার পার্টির নেতা জ্যাক স্ট্র মুসলিম মহিলাদের নিকাব নিয়ে আপত্তির কথা লিখলেন -
"It was not the first time I had conducted an interview with someone in a full veil, but this particular encounter, though very polite and respectful on both sides, got me thinking. In part, this was because of the apparent incongruity between the signals which indicate common bonds - the entirely English accent, the couples' education (wholly in the UK) - and the fact of the veil. Above all, it was because I felt uncomfortable about talking to someone 'face-to-face' who I could not see."
জ্যাক স্ট্র লেবার পার্টির অন্যতম চেনা মুখ, তাঁর মুখে নিকাব-পরিহিতার সাথে কথা বলাতেও অস্বস্তির কথা ব্রিটেনের মাল্টি-কালচারিজমের মুখে বড় জুতো। অবিশ্যি স্ট্র পরে এও লিখেছেন - "I explain that this is a country built on freedoms. I defend absolutely the right of any woman to wear a headscarf. As for the full veil, wearing it breaks no laws" - কিন্তু তার সাথে এটুকুও - "I go on to say that I think, however, that the conversation would be of greater value if the lady took the covering from her face" - একটা নিকাবেই তাঁর অস্বস্তি, নাকি একটু পালিশ করা ভাষায় আরেকজনের ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ?
(পুরো লেখা পাবেন এখানে।)
১৫ই অক্টোবর - রবিবার সকালে ঘুম ভাঙলো আরো একটা অস্বস্তিকর খবরে - ডিউসবুরির এক প্রাইমারী স্কুলের টীচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট আয়েশা আজমিকে সেই স্কুল সাসপেন্ড করেছে কিছুদিন আগে, পড়ানোর সময় নিকাব থাকার জন্য৷ লেবার সরকারের Race Relations -বিষয়ক মন্ত্রী Phil Woolas দাবী করেছেন আয়েশাকে বরখাস্ত করা উচিত৷ স্কুলের বক্তব্য - "Ms Azmi had been asked to take off her veil in class because children had difficulty understanding her in English lessons. When she refused to remove the veil, she was suspended pending an employment tribunal", আয়েশার বক্তব্য - "The children are aware of my body language, my eye expressions, the way I'm saying things. If people think it is a problem, what about blind children? They can't see anything but they have a brilliant education, so I don't think my wearing the veil affects the children at all".
প্রশ্নটা এখানে ধর্মীয় অনুশাসনের নয় - নিকাব পরা ঠিক কি ভুল সেটা নিয়েও নয়৷ প্রশ্নটা আয়েশার নিকাব পরার স্বাধীনতা নিয়ে৷ আয়েশা নিশ্চয় ইন্টারভিউ দিয়েই চাকরি পেয়েছিলেন, এবং একজন শিক্ষিকা ক্লাসে (এবং সর্বত্র) নিকাব পরছেন মানে ইন্টারভিউয়ের সময় তিনি কোট-প্যান্ট পরেছিলেন এটা ভাবা কষ্টকর৷ হঠাৎ করে এখনই স্কুল এবং ডিউসবুরি কাউন্সিলের পোশাক-সংক্রান্ত ডিসিপ্লিন জেগে উঠলো কেন?
ডেইলি এক্সপ্রেস একটা "ওপিনিয়ন পোল" করলো - ৯৭ শতাংশ ডেইলি এক্সপ্রেস পাঠক নাকি মনে করেন হিজাব/নিকাব/বোরখার ওপর নিষেধাজ্ঞা সাম্প্রদায়িক সম্রীতি বজায় রাখবে৷ ডেভিড এডগার একটা লেখা লিখলেন "দ্য গার্ডিয়ান"-এ (সরি, উই জাস্ট কান্ট পিক অ্যাণ্ড চুজ হোয়াট উই টলারেট) - নিষেধাজ্ঞাটা কি করে লাগু হবে? নিকাব পরলে পুলিশে সেটা টেনে ছিঁড়ে দেবে? নাকি অ্যাসবো (Asbo - অ্যান্টি সোশ্যাল বিহেভিয়ার অর্ডার)? নাকি জেলে ভরবে? ঐ লেখাই জানাচ্ছে যে এর প্রিসিডেন্স আছে - ফ্রান্সের ইস্কুলে পোশাক নিয়ে বিতর্কের খবর আমাদের বাংলা কাগজেও বেরিয়েছিলো৷ নেদারল্যাণ্ডসের পার্লামেন্টও কর্মক্ষেত্রে এবং পাবলিক প্লেসে বোরখা ব্যান নিয়ে একটি আইন পাস করেছে৷ রটারড্যামে মসজিদের ডিজাইন "অতি ইসলামিক" বলে বাতিল হচ্ছে; এবং ডাচ নাগরিকত্ব আইন বলে রাস্তাঘাটে ডাচ ছাড়া অন্য ভাষায় কথা বলা যাবে না৷ বোরখা/হিজাব/নিকাব ব্যান জার্মানির কিছু জায়গাতেও৷ "Liberalism can so easily collapse into nativism..." - এডগার লিখলেন - "There is, one hopes, no call for Britain to follow the US state of Virginia in banning visible underwear from its streets. But you can't have it both ways: I can disagree with what you wear, but - if I am to remain true to universalist Enlightenment values - the other half of Voltaire's formulation has to click in too."
এই দেশগুলো - ব্রিটেন, নেদারল্যাণ্ডস, ফ্রান্স - যারা প্রগতিশীল বলে পরিচিত, যারা সবরকম সেন্সরশিপের বিরুদ্ধে কথা বলে থাকে - তারা নিজেরাই এখন সেই সেন্সরশিপকেই জাস্টিফাই করতে ব্যস্ত৷
এবার স্বীকারোক্তি -
স্বীকারোক্তিটা হল নিকাব বা বোরখা পরিহিতা কারো সাথে সামনাসামনি কথা বলতে কিছুক্ষণের জন্যে হয়তো আমারও অস্বস্তি হবে৷ নিকাব/বোরখা পরিহিতা নারী শুধু নয় - পুরো পাগড়িঢাকা কোন পুরুষের ("সোনার কেল্লা" দ্রষ্টব্য) সাথে কথা বলতেও অস্বস্তি হবে - আমি লালমোহনবাবু নই, ভয়ের প্রশ্ন নয় - কিন্তু মুখ না দেখতে পেলে ভালো করে কথা বলা যায়কি? কিন্তু কতক্ষণ অস্বস্তি হবে? পাঁচ মিনিট? দশ মিনিট? তার বেশি কি? মনে হয় না৷ এটুকু স্বীকার করে নিয়ে দুটো প্রশ্ন রাখতে চাই৷৷৷
ঐ অস্বস্তি সত্ত্বেও নিকাব/বোরখা/হিজাব - যিনি পরছেন তাঁর নিজস্ব চয়েজ, রাষ্ট এখানে নাক গলানোর কেউ নয়৷ কাজেই ফ্রী স্পীচ বা সিভিল রাইটস আন্দোলনকে সমর্থন করলে স্ট্র, বা Phil Woolas (এবং প্রায় অর্ধেক লেবার/টোরি কেউকেটা) - এঁদের বিভিন্ন ডিগ্রীর হিটলারই মনে হবে৷ এবং বিশেষ করে চার্চ স্কুলে ফাদার বা সিস্টারেরা যখন দিব্যি ধর্মীয় আলখাল্লা বা হ্যাবিট পরতে পারেন, নিকাব/হিজাব ব্যান হবে কোন দু:খে? ব্রিটেন না মাল্টিকালচারাল?
একটা প্রশ্ন উল্টোদিকেও - শুধু জানতে চাই কোরাণের কোন ইন্টারপ্রিটেশন চোদ্দ বছর ধরে সাধারণ স্কুল ইউনিফর্ম পরে স্কুলে যাওয়া সাবিনা বেগমকে একদিন আচমকা মনে করিয়ে দেয় যে জিলবাব না পরলে সে ধর্মভ্রষ্ট হবে? বা সদ্য শিরোনামে আসা তেইশ বছরের আয়েশাকে বলে বাচ্চাদের ক্লাস নেওয়ার সময়েও নিকাব পরা খোদার বিধান?
শেষে একটা ছোট্ট সংযোজন - ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ এক মহিলা কর্মীকে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে তাঁর জুয়েলারি কনসিলড ছিলো না বলে - জুয়েলারি বলতে একটা ক্রস৷ ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের তরফ থেকে স্টেটমেন্টে বলা হয়েছে হিজাব বা পাগড়ি বা বালা (শিখেদের ক্ষেত্রে) কনসিল করা সম্ভব নয়, তাই সেগুলোর জন্যে ছাড় দেওয়া হতে পারে৷ ক্রিশ্চান সংগঠনগুলো এই নিয়ে প্রবল আপত্তি করেছে - যে কারণে একজন শিখ হাতে বালা বা মাথায় পাগড়ি পরতে পারে, বা একজন মুসলমান হিজাব পরতে পারে, আমরা কেন ক্রস ঝোলাতে পারবো না...
একদিকে রাজনীতিবিদ, অন্যদিকে হিউম্যান রাইটস - তর্ক চলে৷ ক্রমশ প্রচারমাধ্যমের চড়া আলোয় গা পোড়ে সাধারণ মুসলমান মানুষের - নিরীহ নাদিম বলে "লোকে আমার নাম শুনলে এখন বড় অন্যরকম ভাবে তাকায়, জানো"...চার্চ থেকে বাইবেল হাতে প্রচার করতে আসা ভদ্রলোক আমার নিরুত্সাহ দেখে প্রশ্ন করেন আমি মুসলমান কিনা..."দিবে আর নিবে, মিলাবে মিলিবে"-র মাল্টিকালচারালিজম নয়, নেটিভ সমাজের মধ্যে মিশে যাওয়ার দাবি করা প্রগতিশীলতার কথা শুনি - নরেন্দ্র মোদিদের কথা মনে পড়ে যায় - আর গার্ডিয়ানে গরম গরম লেখাগুলো পড়ে স্যাঁতস্যাঁতে নিউক্যাসলে আমি একটু গা গরম করি৷ একদিন আমার প্রশ্নদুটোর উত্তর পেলেই হল৷
(মূল লেখা গুরুচণ্ডা৯তে এবং কিছু আলোচনা)
স্লোগান দিতে গিয়ে আমি বুঝেছি এই সার, সাবাস যদি দিতেই হবে সাবাস দেবো তার, ভাঙছে যারা, ভাঙবে যারা খ্যাপা মোষের ঘাড় ৷
Monday, November 13, 2006
Friday, October 20, 2006
রাষ্ট্রপতির মৃত্যু
চ্যানেল ফোরে কাল দেখালো একটা বিতর্কিত ডকু-ফিল্ম - ডেথ অব আ প্রেসিডেন্ট। গুরুচণ্ডা৯তে রঙ্গনের লেখা এই নিয়ে...
"শিকাগোতে উনিশে অক্টোবরের সকাল৷ শিকাগো এয়ারপোর্টে আমেরিকা যুক্তরাষ্টের্র প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ এসে পৌঁছেছেন৷ শিকাগো ইকোনমিক ক্লাবের মিটিঙে ভাষণ দেবেন৷ প্রেসিডেন্টের কনভয় শেরাটন হোটেলের দিকে রওনা দিয়েছে৷ অন্যদিকে সেইদিন শিকাগো শহর বুশবিরোধী সমাবেশ, মিছিল ও ধর্নায় উত্তাল৷ শিকাগোর পুলিশ চিফের কথায়- "বুশ যেখানেই যান সাধারণত: সেখানে বিক্ষোভ দেখানো হয়৷ কিন্তু এই প্রথম মনে হল বিক্ষোভকারীদের চোখমুখ দিয়ে যেন ঘেন্না ঠিকরে পড়ছে৷" রাস্তার দুপাশের বিক্ষোভকারীদের সারি একসময় পুলিশ কর্ডন ভেঙে ফেলে৷ কেউ কেউ রাস্তার মধ্যে এসে যায়৷ বুশের কনভয় থেমে যায়৷ কোনো কোনো দু:সাহসী বুশের গাড়িতেও হাত দেয়৷ পুলিশ কোনো রকমে তাদের হঠিয়ে দিলে, বুশের কনভয় পূর্বনির্ধারিত পথ ছেড়ে বিকল্প রাস্তা দিয়ে শেরাটন হোটেলে পৌঁছায়৷ শেরাটন হোটেলের বাইরেও লাগাতার বিক্ষোভ চলছে৷ সেইখানেও একটা সময়ের পর বিক্ষোভকারীদের সাথে পুলিশের খন্ডযুদ্ধ শুরু হয়৷ দুই একজন পুলিশের নিশ্ছিদ্র কর্ডন ভেঙেও ফেলে৷ শেরাটন হোটেলের চারদিকে নিরাপত্তা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে৷ প্রেসিডেন্ট বুশ তার বক্তৃতা শুরু করেন৷ যথারীতি দুই একটা বুশোচিত রসিকতা, শিকাগোর ডেমোক্র্যাট মেয়রের প্রশস্তি ইত্যাদি৷ তবে বক্তৃতার মূল কেন্দ্রবিন্দু উত্তর কোরিয়ার প্রতি হুমকি৷ বক্তৃতা শেষ হলে প্রেসিডেন্ট হোটেলের দরজার সামনে এসে লাল দড়ির আশেপাশে জমায়েত অভ্যাগতদের সাথে আলাপ পরিচয় করছেন৷ বক্তৃতার অভিঘাত প্রত্যাশিত৷ তাই প্রেসিডেন্ট বেশ খোশমেজাজে৷ এই আলাপচারিতার মধ্যেই হঠাত্ একটা বুলেটের শব্দ৷ বেশ কয়েকজন লুটিয়ে পড়েন মাটিতে৷ তার মধ্যে প্রেসিডেন্ট একজন৷ প্রচন্ড বিশৃঙ্খলা, আর্তনাদ, হুড়োহুড়ি৷ তার মধ্যে স্পেশাল সার্ভিসের লোকেরা বিদ্যুত্গতিতে প্রেসিডেন্টকে গাড়িতে তুলে হাসপাতালের দিকে ছুটছেন৷
ঘটনাটি ঘটে ২০০৭ সালের ১৯শে অক্টোবর৷ সিনেমার নাম দেখে নিশ্চয় বোঝা যাচ্ছে এর পরে প্রেসিডেন্ট মারা যাবেন৷ তবে সিনেমাটা প্রেসিডেন্টের মৃত্যুতেই কিন্তু শেষ হয় না৷ প্রেসিডেন্টের হত্যার তদন্ত এবং অপরাধের শাস্তি অবধি সিনেমা এগোয়৷ কে মারলেন, কি ভাবে মারলেন ইত্যাদি ইত্যাদি চাপাই থাক৷ নইলে পুরো সিনেমাটার মজাটাই নষ্ট৷
এই পর্যন্ত পড়ে যদি কেউ ভাবেন যে এটা বুঝি হলিউডের তারকাখচিত কোনো ব্লকবাস্টার, তাহলে ভুল ভাবছেন৷ এই সিনেমাটির অবস্থান তথ্যচিত্র এবং কাহিনীচিত্রের মাঝামাঝি কোনো জায়গায়৷ এটি কাহিনীচিত্র কারণ পুরো সিনেমাটায় যা দেখানো হয় তা পুরোটাই ভবিষ্যত্ কল্পনা৷ কিন্তু গঠনের দিক থেকে সিনেমাটি একটি তথ্যচিত্র৷ যারা ব্রিটিশ ডকুমেন্টারি ছবির সাথে পরিচিত, তারা এই স্টাইলের ব্যাপারটা ধরতে পারবেন৷ ঘটনার ফুটেজ এবং মূল পাত্রপাত্রীদের ইন্টারভিউ দিয়ে সিনেমটা বানানো হয়েছে৷ বি বি সির যে কোনো টি ভি ডকুমেন্টারির সাথে এই সিনেমার গঠনের কোনো তফাত্ নেই৷ তফাত্ শুধু একটাই- এখানে তথ্যও কাল্পনিক৷ কিন্তু জর্জ বুশ মানে জর্জ বুশ, ডিক চেনি মানে ডিক চেনি৷ অর্থাত্ জর্জ বুশ বা ডিক চেনির ভূমিকায় কোনো অভিনেতা অভিনয় করেন না৷ সিনেমাতে দেখবেন জর্জ বুশ শিকাগো এয়ারপোর্টে নামছেন, শিকাগোতে বক্তৃতা দিচ্ছেন, অভ্যাগতদের সাথে হাত মেলাচ্ছেন এবং গুলি খেয়ে পড়ে যাচ্ছেন৷ ডিক চেনি কার্যভার গ্রহণ করছেন, এবং মৃত প্রেসিডেন্টের পারলৌকিক অনুষ্ঠানে ভাষণ দিচ্ছেন৷ সিনেমাটি প্রথম দেখানো হয় ২০০৪ সালের টরন্টো চলচ্চিত্র উত্সবে৷ মোর৪ চ্যানেলে ৯ই অক্টোবর৷ এবং চ্যানেল ফোরে ১৯শে অক্টোবর, ২০০৬৷ আমেরিকানরা মারাত্মক খেপে গেছেন সিনেমা দেখে৷ টেক্সাসের রিপাব্লিকান পার্টির মতে সিনেমার বিষয়বস্তু "shocking" এবং "disgusting" ৷ জর্জ বুশের পয়লা প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিন্টনের মতে: "I think it's despicable... I think it's absolutely outrageous. That anyone would even attempt to profit on such a horrible scenario makes me sick." আমরা যেহেতু কিছুতেই খুব একটা অসুস্থ হই না, তাই আমরা সিনেমাটির আর একটু ভিতরে যাব৷
সিনেমা শুরু হয় এক মহিলার কন্ঠস্বরে আরবী ভাষার ভয়েস ওভার দিয়ে৷ ৯/১১ হবার পরে মহিলা বিধ্বস্ত৷ যদিও তাঁর অনেক প্রতিবেশীই বলেন, যা হয়েছে ঠিক হয়েছে৷ আমরা এতদিন ভুগেছি, এবার ওরাও একটু ভুগুক৷ কিন্তু মহিলার প্রশ্ন- এর ফলে আমরা কি পেলাম? মহিলা এইবার জামাল বলে কোনো এক লোকের কথা বলেন যিনি মহিলার স্বামীই হবেন হয় তো৷ জামাল এইটা কি করল? কেন করল? আমাদের সন্তানের কথা ভাবল না? দেশের কথা? মানুষের কথা৷ এর পরেই কাহিনী শুরু হয় সকালবেলার শিকাগো এয়ারপোর্টে৷ যেহেতু আমেরিকানরা ক্ষেপে গেছেন, মনে হওয়া স্বাভাবিক যে সিনেমাটা প্রচন্ড আমেরিকাবিরোধী বা বুশবিরোধী৷ নিশ্চয় প্রচুর সাবভার্সিভ রাগী কথাবার্তা আছে৷ এবং সিনেমার শুরুতে সেই আরবী ভাষার ইন্টারভিউ বুঝিয়ে দেয় যে এই সিনেমা প্রথম থেকেই যতদূর সম্ভব নিরাসক্ত থাকবে৷ যতদূর থাকা যায়৷
কি করে নিরাসক্ত থাকা যায়? ধরুন আজ আপনি বুশের কাছের লোকজনদের ইন্টারভিউ নিলে যে রকম কথাবার্তা শুনবেন, সিনেমাতে বুশের স্পেশাল অ্যাডভাইজার ঠিক সেইভাবেই ইন্টারভিউ দেন৷ বা পুলিশকর্তারা৷ বা ঘটনার পরে যাদের সন্দেহের বশে গ্রেফতার করা হয় তারাও৷ কখনই উচ্চকিত চমক নেই৷ আজ আমরা যেখানে দাঁড়িয়ে, সেখান থেকে ২০০৭ অবধি যদি একটা ট্রেন্ড লাইন আঁকেন, তবে মনে হবে এই সব উক্তি, প্রত্যুক্তি, মতামত একান্ত স্বাভাবিক৷ আজকে দাঁড়িয়ে টি ভিতে আমরা এই সবই শুনে থাকি৷ আজকের টি ভির বিভিন্ন খবর নিয়ে যদি একটা কোলাজ বানান, ইরাক-আফগানিস্থান-আবু ঘ্রায়িব-সিরিয়া-ইরান- ঠিক এই রকমই দাঁড়াত৷ তফাত্ হল, এখানে সবই কাল্পনিক যা একবছর পরে ঘটে৷ এবং বুশকে হত্যা করা হয়৷ ধারাবিবরণীতেও স্রেফ বিবরণ থাকে৷ কোথাও পরিচালক নিজের মতামত একবারও বলেন না৷ কিন্তু পুরো সিনেমাটাই তো পরিচালকের নিজের কথা!
এই নিরাসক্তির ছবি দেখতে দেখতে তবুও গায়ে জ্বালা ধরে, এবং সাথে সাথে হাড় হিম হয়ে আসে৷ আমাদের চারদিকে যা ঘটছে, ঘটেছে এবং ঘটতে চলেছে, তা এমনিতেই এমন ভয়ঙ্কর, যে তার জন্য আলাদা করে কোনো স্টাইলাইজড সাবভার্শনের দরকার হয় না৷ প্রতিদিনের সি এন এন, বি বি সি, এমন কি ফক্স নিউজের নিউজ ক্লিপিং জড়ো করে তৈরি করা যায় এই কালরাত্রির পাঁচালী৷ যদিও আমরা জানি মিডিয়া কিভাবে চলে এবং কোন মিডিয়া কাদের কথা বলে- তা সজ্জ্বেও এই বিকিয়ে যাওয়া মিডিয়ার তোলা ছবি দেখতে দেখতেই ভিতর থেকে আগুন জ্বলে৷ কোনো বিশেষ রাজনৈতিক মন্তব্য ছাড়াই৷ এই খবরগুলো সাজানোতেই পরিচালকের মুন্সিয়ানা৷ কিন্তু সাজিয়ে তোলার খেলাটা দর্শক কখনই বোঝেন না৷ শুধু গায়ে জ্বালা ধরে, হাড় হিম হয়ে আসে৷
যাদের রাজনৈতিক থিল্রার ভালো লাগে, তাদের অবশ্যই এই ছবি ভালো লাগবে৷ পুরো হত্যাকান্ডের ছক এইখানে বলব না আগেই বলেছি৷ শুধু বলি সব শেষে কি হয়৷ খুব অবাক করে দেওয়া কিছু হয় না৷ যা এখনও হচ্ছে, তারি একটা যৌক্তিক পরিণতি ঘটে৷ আমেরিকান পুলিশ এবং রাষ্ট্র নিজেদের হাতে আরও ক্ষমতা তুলে নেয়৷ প্যাট্রিয়ট অ্যাক্টের নতুন সংস্করণ বের হয় এবং প্যাট্রিয়ট অ্যাক্ট পার্মানেন্ট আইনে পরিণত হয়৷ ডিক চেনি প্রেসিডেন্টের পদ গ্রহণ করেন৷ আমেরিকা বিদেশী রাষ্টের্র মদত খুঁজে ফেরে৷ কোন রাষ্ট সেটা সিনেমাতেই দেখুন৷"
পুরো সিনেমা দেখতে চাইলে চলে যান গুগুল ভিডিওতে।
"শিকাগোতে উনিশে অক্টোবরের সকাল৷ শিকাগো এয়ারপোর্টে আমেরিকা যুক্তরাষ্টের্র প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ এসে পৌঁছেছেন৷ শিকাগো ইকোনমিক ক্লাবের মিটিঙে ভাষণ দেবেন৷ প্রেসিডেন্টের কনভয় শেরাটন হোটেলের দিকে রওনা দিয়েছে৷ অন্যদিকে সেইদিন শিকাগো শহর বুশবিরোধী সমাবেশ, মিছিল ও ধর্নায় উত্তাল৷ শিকাগোর পুলিশ চিফের কথায়- "বুশ যেখানেই যান সাধারণত: সেখানে বিক্ষোভ দেখানো হয়৷ কিন্তু এই প্রথম মনে হল বিক্ষোভকারীদের চোখমুখ দিয়ে যেন ঘেন্না ঠিকরে পড়ছে৷" রাস্তার দুপাশের বিক্ষোভকারীদের সারি একসময় পুলিশ কর্ডন ভেঙে ফেলে৷ কেউ কেউ রাস্তার মধ্যে এসে যায়৷ বুশের কনভয় থেমে যায়৷ কোনো কোনো দু:সাহসী বুশের গাড়িতেও হাত দেয়৷ পুলিশ কোনো রকমে তাদের হঠিয়ে দিলে, বুশের কনভয় পূর্বনির্ধারিত পথ ছেড়ে বিকল্প রাস্তা দিয়ে শেরাটন হোটেলে পৌঁছায়৷ শেরাটন হোটেলের বাইরেও লাগাতার বিক্ষোভ চলছে৷ সেইখানেও একটা সময়ের পর বিক্ষোভকারীদের সাথে পুলিশের খন্ডযুদ্ধ শুরু হয়৷ দুই একজন পুলিশের নিশ্ছিদ্র কর্ডন ভেঙেও ফেলে৷ শেরাটন হোটেলের চারদিকে নিরাপত্তা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে৷ প্রেসিডেন্ট বুশ তার বক্তৃতা শুরু করেন৷ যথারীতি দুই একটা বুশোচিত রসিকতা, শিকাগোর ডেমোক্র্যাট মেয়রের প্রশস্তি ইত্যাদি৷ তবে বক্তৃতার মূল কেন্দ্রবিন্দু উত্তর কোরিয়ার প্রতি হুমকি৷ বক্তৃতা শেষ হলে প্রেসিডেন্ট হোটেলের দরজার সামনে এসে লাল দড়ির আশেপাশে জমায়েত অভ্যাগতদের সাথে আলাপ পরিচয় করছেন৷ বক্তৃতার অভিঘাত প্রত্যাশিত৷ তাই প্রেসিডেন্ট বেশ খোশমেজাজে৷ এই আলাপচারিতার মধ্যেই হঠাত্ একটা বুলেটের শব্দ৷ বেশ কয়েকজন লুটিয়ে পড়েন মাটিতে৷ তার মধ্যে প্রেসিডেন্ট একজন৷ প্রচন্ড বিশৃঙ্খলা, আর্তনাদ, হুড়োহুড়ি৷ তার মধ্যে স্পেশাল সার্ভিসের লোকেরা বিদ্যুত্গতিতে প্রেসিডেন্টকে গাড়িতে তুলে হাসপাতালের দিকে ছুটছেন৷
ঘটনাটি ঘটে ২০০৭ সালের ১৯শে অক্টোবর৷ সিনেমার নাম দেখে নিশ্চয় বোঝা যাচ্ছে এর পরে প্রেসিডেন্ট মারা যাবেন৷ তবে সিনেমাটা প্রেসিডেন্টের মৃত্যুতেই কিন্তু শেষ হয় না৷ প্রেসিডেন্টের হত্যার তদন্ত এবং অপরাধের শাস্তি অবধি সিনেমা এগোয়৷ কে মারলেন, কি ভাবে মারলেন ইত্যাদি ইত্যাদি চাপাই থাক৷ নইলে পুরো সিনেমাটার মজাটাই নষ্ট৷
এই পর্যন্ত পড়ে যদি কেউ ভাবেন যে এটা বুঝি হলিউডের তারকাখচিত কোনো ব্লকবাস্টার, তাহলে ভুল ভাবছেন৷ এই সিনেমাটির অবস্থান তথ্যচিত্র এবং কাহিনীচিত্রের মাঝামাঝি কোনো জায়গায়৷ এটি কাহিনীচিত্র কারণ পুরো সিনেমাটায় যা দেখানো হয় তা পুরোটাই ভবিষ্যত্ কল্পনা৷ কিন্তু গঠনের দিক থেকে সিনেমাটি একটি তথ্যচিত্র৷ যারা ব্রিটিশ ডকুমেন্টারি ছবির সাথে পরিচিত, তারা এই স্টাইলের ব্যাপারটা ধরতে পারবেন৷ ঘটনার ফুটেজ এবং মূল পাত্রপাত্রীদের ইন্টারভিউ দিয়ে সিনেমটা বানানো হয়েছে৷ বি বি সির যে কোনো টি ভি ডকুমেন্টারির সাথে এই সিনেমার গঠনের কোনো তফাত্ নেই৷ তফাত্ শুধু একটাই- এখানে তথ্যও কাল্পনিক৷ কিন্তু জর্জ বুশ মানে জর্জ বুশ, ডিক চেনি মানে ডিক চেনি৷ অর্থাত্ জর্জ বুশ বা ডিক চেনির ভূমিকায় কোনো অভিনেতা অভিনয় করেন না৷ সিনেমাতে দেখবেন জর্জ বুশ শিকাগো এয়ারপোর্টে নামছেন, শিকাগোতে বক্তৃতা দিচ্ছেন, অভ্যাগতদের সাথে হাত মেলাচ্ছেন এবং গুলি খেয়ে পড়ে যাচ্ছেন৷ ডিক চেনি কার্যভার গ্রহণ করছেন, এবং মৃত প্রেসিডেন্টের পারলৌকিক অনুষ্ঠানে ভাষণ দিচ্ছেন৷ সিনেমাটি প্রথম দেখানো হয় ২০০৪ সালের টরন্টো চলচ্চিত্র উত্সবে৷ মোর৪ চ্যানেলে ৯ই অক্টোবর৷ এবং চ্যানেল ফোরে ১৯শে অক্টোবর, ২০০৬৷ আমেরিকানরা মারাত্মক খেপে গেছেন সিনেমা দেখে৷ টেক্সাসের রিপাব্লিকান পার্টির মতে সিনেমার বিষয়বস্তু "shocking" এবং "disgusting" ৷ জর্জ বুশের পয়লা প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিন্টনের মতে: "I think it's despicable... I think it's absolutely outrageous. That anyone would even attempt to profit on such a horrible scenario makes me sick." আমরা যেহেতু কিছুতেই খুব একটা অসুস্থ হই না, তাই আমরা সিনেমাটির আর একটু ভিতরে যাব৷
সিনেমা শুরু হয় এক মহিলার কন্ঠস্বরে আরবী ভাষার ভয়েস ওভার দিয়ে৷ ৯/১১ হবার পরে মহিলা বিধ্বস্ত৷ যদিও তাঁর অনেক প্রতিবেশীই বলেন, যা হয়েছে ঠিক হয়েছে৷ আমরা এতদিন ভুগেছি, এবার ওরাও একটু ভুগুক৷ কিন্তু মহিলার প্রশ্ন- এর ফলে আমরা কি পেলাম? মহিলা এইবার জামাল বলে কোনো এক লোকের কথা বলেন যিনি মহিলার স্বামীই হবেন হয় তো৷ জামাল এইটা কি করল? কেন করল? আমাদের সন্তানের কথা ভাবল না? দেশের কথা? মানুষের কথা৷ এর পরেই কাহিনী শুরু হয় সকালবেলার শিকাগো এয়ারপোর্টে৷ যেহেতু আমেরিকানরা ক্ষেপে গেছেন, মনে হওয়া স্বাভাবিক যে সিনেমাটা প্রচন্ড আমেরিকাবিরোধী বা বুশবিরোধী৷ নিশ্চয় প্রচুর সাবভার্সিভ রাগী কথাবার্তা আছে৷ এবং সিনেমার শুরুতে সেই আরবী ভাষার ইন্টারভিউ বুঝিয়ে দেয় যে এই সিনেমা প্রথম থেকেই যতদূর সম্ভব নিরাসক্ত থাকবে৷ যতদূর থাকা যায়৷
কি করে নিরাসক্ত থাকা যায়? ধরুন আজ আপনি বুশের কাছের লোকজনদের ইন্টারভিউ নিলে যে রকম কথাবার্তা শুনবেন, সিনেমাতে বুশের স্পেশাল অ্যাডভাইজার ঠিক সেইভাবেই ইন্টারভিউ দেন৷ বা পুলিশকর্তারা৷ বা ঘটনার পরে যাদের সন্দেহের বশে গ্রেফতার করা হয় তারাও৷ কখনই উচ্চকিত চমক নেই৷ আজ আমরা যেখানে দাঁড়িয়ে, সেখান থেকে ২০০৭ অবধি যদি একটা ট্রেন্ড লাইন আঁকেন, তবে মনে হবে এই সব উক্তি, প্রত্যুক্তি, মতামত একান্ত স্বাভাবিক৷ আজকে দাঁড়িয়ে টি ভিতে আমরা এই সবই শুনে থাকি৷ আজকের টি ভির বিভিন্ন খবর নিয়ে যদি একটা কোলাজ বানান, ইরাক-আফগানিস্থান-আবু ঘ্রায়িব-সিরিয়া-ইরান- ঠিক এই রকমই দাঁড়াত৷ তফাত্ হল, এখানে সবই কাল্পনিক যা একবছর পরে ঘটে৷ এবং বুশকে হত্যা করা হয়৷ ধারাবিবরণীতেও স্রেফ বিবরণ থাকে৷ কোথাও পরিচালক নিজের মতামত একবারও বলেন না৷ কিন্তু পুরো সিনেমাটাই তো পরিচালকের নিজের কথা!
এই নিরাসক্তির ছবি দেখতে দেখতে তবুও গায়ে জ্বালা ধরে, এবং সাথে সাথে হাড় হিম হয়ে আসে৷ আমাদের চারদিকে যা ঘটছে, ঘটেছে এবং ঘটতে চলেছে, তা এমনিতেই এমন ভয়ঙ্কর, যে তার জন্য আলাদা করে কোনো স্টাইলাইজড সাবভার্শনের দরকার হয় না৷ প্রতিদিনের সি এন এন, বি বি সি, এমন কি ফক্স নিউজের নিউজ ক্লিপিং জড়ো করে তৈরি করা যায় এই কালরাত্রির পাঁচালী৷ যদিও আমরা জানি মিডিয়া কিভাবে চলে এবং কোন মিডিয়া কাদের কথা বলে- তা সজ্জ্বেও এই বিকিয়ে যাওয়া মিডিয়ার তোলা ছবি দেখতে দেখতেই ভিতর থেকে আগুন জ্বলে৷ কোনো বিশেষ রাজনৈতিক মন্তব্য ছাড়াই৷ এই খবরগুলো সাজানোতেই পরিচালকের মুন্সিয়ানা৷ কিন্তু সাজিয়ে তোলার খেলাটা দর্শক কখনই বোঝেন না৷ শুধু গায়ে জ্বালা ধরে, হাড় হিম হয়ে আসে৷
যাদের রাজনৈতিক থিল্রার ভালো লাগে, তাদের অবশ্যই এই ছবি ভালো লাগবে৷ পুরো হত্যাকান্ডের ছক এইখানে বলব না আগেই বলেছি৷ শুধু বলি সব শেষে কি হয়৷ খুব অবাক করে দেওয়া কিছু হয় না৷ যা এখনও হচ্ছে, তারি একটা যৌক্তিক পরিণতি ঘটে৷ আমেরিকান পুলিশ এবং রাষ্ট্র নিজেদের হাতে আরও ক্ষমতা তুলে নেয়৷ প্যাট্রিয়ট অ্যাক্টের নতুন সংস্করণ বের হয় এবং প্যাট্রিয়ট অ্যাক্ট পার্মানেন্ট আইনে পরিণত হয়৷ ডিক চেনি প্রেসিডেন্টের পদ গ্রহণ করেন৷ আমেরিকা বিদেশী রাষ্টের্র মদত খুঁজে ফেরে৷ কোন রাষ্ট সেটা সিনেমাতেই দেখুন৷"
পুরো সিনেমা দেখতে চাইলে চলে যান গুগুল ভিডিওতে।
ধাঁধাঁ, মজা, হেঁয়ালি...
কিছুদিন আগে কেউ ইমেলে একটা ধাঁধাঁ পাঠিয়েছিলো - হ্যাকার পাজল - হ্যাকারদের মতন করে চিন্তা করতে হবে। বেশ মজা লেগেছিলো, একটু ভেবেচিন্তে শেষও করে ফেলেছিলুম। এবার আরেকটা পেয়েছি - নিউট্রাল রিডল - আরও কঠিন। সত্তরটা লেভেল আছে, এক লেভেল থেকে অন্য লেভেলে যেতে হলে ব্রাউজারে এইচ টি এম এল পাতার সোর্সটা দেখে ক্লু খুঁজতে হবে। খেলতে হলে লাগবে ব্রাউজার, ইন্টারনেট কানেকশান, গিম্প বা ফোটোশপ জাতীয় ফোটো-এডিটিং সফটওয়্যার, কখনো এক্সিফ-রিডার (exif-reader), এবং একটু ধৈর্য। লেগে পড়ুন। অল দ্য বেস্ট।
আমি আটকে একচল্লিশে।
আমি আটকে একচল্লিশে।
Monday, October 02, 2006
আমার পুজো, ঋকের পুজো
গুরুচণ্ডা৯ থেকে একটা লেখা -
"শেষ কবে কলকাতার পুজো দেখেছি? বছর কুড়ি আগে বোধহয়৷ পুজো দেখার গপ্পো সকলে জানে, আর সকলের মতনই ছোটবেলায় কলকাতার রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো, মণ্ডপে যাওয়া - পারোলিনের পুজোর সঙ্গে আমার ছোটবেলার পুজোর কোন তফাৎ প্রায় নেই-ই৷ আরো পরে পুজো আর টানতো না - ভিড়, শব্দ, আলো থেকে দূরে নিজের দশ ফুট বাই দশ ফুটের রাজ্যে একটা বই, বা বেহালা, বা টেপরেকর্ডার - এই নিয়ে সময় কাটতো৷ লাল চশমা পরা আমি পুজো থেকে দূরে থাকতেই পছন্দ করতুম৷ রাস্তায় যেতে-আসতে যেটুকু চোখে পড়ে সেটুকু ছাড়া বাকিটা পুজো না-দেখা বললেই চলে৷ তারপর শুরু যাযাবরের জীবন, এঘাট সেঘাটের জল খাওয়া, লাল চশমার ওপর বাস্তবের প্রলেপ পড়া - তখন পুজোর মানে পুজা-অর্চনা থেকে বদলে হয় নিছক আড্ডা - শুণ্য আর এক, এই দুটো সংখ্যার বাইরে একটা গেট-টুগেদার...
নিউক্যাসলে পুজো হয় - ফেনহ্যামে "হিন্দু মন্দিরে" - একদম দিনক্ষণ-তিথিনক্ষত্র মেনে, আয়োজক "নীবপা" - নর্থ ইস্ট অব ইংল্যাণ্ড বেঙ্গলি পুজা অ্যাসোসিয়েশন৷ বাক্স থেকে বের করে নতুন করে সাজানো মুর্তি নয়, প্রতি বছর কুমোরটুলি থেকে অর্ডার দিয়ে আনানো ছোট্ট মুর্তি৷ গোটা দিন শুণ্য আর এক ঘেঁটে সন্ধ্যেবেলা ফুলবাবুটি (মাইনাস ধুতি) সেজে সপরিবারে আমরা পুজো দেখতে যাই৷ লাল চশমা এখনও আছে, তাই পুজো থেকে একটু দূরে আমরা - আমি, সনাতনদা, জলদিন্দু, অংশুডাক্তার, আরো কয়েকজন৷ ফুলবিবিরাও থাকেন৷ আর কুচোকাঁচাগুলো এখানে সেখানে দৌড়ে বেড়ায়৷ আশেপাশে ইউনিভার্সিটিতে সদ্য ভর্তি হওয়া কিছু বাঙালী অল্পবয়সী ছেলেমেয়ে, কারো বিলিতি বন্ধু ধুতি পরে, কারো বিলিতি বান্ধবী শাড়ি পরে৷ এরা বাস্তববাদি - প্রতি শনি-রবিবার নিয়ম করে মন্দিরে আসে, শুধু দুই দিনের ভক্তিরসে সিক্ত হয়ে - রান্নার মেহনতটা বেঁচে যায় আরকি৷ দোতলায় নবরাত্রির গরবা হয়, সেখানে প্রচুর ভিড় - ইউনিভারসিটি ছাত্র-ছাত্রীদের৷ সেই ভিড়ে চোখে-চোখে কিছু কথার খেলাও চলে - ইশারা খেটে গেলে টুক করে সটকে আশেপাশের কোন পাবে চলে যাওয়া৷ আলাদা ভিড় পাকাপাকি থেকে যাওয়া লোকেদের - অধিকাংশই ডাক্তার - তাঁদের কাছে আমাদের ওজন নেই, অন্য ডাক্তারদের ওজন থাকলেও সেটা বাড়ে কমে কত বছর ধরে এখানকার বাসিন্দা তার ওপর - সাময়িক হলে আমাদের মতনই ওজনহীন৷
দোতলা থেকে কেউ একটা ঢোল নিয়ে আসেন - আমরা তারস্বরে গান ধরি৷ ওদিকে "শরণ্যে ত্রম্বকে গৌরী" চলে, এদিকে জন হেনরী, পল রোবসন থেকে আমায় ডুবাইলি রে৷ একজন দুজন ধার্মিক ওই পাকাপাকি থেকে যাওয়াদের ভীড় থেকে এদিকে একটু কটমট করে তাকালেও অঞ্জলির দিক থেকে ভিড় ক্রমশ পাতলা হয়ে এদিকে সরে আসে৷ "মনের কথা হয়না বলা, বলতে লাগে ভয়, গলায় দড়ি দিয়ে গিন্নী ডুবে মরতে কয়" শুনে বিবিরা খিলখিল করে হেসে ওঠে...সন্ধ্যে থেকে রাত হয়, অনভ্যাসে গলা ভাঙতে থাকে, ঢোল পিটিয়ে হাতে টান ধরতে থাকে, তবু চলে মেহফিল...আর অপেক্ষা...কয়েকজন নজর রাখেন খাবার ঘরের দিকে - টেবিলে বড় গামলাগুলো চড়লেই সেখানে লাইন লেগে যায়৷
এর পর একটা কোথাও বিজয়ার গেট টুগেদারের কথা প্ল্যান করে যে যার বাড়ির দিকে রওনা দিই৷ রাতে ঘুমনোর সময় ঋককে দুর্গার গল্প বলি - গণেশ আর সিংহ তার সবচেয়ে প্রিয়৷ পরের দিন কতগুলো এক আর শুণ্য ঘাঁটতে হবে সে কথা ভাবতে ভাবতে ঘুমনোর চেষ্টা করি৷
সুর্মা আমিন৷
কোথায় কাশফুলের রোমান্টিকতা? কোথায় ঢাকের বাজনা? দশমীর দধিকর্মা? লাইন দিয়ে মহম্মদ আলি পার্কের প্যাণ্ডেল দেখতে যাওয়া, বা কলেজ স্কোয়্যারের আলো? বিজয়গড় ভারতমাতার মাঠের অনুষ্ঠান? গড়িয়ায় নবদুর্গা দেখতে গিয়ে দশের মধ্যে দশটা বেলুন ফাটানো? মধ্যতিরিশেই নস্টালজিক আমি বিশ বছর আগের অরবিন্দ পার্কে ফিরে যাই - ঢাকে কাঠি পড়েছে, হাফ প্যান্ট পরে মিতুল দৌড়চ্ছে পুজো প্যাণ্ডেলের দিকে, কোমরে গোঁজা একটা ক্যাপ ফাটানোর রুপোলি পিস্তল, পকেটে রোল ক্যাপের দুটো প্যাকেট...কোথায় যাচ্ছিস, দাঁড়া, দাঁড়া...মিতুল ঘুরে দাঁড়িয়ে এক গাল হাসে, ওর মুখটা আস্তে আস্তে পাল্টায়...দেখি ঋক দাঁড়িয়ে আছে, স্যান্ডিফোর্ডে৷ এখানে সেই পিস্তলগুলো পাওয়া যায় না - ঢাকে কাঠি পড়ে না - সেই পুজোটাকে ঋক চেনেই না..."
গুরুচণ্ডা৯তে পুজো স্পেশ্যালের বাকি লেখাগুলো পাবেন এখানে।
"শেষ কবে কলকাতার পুজো দেখেছি? বছর কুড়ি আগে বোধহয়৷ পুজো দেখার গপ্পো সকলে জানে, আর সকলের মতনই ছোটবেলায় কলকাতার রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো, মণ্ডপে যাওয়া - পারোলিনের পুজোর সঙ্গে আমার ছোটবেলার পুজোর কোন তফাৎ প্রায় নেই-ই৷ আরো পরে পুজো আর টানতো না - ভিড়, শব্দ, আলো থেকে দূরে নিজের দশ ফুট বাই দশ ফুটের রাজ্যে একটা বই, বা বেহালা, বা টেপরেকর্ডার - এই নিয়ে সময় কাটতো৷ লাল চশমা পরা আমি পুজো থেকে দূরে থাকতেই পছন্দ করতুম৷ রাস্তায় যেতে-আসতে যেটুকু চোখে পড়ে সেটুকু ছাড়া বাকিটা পুজো না-দেখা বললেই চলে৷ তারপর শুরু যাযাবরের জীবন, এঘাট সেঘাটের জল খাওয়া, লাল চশমার ওপর বাস্তবের প্রলেপ পড়া - তখন পুজোর মানে পুজা-অর্চনা থেকে বদলে হয় নিছক আড্ডা - শুণ্য আর এক, এই দুটো সংখ্যার বাইরে একটা গেট-টুগেদার...
নিউক্যাসলে পুজো হয় - ফেনহ্যামে "হিন্দু মন্দিরে" - একদম দিনক্ষণ-তিথিনক্ষত্র মেনে, আয়োজক "নীবপা" - নর্থ ইস্ট অব ইংল্যাণ্ড বেঙ্গলি পুজা অ্যাসোসিয়েশন৷ বাক্স থেকে বের করে নতুন করে সাজানো মুর্তি নয়, প্রতি বছর কুমোরটুলি থেকে অর্ডার দিয়ে আনানো ছোট্ট মুর্তি৷ গোটা দিন শুণ্য আর এক ঘেঁটে সন্ধ্যেবেলা ফুলবাবুটি (মাইনাস ধুতি) সেজে সপরিবারে আমরা পুজো দেখতে যাই৷ লাল চশমা এখনও আছে, তাই পুজো থেকে একটু দূরে আমরা - আমি, সনাতনদা, জলদিন্দু, অংশুডাক্তার, আরো কয়েকজন৷ ফুলবিবিরাও থাকেন৷ আর কুচোকাঁচাগুলো এখানে সেখানে দৌড়ে বেড়ায়৷ আশেপাশে ইউনিভার্সিটিতে সদ্য ভর্তি হওয়া কিছু বাঙালী অল্পবয়সী ছেলেমেয়ে, কারো বিলিতি বন্ধু ধুতি পরে, কারো বিলিতি বান্ধবী শাড়ি পরে৷ এরা বাস্তববাদি - প্রতি শনি-রবিবার নিয়ম করে মন্দিরে আসে, শুধু দুই দিনের ভক্তিরসে সিক্ত হয়ে - রান্নার মেহনতটা বেঁচে যায় আরকি৷ দোতলায় নবরাত্রির গরবা হয়, সেখানে প্রচুর ভিড় - ইউনিভারসিটি ছাত্র-ছাত্রীদের৷ সেই ভিড়ে চোখে-চোখে কিছু কথার খেলাও চলে - ইশারা খেটে গেলে টুক করে সটকে আশেপাশের কোন পাবে চলে যাওয়া৷ আলাদা ভিড় পাকাপাকি থেকে যাওয়া লোকেদের - অধিকাংশই ডাক্তার - তাঁদের কাছে আমাদের ওজন নেই, অন্য ডাক্তারদের ওজন থাকলেও সেটা বাড়ে কমে কত বছর ধরে এখানকার বাসিন্দা তার ওপর - সাময়িক হলে আমাদের মতনই ওজনহীন৷
দোতলা থেকে কেউ একটা ঢোল নিয়ে আসেন - আমরা তারস্বরে গান ধরি৷ ওদিকে "শরণ্যে ত্রম্বকে গৌরী" চলে, এদিকে জন হেনরী, পল রোবসন থেকে আমায় ডুবাইলি রে৷ একজন দুজন ধার্মিক ওই পাকাপাকি থেকে যাওয়াদের ভীড় থেকে এদিকে একটু কটমট করে তাকালেও অঞ্জলির দিক থেকে ভিড় ক্রমশ পাতলা হয়ে এদিকে সরে আসে৷ "মনের কথা হয়না বলা, বলতে লাগে ভয়, গলায় দড়ি দিয়ে গিন্নী ডুবে মরতে কয়" শুনে বিবিরা খিলখিল করে হেসে ওঠে...সন্ধ্যে থেকে রাত হয়, অনভ্যাসে গলা ভাঙতে থাকে, ঢোল পিটিয়ে হাতে টান ধরতে থাকে, তবু চলে মেহফিল...আর অপেক্ষা...কয়েকজন নজর রাখেন খাবার ঘরের দিকে - টেবিলে বড় গামলাগুলো চড়লেই সেখানে লাইন লেগে যায়৷
এর পর একটা কোথাও বিজয়ার গেট টুগেদারের কথা প্ল্যান করে যে যার বাড়ির দিকে রওনা দিই৷ রাতে ঘুমনোর সময় ঋককে দুর্গার গল্প বলি - গণেশ আর সিংহ তার সবচেয়ে প্রিয়৷ পরের দিন কতগুলো এক আর শুণ্য ঘাঁটতে হবে সে কথা ভাবতে ভাবতে ঘুমনোর চেষ্টা করি৷
সুর্মা আমিন৷
কোথায় কাশফুলের রোমান্টিকতা? কোথায় ঢাকের বাজনা? দশমীর দধিকর্মা? লাইন দিয়ে মহম্মদ আলি পার্কের প্যাণ্ডেল দেখতে যাওয়া, বা কলেজ স্কোয়্যারের আলো? বিজয়গড় ভারতমাতার মাঠের অনুষ্ঠান? গড়িয়ায় নবদুর্গা দেখতে গিয়ে দশের মধ্যে দশটা বেলুন ফাটানো? মধ্যতিরিশেই নস্টালজিক আমি বিশ বছর আগের অরবিন্দ পার্কে ফিরে যাই - ঢাকে কাঠি পড়েছে, হাফ প্যান্ট পরে মিতুল দৌড়চ্ছে পুজো প্যাণ্ডেলের দিকে, কোমরে গোঁজা একটা ক্যাপ ফাটানোর রুপোলি পিস্তল, পকেটে রোল ক্যাপের দুটো প্যাকেট...কোথায় যাচ্ছিস, দাঁড়া, দাঁড়া...মিতুল ঘুরে দাঁড়িয়ে এক গাল হাসে, ওর মুখটা আস্তে আস্তে পাল্টায়...দেখি ঋক দাঁড়িয়ে আছে, স্যান্ডিফোর্ডে৷ এখানে সেই পিস্তলগুলো পাওয়া যায় না - ঢাকে কাঠি পড়ে না - সেই পুজোটাকে ঋক চেনেই না..."
গুরুচণ্ডা৯তে পুজো স্পেশ্যালের বাকি লেখাগুলো পাবেন এখানে।
Monday, September 04, 2006
আপডেট
জার্মানি গেছিলুম, একটা কনফারেন্সে। সঙ্গে ছিলো ল্যাপটপ, এবং সেটি অ্যাপল, এবং অ্যাপলে বাংলা ইউনিকোড ঠিকমতন দেখা যায় না - সুতরাং বাংলা ব্লগ দেখাও হয়নি, লেখাও নয়। এর মাঝে শুনলুম "ব্লগ দিবস" ছিলো...দেরী করে হলেও, পাঁচটা প্রিয় ব্লগ (কোন অর্ডারে নয়) -
পুষ্প, বৃক্ষ এবং বিহঙ্গ পুরাণ
একটি বাংলা ব্লগকথা
কারুবাসনা
সাভাসের ওয়েবলগ (টেকনিক্যাল ব্লগ)
বিবর্ণ আকাশ এবং আমি
ড্রেসডেন নিয়ে পরে লিখবো, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটিশ বোমারু বিমান কিভাবে ড্রেসডেনকে গুঁড়িয়ে দিয়েছিলো তাই নিয়ে। আপাততঃ ব্যাকলগ ক্লিয়ার করি। গুরুচণ্ডা৯-তে তিনটি নতুন লেখা -
মাঙ্গুলি নাহাকের মৃত্যু
দ্য সিল্ক রোড - স্বেন হেদিন
বঙ্গীয় বারোমাস্যা - দ্যাখ কেমন লাগে
১৮ই সেপ্টেম্বর, ২০০৬ - জানি অনেকদিন আপডেট হচ্ছে না, হাতে একদম সময় নেই। অনেক গল্প বলার আছে - ড্রেসডেনের, ড্রাগন বোট রেসের গল্প...দেখি, সময় পেলে লিখবো। ম্যাক থেকে লিখতে পারলে সুবিধা হত, কিন্তু ইউনিকোড ঠিকমতন আসে না যে...
পুষ্প, বৃক্ষ এবং বিহঙ্গ পুরাণ
একটি বাংলা ব্লগকথা
কারুবাসনা
সাভাসের ওয়েবলগ (টেকনিক্যাল ব্লগ)
বিবর্ণ আকাশ এবং আমি
ড্রেসডেন নিয়ে পরে লিখবো, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটিশ বোমারু বিমান কিভাবে ড্রেসডেনকে গুঁড়িয়ে দিয়েছিলো তাই নিয়ে। আপাততঃ ব্যাকলগ ক্লিয়ার করি। গুরুচণ্ডা৯-তে তিনটি নতুন লেখা -
মাঙ্গুলি নাহাকের মৃত্যু
দ্য সিল্ক রোড - স্বেন হেদিন
বঙ্গীয় বারোমাস্যা - দ্যাখ কেমন লাগে
১৮ই সেপ্টেম্বর, ২০০৬ - জানি অনেকদিন আপডেট হচ্ছে না, হাতে একদম সময় নেই। অনেক গল্প বলার আছে - ড্রেসডেনের, ড্রাগন বোট রেসের গল্প...দেখি, সময় পেলে লিখবো। ম্যাক থেকে লিখতে পারলে সুবিধা হত, কিন্তু ইউনিকোড ঠিকমতন আসে না যে...
Tuesday, August 22, 2006
পাগলা সানাই...
হাত পেতে নিয়ে চেটেপুটে খাই
বিসমিল্লার পাগলা সানাই,
হাত পেতে নিয়ে চেটেপুটে খাই
স্মৃতিবিজড়িত পাগলা সানাই...
চলে গেলেন সানাইয়ের একছত্র বাদশা - উস্তাদ বিসমিল্লা খান। পাগলা সানাই কিন্তু রয়ে যাবে আমাদের সকলের মধ্যে...যাবেই।
বিসমিল্লার পাগলা সানাই,
হাত পেতে নিয়ে চেটেপুটে খাই
স্মৃতিবিজড়িত পাগলা সানাই...
চলে গেলেন সানাইয়ের একছত্র বাদশা - উস্তাদ বিসমিল্লা খান। পাগলা সানাই কিন্তু রয়ে যাবে আমাদের সকলের মধ্যে...যাবেই।
Monday, August 21, 2006
গান যখন আচ্ছন্ন করে...
এক বন্ধু কিছুদিন আগে একটা গান পাঠিয়েছিলো, জোন বায়েজের "ডায়মণ্ডস অ্যাণ্ড রাস্ট"। সেদিন আরেকটা লিংক পেলাম, সেই ডায়মণ্ডস অ্যাণ্ড রাস্ট-এরই ভিডিও। এই ভিডিওটা যেন জাদু করলো - জাদু ছাড়া আর কিছু বলা যায় না একে - গত তিন-চার দিন ধরে আমি শুধুই জোন বায়েজ শুনছি, শুনছিই। চোখ বন্ধ করলে গীটার হাতে বায়েজের ছবি চোখে ভাসছে যেখানে তিনি গাইছেন -
"Now you're telling me
You're not nostalgic
Then give me another word for it
You who are so good with words
And at keeping things vague
Because I need some of that vagueness now
It's all come back too clearly
Yes I loved you dearly
And if you're offering me diamonds and rust
I've already paid"
গানটা বায়েজ লিখেছিলেন ডিলানকে নিয়ে, ডিলান যখন বায়েজকে এড়িয়ে চলতে শুরু করেন তখন বায়েজ বলেছিলেন - "I was heartbroken" - সেটা যে কত গভীর, তা বায়েজের গানটা শুনলে প্রতি লাইনে বোঝা যায়।
বায়েজের প্রতিটা গানই দুর্দান্ত - ওঁর গলার স্বরে একটা অদ্ভুত কিছু রয়েছে যেটা মনের মধ্যে গেঁথে যায়। আরেকটা গানের কথা না বললে বায়েজের গান সম্পর্কে লেখা পুরো হবে না - "Song of Bangladesh" - ১৯৭১ সালের পয়লা আগস্টের "Concert for Bangladesh" নিয়ে আমার এক বন্ধু/ভাই লিখেছে তার ব্লগে, ওকে পাঠিয়েছিলাম বাংলাদেশ নিয়ে বায়েজের এই গানটা...
"Bangladesh, Bangladesh
Bangladesh, Bangladesh
When the sun sinks in the west
Die a million people of the Bangladesh
আজ পঁয়ত্রিশ বছর পরেও ঘটনাগুলো রয়েই গেছে, দেশের নাম বদলে যায়, আক্রমণকারীর পরিচয় বদলে যায় - ঘটনাগুলো একই রয়ে যায়। তাই "Song of Bangladesh" কখনো পুরনো হয় না। বায়েজও তাঁর জায়গায় থেকে যান - ওয়াশিংটন স্কোয়্যারের ভিড়ে যুদ্ধবিরোধী মানুষগুলোর কন্ঠে, আরো অনেক প্রতিবাদী গায়ক-গায়িকার সাথে...
এবং আমাকে এই মুহুর্তে দিওয়ানা - ফিদা - পাগল - যা খুশী বলতে পারেন, একটুও তর্ক করবো না, বায়েজে আমি এতটাই আচ্ছন্ন।
"Now you're telling me
You're not nostalgic
Then give me another word for it
You who are so good with words
And at keeping things vague
Because I need some of that vagueness now
It's all come back too clearly
Yes I loved you dearly
And if you're offering me diamonds and rust
I've already paid"
গানটা বায়েজ লিখেছিলেন ডিলানকে নিয়ে, ডিলান যখন বায়েজকে এড়িয়ে চলতে শুরু করেন তখন বায়েজ বলেছিলেন - "I was heartbroken" - সেটা যে কত গভীর, তা বায়েজের গানটা শুনলে প্রতি লাইনে বোঝা যায়।
বায়েজের প্রতিটা গানই দুর্দান্ত - ওঁর গলার স্বরে একটা অদ্ভুত কিছু রয়েছে যেটা মনের মধ্যে গেঁথে যায়। আরেকটা গানের কথা না বললে বায়েজের গান সম্পর্কে লেখা পুরো হবে না - "Song of Bangladesh" - ১৯৭১ সালের পয়লা আগস্টের "Concert for Bangladesh" নিয়ে আমার এক বন্ধু/ভাই লিখেছে তার ব্লগে, ওকে পাঠিয়েছিলাম বাংলাদেশ নিয়ে বায়েজের এই গানটা...
"Bangladesh, Bangladesh
Bangladesh, Bangladesh
When the sun sinks in the west
Die a million people of the Bangladesh
The story of Bangladesh
Is an ancient one again made fresh
By blind men who carry out commmands
Which flow out of the laws upon which nation stands
Which is to sacrifice a people for a land
Bangladesh, Bangladesh
Bangladesh, Bangladesh
When the sun sinks in the west
Die a million people of the Bangladesh
Once again we stand aside
And watch the families crucified
See a teenage mother's vacant eyes
As she watches her feeble baby try
To fight the monsoon rains and the cholera flies
And the students at the university
Asleep at night quite peacefully
The soldiers came and shot them in their beds
And terror took the dorm awakening shrieks of dread
And silent frozen forms and pillows drenched in red
Bangladesh, Bangladesh
Bangladesh, Bangladesh
When the sun sinks in the west
Die a million people of the Bangladesh
Did you read about the army officer's plea
For donor's blood? It was given willingly
By boys who took the needles in their veins
And from their bodies every drop of blood was drained
No time to comprehend and there was little pain
And so the story of Bangladesh
Is an ancient one again made fresh
By all who carry out commands
Which flow out of the laws upon which nations stand
Which say to sacrifice a people for a land
Bangladesh, Bangladesh
Bangladesh, Bangladesh
When the sun sinks in the west
Die a million people of the Bangladesh"
আজ পঁয়ত্রিশ বছর পরেও ঘটনাগুলো রয়েই গেছে, দেশের নাম বদলে যায়, আক্রমণকারীর পরিচয় বদলে যায় - ঘটনাগুলো একই রয়ে যায়। তাই "Song of Bangladesh" কখনো পুরনো হয় না। বায়েজও তাঁর জায়গায় থেকে যান - ওয়াশিংটন স্কোয়্যারের ভিড়ে যুদ্ধবিরোধী মানুষগুলোর কন্ঠে, আরো অনেক প্রতিবাদী গায়ক-গায়িকার সাথে...
এবং আমাকে এই মুহুর্তে দিওয়ানা - ফিদা - পাগল - যা খুশী বলতে পারেন, একটুও তর্ক করবো না, বায়েজে আমি এতটাই আচ্ছন্ন।
Thursday, August 17, 2006
স্বপ্ন দেখতে দেখতে...
গত কয়েক দিনের বড় আলোচ্য বিষয় - এয়ারপোর্ট সিকিউরিটি। জল নেওয়া যাবে না, টুথপেস্ট নৈব নৈব চ, বাচ্চার দুধও চেখে দেখাতে হবে, বই-খবরের কাগজ-ল্যাপটপ ভুলে যান ...ইউনিভার্সিটির কফি রুমে এক ডাচ বন্ধু বললো - সব যাত্রীদের ঘুম পাড়িয়ে দিলেই পারে...
আইডিয়াটা মন্দ নয় - বাড়ি যেতে হলে দশ ঘন্টা প্লেনে কাটাতে হয়, অসহ্য। ঘুম পাড়ানি ইঞ্জেকশন নিতে আমি অন্ততঃ খুব রাজি। তার সঙ্গে "কাস্টমাইজড স্বপ্ন" - ঘুমোতে ঘুমোতে স্বপ্ন দেখবেন হাওয়াইয়ের সমুদ্রতটে বসে আছেন, বা এভারেস্টের চুড়োয়...স্বপ্ন শেষ হলেই আপনার গন্তব্যস্থল...বাড়ি। মন্দ কি?
আইডিয়াটা মন্দ নয় - বাড়ি যেতে হলে দশ ঘন্টা প্লেনে কাটাতে হয়, অসহ্য। ঘুম পাড়ানি ইঞ্জেকশন নিতে আমি অন্ততঃ খুব রাজি। তার সঙ্গে "কাস্টমাইজড স্বপ্ন" - ঘুমোতে ঘুমোতে স্বপ্ন দেখবেন হাওয়াইয়ের সমুদ্রতটে বসে আছেন, বা এভারেস্টের চুড়োয়...স্বপ্ন শেষ হলেই আপনার গন্তব্যস্থল...বাড়ি। মন্দ কি?
Wednesday, August 16, 2006
আবাপ দেখতে পাচ্ছি না...
আনন্দবাজার পড়তে পারছি না। হঠাৎ করে আনন্দবাজার ডট কম থেকে ডট ইন হয়ে গেছে, আর সম্ভবত নতুন স্পেসে ওদের ফন্ট ফাইলগুলো রাখেনি...মানে শুধু আমি নয়, দুনিয়ার সক্কলের (যারা ইন্টারনেটে খবর পড়েন) এক হাল। আবাপ কি খবর রাখে? যতই গালাগাল দিই, আনন্দবাজার না পড়লে সকাল হয় না...
প্রসঙ্গতঃ, ইউনিকোড নিয়ে এই লেখাটা ভালো লাগলো, এই নিয়ে একসাথে এগোনো খুব জরুরী।
প্রসঙ্গতঃ, ইউনিকোড নিয়ে এই লেখাটা ভালো লাগলো, এই নিয়ে একসাথে এগোনো খুব জরুরী।
Tuesday, August 15, 2006
রাজনীতির শিকার না অরাজনীতির?
সৌমিক মারা গেলো, বি ই কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র...দুই দল ছাত্রের মধ্যে কথা কাটাকাটি থেকে সংঘর্ষ, সেখান থেকে...
জনতার আদালতে, আনন্দবাজারের বিচারে দোষী হল "ছাত্র রাজনীতি"...এই পোস্টটা সেই নিয়েই। সৌমিকের মৃত্যু নিঃসন্দেহে দুঃখজনক, কিন্তু দোষী কি রাজনীতি, না কিছু আহাম্মক যারা রাজনীতিতে ঢুকে বসে থাকে? দিন দুয়েক আগে টাইমস অব ইন্ডিয়া মতামত জানতে চেয়েছিলো, খুব স্বাভাবিকভাবেই যা বলেছি তার ৮০% গায়েব...
প্রথমে একটা কথা আছে আবাপ-র বক্তব্য নিয়ে - "বাইরের সক্রিয় রাজনৈতিক সহায়তায় ভিতরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা থাকে" - একেবারে গপ্পোকথা৷ আমাদের সঙ্গে এস এফ আই জেলা বা রাজ্য কমিটির যোগাযোগ ছিলো ঠিকই, এবং থাকাই স্বাভাবিক, কিন্তু বি ই কলেজের আভ্যন্তরীন ইস্যুতে আমরা কখনো কাউকে নাক গলাতে দিই নি৷ জেলায় যদি ছাত্র ধর্মঘটের ডাক থাকতো, তার প্রচার আমরা নিজেরা করতাম, কলেজের ভিতরে বাইরে থেকে এস এফ আই কমরেডরা এসে কাজ করতো না - এই ব্যাপারে আমাদের ক্লিয়ার আন্ডারস্ট্যান্ডিং ছিলো - হ্যাঁ, বিভিন্ন লেভেলে মীটিং হয়েছে, কখনো আমাদের ঘরেই, কিন্তু ওই অবধিই৷ কাজেই বাইরে থেকে অন্য কর্মীরা এসে ভোটের সময় গণ্ডগোল করতো - এটা রীতিমতন কষ্টকল্পনা৷ বরং ভোট বা ছাত্র পরিষদের ধর্মঘটের সময় অম্বিকা ব্যানার্জীকে কলেজে ছাত্র পরিষদের বেঞ্চিতে বসে থাকতে দেখেছি৷
অবশ্য বাইরের সাধারণ লোকজনের সঙ্গে বি ই কলেজের ছাত্রদের সম্পর্ক কোনকালেই স্বাভাবিক ছিলো না৷ অনেক ক্ষেত্রেই "আমি কি হনু" ভাব দেখাতে গিয়ে এক শ্রেণীর ছাত্র একটা বাজে ধারণা তৈরী করতো৷
তবে, নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি অবধি কলেজের অবস্থা অনেক সুস্থ ছিলো, কারণ চেষ্টা করা হত একটা সুস্থ রাজনৈতিক পরিস্থিতি রাখার৷ তখন কলেজে ছাত্র ফেডারেশন ছাড়াও ছিলো ছাত্র পরিষদ এবং নকশালপন্থী পি এস এ - স্ট্রাইক-টাইকের সময় কলেজ গেটে গণ্ডগোল হয়নি তা নয় - কিন্তু হকি-স্টিক, রড, চেন - না:, সে অবস্থায় পৌঁছত না৷ একবারই বড় গণ্ডগোল হয়েছিলো - কিছু বিশেষ ছাত্র কয়েকজন কর্মচারী এবং, ডেপুটি রেজিস্ট্রারের গায়ে হাত তোলার পরে - সেই গণ্ডগোলটা এতটাই ছড়িয়েছিলো যে আশে পাশের মানুষজন জড়িয়ে পড়েছিলো৷ কিছুদিনের জন্যে হোস্টেল খালি করে দিতে হয় - আমরা তখন ফার্স্ট ইয়ার, সম্ভবত ৯২ সালের শুরুর কথা - তবে সেই কয়েকজন ছাত্র ক্ষমা চেয়ে নেয়, শাস্তিও হয়, এই ঘটনা ওখানেই শেষ হয়ে গেছিলো৷
তবে এখনকার মতন ঘটনা - ছাত্রদের মধ্যে এরকম মারামারি - আমাদের কাছে নতুন৷ এই ট্রেন্ডটা দেখছি নব্বইয়ের দশকের শেষের দিক থেকে৷ মানে যে সময় থেকে কলেজে রাজনীতির ট্রেন্ড কমতে থাকে৷ নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝিই তত্কালীন ভিসি - স্পর্শমণি চট্টোপাধ্যায়, এবং রেজিস্ট্রার - এন উপাধ্যায় - রাজনৈতিক কাজের ওপর নানারকম নিষেধাজ্ঞা জারি করতে শুরু করেন - টি এন শেষন স্টাইলে, বা এবারের বিধানসভা নির্বাচন স্টাইলে৷ এর আগে থেকেই ছাত্র পরিষদ একটা "অরাজনৈতিক" ভাব বজায় রাখতো - অরাজনীতির রাজনীতি, যেটাকে আমরা কাউন্টার করার চেষ্টা করতাম৷ কলেজ কতৃপক্ষও সমস্ত রাজনৈতিক কাজের বিরোধিতা করায় এই অরাজনৈতিক ব্যাপারটা হাওয়া পায়, ছাত্র পরিষদ পাল্টে এখনকার ইন্ডিপেন্ডেন্ট কনসলিডেশন তৈরী হয় - এদের তো নিজেদের মধ্যেই খেয়োখেয়ি আছে...ছাত্র পরিষদের "অরাজনৈতিক" বক্তব্য ছিলো- "কলেজে এসেছিস, ফূর্তি করবি, মস্তি করবি - বাইরে কি হল তাই দিয়ে আমাদের কি দরকার" - আমরা এটাকে ঠেকাতাম৷ এই মস্তি/ফূর্তি কালচার কিন্তু আরো অনেক কিছু টেনে এনেছিলো - মদ, ব্লু ফিল্ম, কোরেক্স...আমরা হোস্টেলে প্রয়োজনে জোর করে ব্লু ফিল্ম আটকেছি, এই কালচার ঠেকানোর চেষ্টা করেছি পলিটিক্যালি৷ মুশকিল হল এই কালচারের বিরুদ্ধে লড়াই না থাকলে, এই কালচার ছেয়ে যায়...এবং সেটাই সম্ভবতঃ হয়েছিলো, সম্ভবত এখনও রয়ে গেছে৷
এছাড়া অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের প্রশ্ন আছে - আমার ব্যক্তিগত (এবং সম্ভবত অনেকের ব্যক্তিগত) ধারণায় স্পর্শমণি চট্টোপাধ্যায় অত্যন্ত বাজে অ্যাডমিনিস্ট্রেটর ছিলেন - যত নামকরা অ্যাকাডেমিকই হয়ে থাকুন না কেন৷ ওঁর আগে ড: বিমল সেনের একটা অসাধারণ পার্সোনালিটি ছিলো, যার জন্যে তিনি অনেক শ্রদ্ধা আদায় করে নিতেন৷ ড: সেনের সাথে মুখোমুখি প্রচণ্ড তর্ক হয়েছে, উনি একবার আমাকে সকলের সামনে বলেছিলেন "তুমি কি করে কলেজ থেকে বেরোও দেখবো" - কিন্তু ওঁর ওপর থেকে শ্রদ্ধা কমেনি - উনি আমাদেরও কিন্তু সমান রেসপেক্ট দিতেন৷ এই ব্যাপারটা পরের দিকে কমে এসেছিলো বলে মনে হয়৷
আরো একটা ব্যাপার আমার মনে হয় এখানে কাজ করেছে - আমাদের সময়ে ফার্স্ট/সেকেণ্ড/থার্ড ইয়ার - সব একই হোস্টেলে থাকতো - ফলে মেলামেশা অনেক বেশি ছিলো৷ এর খারাপ দিকও ছিলো - নির্বিচারে ragging, এর জন্যেই ৯৪-৯৫ সালে হোস্টেল আলাদা করে দেওয়া হয়৷ ছাত্র পরিষদ এর তুমুল বিরোধিতা করে, ছাত্রদের অধিকাংশও - বেশ কিছুদিন অনশন হয়েছিলো৷ এস এফ আই নীতিগত কারণে হোস্টেল আলাদা করে দেওয়াকে সমর্থন করেছিলো৷ আমার মাঝে মাঝে মনে হয় ওই আলাদা করে দেওয়াতে এক হোস্টেলে থাকার মতন মেলামেশা যে বন্ধ হয়ে গেছিলো, সেটাই এখনকার এই গোলমেলে অ্যাটিচিউডের একটা কারণ নয়তো? এখন অধিকাংশ গণ্ডগোল কিন্তু এক হোস্টেল বনাম আর এক হোস্টেল, অর্থাৎ, এক ইয়ার বনাম আরেক ইয়ার...
জনতার আদালতে, আনন্দবাজারের বিচারে দোষী হল "ছাত্র রাজনীতি"...এই পোস্টটা সেই নিয়েই। সৌমিকের মৃত্যু নিঃসন্দেহে দুঃখজনক, কিন্তু দোষী কি রাজনীতি, না কিছু আহাম্মক যারা রাজনীতিতে ঢুকে বসে থাকে? দিন দুয়েক আগে টাইমস অব ইন্ডিয়া মতামত জানতে চেয়েছিলো, খুব স্বাভাবিকভাবেই যা বলেছি তার ৮০% গায়েব...
প্রথমে একটা কথা আছে আবাপ-র বক্তব্য নিয়ে - "বাইরের সক্রিয় রাজনৈতিক সহায়তায় ভিতরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা থাকে" - একেবারে গপ্পোকথা৷ আমাদের সঙ্গে এস এফ আই জেলা বা রাজ্য কমিটির যোগাযোগ ছিলো ঠিকই, এবং থাকাই স্বাভাবিক, কিন্তু বি ই কলেজের আভ্যন্তরীন ইস্যুতে আমরা কখনো কাউকে নাক গলাতে দিই নি৷ জেলায় যদি ছাত্র ধর্মঘটের ডাক থাকতো, তার প্রচার আমরা নিজেরা করতাম, কলেজের ভিতরে বাইরে থেকে এস এফ আই কমরেডরা এসে কাজ করতো না - এই ব্যাপারে আমাদের ক্লিয়ার আন্ডারস্ট্যান্ডিং ছিলো - হ্যাঁ, বিভিন্ন লেভেলে মীটিং হয়েছে, কখনো আমাদের ঘরেই, কিন্তু ওই অবধিই৷ কাজেই বাইরে থেকে অন্য কর্মীরা এসে ভোটের সময় গণ্ডগোল করতো - এটা রীতিমতন কষ্টকল্পনা৷ বরং ভোট বা ছাত্র পরিষদের ধর্মঘটের সময় অম্বিকা ব্যানার্জীকে কলেজে ছাত্র পরিষদের বেঞ্চিতে বসে থাকতে দেখেছি৷
অবশ্য বাইরের সাধারণ লোকজনের সঙ্গে বি ই কলেজের ছাত্রদের সম্পর্ক কোনকালেই স্বাভাবিক ছিলো না৷ অনেক ক্ষেত্রেই "আমি কি হনু" ভাব দেখাতে গিয়ে এক শ্রেণীর ছাত্র একটা বাজে ধারণা তৈরী করতো৷
তবে, নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি অবধি কলেজের অবস্থা অনেক সুস্থ ছিলো, কারণ চেষ্টা করা হত একটা সুস্থ রাজনৈতিক পরিস্থিতি রাখার৷ তখন কলেজে ছাত্র ফেডারেশন ছাড়াও ছিলো ছাত্র পরিষদ এবং নকশালপন্থী পি এস এ - স্ট্রাইক-টাইকের সময় কলেজ গেটে গণ্ডগোল হয়নি তা নয় - কিন্তু হকি-স্টিক, রড, চেন - না:, সে অবস্থায় পৌঁছত না৷ একবারই বড় গণ্ডগোল হয়েছিলো - কিছু বিশেষ ছাত্র কয়েকজন কর্মচারী এবং, ডেপুটি রেজিস্ট্রারের গায়ে হাত তোলার পরে - সেই গণ্ডগোলটা এতটাই ছড়িয়েছিলো যে আশে পাশের মানুষজন জড়িয়ে পড়েছিলো৷ কিছুদিনের জন্যে হোস্টেল খালি করে দিতে হয় - আমরা তখন ফার্স্ট ইয়ার, সম্ভবত ৯২ সালের শুরুর কথা - তবে সেই কয়েকজন ছাত্র ক্ষমা চেয়ে নেয়, শাস্তিও হয়, এই ঘটনা ওখানেই শেষ হয়ে গেছিলো৷
তবে এখনকার মতন ঘটনা - ছাত্রদের মধ্যে এরকম মারামারি - আমাদের কাছে নতুন৷ এই ট্রেন্ডটা দেখছি নব্বইয়ের দশকের শেষের দিক থেকে৷ মানে যে সময় থেকে কলেজে রাজনীতির ট্রেন্ড কমতে থাকে৷ নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝিই তত্কালীন ভিসি - স্পর্শমণি চট্টোপাধ্যায়, এবং রেজিস্ট্রার - এন উপাধ্যায় - রাজনৈতিক কাজের ওপর নানারকম নিষেধাজ্ঞা জারি করতে শুরু করেন - টি এন শেষন স্টাইলে, বা এবারের বিধানসভা নির্বাচন স্টাইলে৷ এর আগে থেকেই ছাত্র পরিষদ একটা "অরাজনৈতিক" ভাব বজায় রাখতো - অরাজনীতির রাজনীতি, যেটাকে আমরা কাউন্টার করার চেষ্টা করতাম৷ কলেজ কতৃপক্ষও সমস্ত রাজনৈতিক কাজের বিরোধিতা করায় এই অরাজনৈতিক ব্যাপারটা হাওয়া পায়, ছাত্র পরিষদ পাল্টে এখনকার ইন্ডিপেন্ডেন্ট কনসলিডেশন তৈরী হয় - এদের তো নিজেদের মধ্যেই খেয়োখেয়ি আছে...ছাত্র পরিষদের "অরাজনৈতিক" বক্তব্য ছিলো- "কলেজে এসেছিস, ফূর্তি করবি, মস্তি করবি - বাইরে কি হল তাই দিয়ে আমাদের কি দরকার" - আমরা এটাকে ঠেকাতাম৷ এই মস্তি/ফূর্তি কালচার কিন্তু আরো অনেক কিছু টেনে এনেছিলো - মদ, ব্লু ফিল্ম, কোরেক্স...আমরা হোস্টেলে প্রয়োজনে জোর করে ব্লু ফিল্ম আটকেছি, এই কালচার ঠেকানোর চেষ্টা করেছি পলিটিক্যালি৷ মুশকিল হল এই কালচারের বিরুদ্ধে লড়াই না থাকলে, এই কালচার ছেয়ে যায়...এবং সেটাই সম্ভবতঃ হয়েছিলো, সম্ভবত এখনও রয়ে গেছে৷
এছাড়া অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের প্রশ্ন আছে - আমার ব্যক্তিগত (এবং সম্ভবত অনেকের ব্যক্তিগত) ধারণায় স্পর্শমণি চট্টোপাধ্যায় অত্যন্ত বাজে অ্যাডমিনিস্ট্রেটর ছিলেন - যত নামকরা অ্যাকাডেমিকই হয়ে থাকুন না কেন৷ ওঁর আগে ড: বিমল সেনের একটা অসাধারণ পার্সোনালিটি ছিলো, যার জন্যে তিনি অনেক শ্রদ্ধা আদায় করে নিতেন৷ ড: সেনের সাথে মুখোমুখি প্রচণ্ড তর্ক হয়েছে, উনি একবার আমাকে সকলের সামনে বলেছিলেন "তুমি কি করে কলেজ থেকে বেরোও দেখবো" - কিন্তু ওঁর ওপর থেকে শ্রদ্ধা কমেনি - উনি আমাদেরও কিন্তু সমান রেসপেক্ট দিতেন৷ এই ব্যাপারটা পরের দিকে কমে এসেছিলো বলে মনে হয়৷
আরো একটা ব্যাপার আমার মনে হয় এখানে কাজ করেছে - আমাদের সময়ে ফার্স্ট/সেকেণ্ড/থার্ড ইয়ার - সব একই হোস্টেলে থাকতো - ফলে মেলামেশা অনেক বেশি ছিলো৷ এর খারাপ দিকও ছিলো - নির্বিচারে ragging, এর জন্যেই ৯৪-৯৫ সালে হোস্টেল আলাদা করে দেওয়া হয়৷ ছাত্র পরিষদ এর তুমুল বিরোধিতা করে, ছাত্রদের অধিকাংশও - বেশ কিছুদিন অনশন হয়েছিলো৷ এস এফ আই নীতিগত কারণে হোস্টেল আলাদা করে দেওয়াকে সমর্থন করেছিলো৷ আমার মাঝে মাঝে মনে হয় ওই আলাদা করে দেওয়াতে এক হোস্টেলে থাকার মতন মেলামেশা যে বন্ধ হয়ে গেছিলো, সেটাই এখনকার এই গোলমেলে অ্যাটিচিউডের একটা কারণ নয়তো? এখন অধিকাংশ গণ্ডগোল কিন্তু এক হোস্টেল বনাম আর এক হোস্টেল, অর্থাৎ, এক ইয়ার বনাম আরেক ইয়ার...
আরো একটা পনেরই আগস্ট...
আজ পনেরই আগস্ট। দেশ জুড়ে ধুমধামের মধ্যে মাথায় ঘোরে মৃণাল সামন্তের একটা কবিতা -
"সেদিন যখন জাতীয় পতাকায় মালা
আর গান্ধী-নেহরুর কপালে চন্দনের তিলক আঁকা হচ্ছিল,
কৃষাণী হরিদাসী তার ভগ্নকুটীরের খুঁটি ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে পারেনি,
শতছিন্ন পোশাকে বেরিয়ে পড়েছিল পথে,
স্বাধীনতার পতাকার আড়ালে
সে এক সুখী সমাজ ও জীবন দেখতে পেয়েছিলো৷
রমজান মিঞা, উদ্দাম মেঘনায়
যে দরাজ গলায় গান গেয়ে নৌকা বাইতো,
সে সেদিন জোর করে
তার নৌকোটাকে মাঝনদীতে ডুবিয়ে দিয়েছিলো,
সে জেনেছিলো রোদ-বৃষ্টি-ঝড়কে উপেক্ষা করে
তাকে আর নৌকা ঠেলতে হবে না৷
স্বাধীন হয়ে গেল সবাই, নদী ঝাঁপিয়ে
সেও সেদিন পথের মিছিলে ছুটে এসেছিলো৷
ভুতনাথ মাহাতো, যে রাজপথে রিক্সা চালাতো,
সে সেদিন ভোরে উঠে তার গাড়ি সাজালো,
মালায়, চন্দনে আর পতাকায়৷
পথে বেরলো সে, বড় আনন্দের দিন...
হঠাৎ ভুতনাথ লাফিয়ে উঠলে, চিত্কার করে উঠলো,
বন্দে মাতরম্, বন্দে মাতরম্৷
মেঘনা নদীর সেই মাঝি আজ গান ভুলে গেছে,
উদাস নয়নে সে এখন নদীর ধারে বসে থাকে৷
হরিদাসী এখন গঞ্জের নিষিদ্ধ এলাকায় সন্ধ্যের পরে দাঁড়িয়ে থাকে
একমুঠো অন্নের আশায়৷
ভুতনাথ মাহাতো শহরের ফুটপাথে রাত কাটায়,
নি:স্তব্ধ রাত্রে তার কাশির শব্দ শোনা যায়৷
অথচ, ঠিক তেমনি করে সেদিনের মতো আজও
হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ টাকায় ব্যয় করে
স্বাধীনতাদিবস পালিত হয়,
লালকেল্লার দুর্গ থেকে ভাষণ প্রতি ঘরে ঘরে শোনা যায়,
হরিদাসী, রমজান মিঞা, ভুতনাথ মাহাতো
চিত্কার করে বলে ওঠে -
স্বাধীনতা, তুমি কার?
স্বাধীনতা, তুমি কিসের জন্যে?"
"সেদিন যখন জাতীয় পতাকায় মালা
আর গান্ধী-নেহরুর কপালে চন্দনের তিলক আঁকা হচ্ছিল,
কৃষাণী হরিদাসী তার ভগ্নকুটীরের খুঁটি ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে পারেনি,
শতছিন্ন পোশাকে বেরিয়ে পড়েছিল পথে,
স্বাধীনতার পতাকার আড়ালে
সে এক সুখী সমাজ ও জীবন দেখতে পেয়েছিলো৷
রমজান মিঞা, উদ্দাম মেঘনায়
যে দরাজ গলায় গান গেয়ে নৌকা বাইতো,
সে সেদিন জোর করে
তার নৌকোটাকে মাঝনদীতে ডুবিয়ে দিয়েছিলো,
সে জেনেছিলো রোদ-বৃষ্টি-ঝড়কে উপেক্ষা করে
তাকে আর নৌকা ঠেলতে হবে না৷
স্বাধীন হয়ে গেল সবাই, নদী ঝাঁপিয়ে
সেও সেদিন পথের মিছিলে ছুটে এসেছিলো৷
ভুতনাথ মাহাতো, যে রাজপথে রিক্সা চালাতো,
সে সেদিন ভোরে উঠে তার গাড়ি সাজালো,
মালায়, চন্দনে আর পতাকায়৷
পথে বেরলো সে, বড় আনন্দের দিন...
হঠাৎ ভুতনাথ লাফিয়ে উঠলে, চিত্কার করে উঠলো,
বন্দে মাতরম্, বন্দে মাতরম্৷
মেঘনা নদীর সেই মাঝি আজ গান ভুলে গেছে,
উদাস নয়নে সে এখন নদীর ধারে বসে থাকে৷
হরিদাসী এখন গঞ্জের নিষিদ্ধ এলাকায় সন্ধ্যের পরে দাঁড়িয়ে থাকে
একমুঠো অন্নের আশায়৷
ভুতনাথ মাহাতো শহরের ফুটপাথে রাত কাটায়,
নি:স্তব্ধ রাত্রে তার কাশির শব্দ শোনা যায়৷
অথচ, ঠিক তেমনি করে সেদিনের মতো আজও
হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ টাকায় ব্যয় করে
স্বাধীনতাদিবস পালিত হয়,
লালকেল্লার দুর্গ থেকে ভাষণ প্রতি ঘরে ঘরে শোনা যায়,
হরিদাসী, রমজান মিঞা, ভুতনাথ মাহাতো
চিত্কার করে বলে ওঠে -
স্বাধীনতা, তুমি কার?
স্বাধীনতা, তুমি কিসের জন্যে?"
Thursday, August 10, 2006
টুকিটাকি
একটু ঢাক পেটাই - গুরুচণ্ডা৯তে লেখা "বুলবুলভাজা"।
" (১) এখন গরমকাল - বেজায় গরম, যাকে বলে "পীক সামার" - গোটা ইংল্যাণ্ডে লোক হাঁসফাঁস করছে৷ করবে নাই বা কেন,প্রধাণত: শীতের দেশ, সেখানে দুম করে বত্রিশ-তেত্রিশ-কোথাও পঁয়ত্রিশ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা অস্বস্তিকর তো বটেই৷ তুমুল জল্পনা - উনিশশো এগারোর রেকর্ড (সাঁইত্রিশ ডিগ্রী) হয়তো ভাঙতে পারে৷ সকালের মেট্রোতে খবর - "Commuters in London are travelling in temperatures higher than those in which cattle are transported. Buses in London have reached 52 degree Celcius, while the tube reached 47 degrees. According to the EU guidelines, cattle are not to be transported in temperatures above 27 degrees." হাঁসফাঁসানো লোকে কটিবস্ত্র গলিয়ে ঝাঁক বেঁধে দৌড়েছে সমুদ্রের ধারে৷ লণ্ডনের ট্রাফালগার স্কোয়্যারে ঘুরতে গেলে ওখানকার ফোয়ারাতে অগণিত স্নানদৃশ্য - মতান্তরে চোখের আরাম৷
(২) এইচ এম এস গ্লস্টার - যে কিনা বেইরুট থেকে একশো আশি জন আটকে পরা ব্রিটিশদের সাইপ্রাসে নিয়ে এসেছে, ক্রমশ আরো আসবে - আনুমানিক বিশ হাজার - ডানকার্কের পর এই প্রথম এত বড় ইভ্যাকুয়েশন৷
(৩) লেবাননের ওপর আরো ইজরায়েলী বোমা-বর্ষন৷
(৪) জি-৮ সামিটে বড়দা বুশ এবং ছোট ভাই ব্লেয়ারের ঘনিষ্ঠ কথোপকথন - যেখানে রাষ্ট্রপুঞ্জ, হেজবোল্লার পাশাপাশি আলোচনার বিষয়বস্তু হয় একটা সোয়েটার৷
(৫) ফুটবলের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ "সেল" - জুভেন্টাস, লাজিও, ফিওরেন্টিনা আর এ সি মিলানের শাস্তির পরে কোন ফুটবলারের বাজারে কত দাম৷
(৬) তৃতীয়বার বাবা হলেন গর্ডন ব্রাউন৷৷৷
...
এর মাঝে দুটো ছোট্ট খবর একবার সামনে এসেই মিলিয়ে যায়, বুলবুলভাজার হেডলাইন সেগুলোই...
(১) সেই এক নিরীহ ব্রাজিলিয় ইলেক্টিশিয়ানের কথা মনে পড়ে? সেই জাঁ চার্লস ডি মেনেজেস? বাইশে জুলাই, ২০০৫ যাকে সশস্ত্র পুলিশবাহিনী স্টকওয়েল টিউব স্টেশনের ভিতরে গুলি করে মারে "সুইসাইড বম্বার" সন্দেহে - কোন প্রশ্ন না করে, কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে? প্রায় এক বছর পর ক্রাউন প্রসিকিউশন সার্ভিসের রায় - কোন পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে কোন প্রমাণ নেই, হ্যাঁ, কিছু ভুল হয়েছিলো বটে৷
"Despite mistakes made in planning and communication by officers, there had been "insufficient evidence to provide a realistic prospect of conviction against any individual police officer"."
ইনডিপেন্ডেন্ট পুলিশ কমিশনের রিপোর্ট অন্ধকারে থেকে যায়, সম্ভবত পুরো ঘটনার কঠোর-সমালোচনার জন্যে৷ ক্রাউন প্রসিকিউশন সার্ভিসের রায় - ১৯৭৪ সালের "কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ এবং সুরক্ষা" আইনের সেকশন তিন এবং তেত্রিশ নম্বর ধারার আওতায় মেট্রোপলিটান পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্ত হোক - for "failing to provide for the health, safety and welfare" of Mr Menezes on 22 July - খুন নয়, ফেইলিং টু প্রোভাইড হেল্থ, সেফটি অ্যাণ্ড ওয়েলফেয়ার৷ পুলিশ কখনো খুন করে না৷
সাঁইত্রিশ ডিগ্রী তাপমাত্রায় স্টকওয়েল টিউব স্টেশনের পাশে জাঁ চার্লস ডি মেনেজেসের অস্থায়ী স্মৃতিসৌধে পড়ে থাকা ফুলগুলো শুকোতে থাকে...
(২) সোয়ান হান্টার শিপইয়ার্ড থেকে ধীরগতিতে বেরিয়ে যায় ইয়ার্ডে তৈরী হতে থাকা শেষ জাহাজটা - কাজ শেষ হবে গ্লাসগোতে৷ টাইন নদীর দুধার নীরব চোখে তাকিয়ে থাকে ক্রমশ: দূরে যেতে থাকা ষোল হাজার টনের RFA Lyme Bay -র দিকে৷ একশো ছেচল্লিশ বছরের জাহাজ তৈরীর ইতিহাস শেষ, বন্ধ হল টাইনের ধারের শেষ জাহার তৈরীর ইয়ার্ড৷ প্রতিরক্ষা দপ্তরের বক্তব্য ক্রমবর্ধমান খরচ, এবং কাজ শেষ হতে দেরীই এই কনট্র্যাক্ট বাতিল করে দেওয়ার কারণ, এবং, তার জন্যে দায়ী সোয়ান হান্টারের ম্যানেজমেন্ট৷ জাহাজের কোয়ালিটি নিয়ে কোন বিতর্কই নেই৷
কয়েক দশক আগেও এই একই সোয়ান হান্টারে কাজ করতো প্রায় পঁয়তাল্লিশ হাজার শ্রমিক, নয় নয় করে ষোলশোর বেশি জাহাজ তৈরী হয়ে বেরিয়েছে এই ইয়ার্ড থেকে...কিন্তু নর্থ-সাউথ ডিভাইড অন্যান্য ইয়ার্ড আর কোলিয়ারিগুলোর মতন এরও শেষ বাঁশি বাজিয়ে দিলো৷
সাঁইত্রিশ ডিগ্রী তাপমাত্রায় পুড়তে থাকে ধুলো ঢাকা নির্জন সোয়ান হান্টার - টাইন নদীর ধারের শেষ শিপইয়ার্ড৷৷৷হয়তো এবার এখানে জাহাজ ভাঙা হবে..."
" (১) এখন গরমকাল - বেজায় গরম, যাকে বলে "পীক সামার" - গোটা ইংল্যাণ্ডে লোক হাঁসফাঁস করছে৷ করবে নাই বা কেন,প্রধাণত: শীতের দেশ, সেখানে দুম করে বত্রিশ-তেত্রিশ-কোথাও পঁয়ত্রিশ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা অস্বস্তিকর তো বটেই৷ তুমুল জল্পনা - উনিশশো এগারোর রেকর্ড (সাঁইত্রিশ ডিগ্রী) হয়তো ভাঙতে পারে৷ সকালের মেট্রোতে খবর - "Commuters in London are travelling in temperatures higher than those in which cattle are transported. Buses in London have reached 52 degree Celcius, while the tube reached 47 degrees. According to the EU guidelines, cattle are not to be transported in temperatures above 27 degrees." হাঁসফাঁসানো লোকে কটিবস্ত্র গলিয়ে ঝাঁক বেঁধে দৌড়েছে সমুদ্রের ধারে৷ লণ্ডনের ট্রাফালগার স্কোয়্যারে ঘুরতে গেলে ওখানকার ফোয়ারাতে অগণিত স্নানদৃশ্য - মতান্তরে চোখের আরাম৷
(২) এইচ এম এস গ্লস্টার - যে কিনা বেইরুট থেকে একশো আশি জন আটকে পরা ব্রিটিশদের সাইপ্রাসে নিয়ে এসেছে, ক্রমশ আরো আসবে - আনুমানিক বিশ হাজার - ডানকার্কের পর এই প্রথম এত বড় ইভ্যাকুয়েশন৷
(৩) লেবাননের ওপর আরো ইজরায়েলী বোমা-বর্ষন৷
(৪) জি-৮ সামিটে বড়দা বুশ এবং ছোট ভাই ব্লেয়ারের ঘনিষ্ঠ কথোপকথন - যেখানে রাষ্ট্রপুঞ্জ, হেজবোল্লার পাশাপাশি আলোচনার বিষয়বস্তু হয় একটা সোয়েটার৷
(৫) ফুটবলের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ "সেল" - জুভেন্টাস, লাজিও, ফিওরেন্টিনা আর এ সি মিলানের শাস্তির পরে কোন ফুটবলারের বাজারে কত দাম৷
(৬) তৃতীয়বার বাবা হলেন গর্ডন ব্রাউন৷৷৷
...
এর মাঝে দুটো ছোট্ট খবর একবার সামনে এসেই মিলিয়ে যায়, বুলবুলভাজার হেডলাইন সেগুলোই...
(১) সেই এক নিরীহ ব্রাজিলিয় ইলেক্টিশিয়ানের কথা মনে পড়ে? সেই জাঁ চার্লস ডি মেনেজেস? বাইশে জুলাই, ২০০৫ যাকে সশস্ত্র পুলিশবাহিনী স্টকওয়েল টিউব স্টেশনের ভিতরে গুলি করে মারে "সুইসাইড বম্বার" সন্দেহে - কোন প্রশ্ন না করে, কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে? প্রায় এক বছর পর ক্রাউন প্রসিকিউশন সার্ভিসের রায় - কোন পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে কোন প্রমাণ নেই, হ্যাঁ, কিছু ভুল হয়েছিলো বটে৷
"Despite mistakes made in planning and communication by officers, there had been "insufficient evidence to provide a realistic prospect of conviction against any individual police officer"."
ইনডিপেন্ডেন্ট পুলিশ কমিশনের রিপোর্ট অন্ধকারে থেকে যায়, সম্ভবত পুরো ঘটনার কঠোর-সমালোচনার জন্যে৷ ক্রাউন প্রসিকিউশন সার্ভিসের রায় - ১৯৭৪ সালের "কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ এবং সুরক্ষা" আইনের সেকশন তিন এবং তেত্রিশ নম্বর ধারার আওতায় মেট্রোপলিটান পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্ত হোক - for "failing to provide for the health, safety and welfare" of Mr Menezes on 22 July - খুন নয়, ফেইলিং টু প্রোভাইড হেল্থ, সেফটি অ্যাণ্ড ওয়েলফেয়ার৷ পুলিশ কখনো খুন করে না৷
সাঁইত্রিশ ডিগ্রী তাপমাত্রায় স্টকওয়েল টিউব স্টেশনের পাশে জাঁ চার্লস ডি মেনেজেসের অস্থায়ী স্মৃতিসৌধে পড়ে থাকা ফুলগুলো শুকোতে থাকে...
(২) সোয়ান হান্টার শিপইয়ার্ড থেকে ধীরগতিতে বেরিয়ে যায় ইয়ার্ডে তৈরী হতে থাকা শেষ জাহাজটা - কাজ শেষ হবে গ্লাসগোতে৷ টাইন নদীর দুধার নীরব চোখে তাকিয়ে থাকে ক্রমশ: দূরে যেতে থাকা ষোল হাজার টনের RFA Lyme Bay -র দিকে৷ একশো ছেচল্লিশ বছরের জাহাজ তৈরীর ইতিহাস শেষ, বন্ধ হল টাইনের ধারের শেষ জাহার তৈরীর ইয়ার্ড৷ প্রতিরক্ষা দপ্তরের বক্তব্য ক্রমবর্ধমান খরচ, এবং কাজ শেষ হতে দেরীই এই কনট্র্যাক্ট বাতিল করে দেওয়ার কারণ, এবং, তার জন্যে দায়ী সোয়ান হান্টারের ম্যানেজমেন্ট৷ জাহাজের কোয়ালিটি নিয়ে কোন বিতর্কই নেই৷
কয়েক দশক আগেও এই একই সোয়ান হান্টারে কাজ করতো প্রায় পঁয়তাল্লিশ হাজার শ্রমিক, নয় নয় করে ষোলশোর বেশি জাহাজ তৈরী হয়ে বেরিয়েছে এই ইয়ার্ড থেকে...কিন্তু নর্থ-সাউথ ডিভাইড অন্যান্য ইয়ার্ড আর কোলিয়ারিগুলোর মতন এরও শেষ বাঁশি বাজিয়ে দিলো৷
সাঁইত্রিশ ডিগ্রী তাপমাত্রায় পুড়তে থাকে ধুলো ঢাকা নির্জন সোয়ান হান্টার - টাইন নদীর ধারের শেষ শিপইয়ার্ড৷৷৷হয়তো এবার এখানে জাহাজ ভাঙা হবে..."
Wednesday, August 02, 2006
ওরা ভবিষ্যতের সন্ত্রাসবাদী
দুটো খবর -
বাংলালাইভ মজলিশে দূর্গার লেখাটা পড়ে থমকে গেলাম৷ কিছুদিন ধরেই এই বিষয়টা নিয়ে লেখার ইচ্ছে ছিলো, আজ মনে হল দূর্গার লেখাটা দিয়ে শুরু করি৷
"কাল ছবিটা তাড়াতে চেয়েছি অনেক, আজ আবার এই লেখাটায় করে সে এসে পৌঁছলো আমার সামনে৷ তুলে দিচ্ছি - 'He picks up the body of the smallest one and holds it up for a second to show us. The boy is dressed in green shorts and white sleeveless t-shirt. Aside from the white dust that covers his body, there are no signs of the blast trauma and falling concrete that likely killed him. His eyes are closed and the only evidence of his violent death seems to be the slight gritting of his teeth.'
মুছে দিতে চাই ওকে মন থেকে, এখানেই ক'দিন আগে পড়া দাওয়াইটাই কাজে লাগাতে চাই, "ভবিষ্যতের সন্ত্রাসবাদী" ভাবতে চাই ওকে, কিন্তু পারি না৷ ও ঠিক গিয়ে ঠাঁই নেয় ছোট্ট দুটো হাফপ্যান্ট পরা পায়ের পাশে, যে ঘুমিয়ে থাকা পা দুটোতে আদর করে আমি অফিসে এসেছি আজ৷ সত্যিই মনে হয় - পুরোপুরি অপ্রকৃথিস্ত না হয়ে গেলে এই পৃথিবীতে স্বাভাবিকভাবে থাকা খুবই কঠিন৷
ওরা ভবিষ্যতের সন্ত্রাসবাদী৷ একজন লিখেছিলেন (সেই বাংলালাইভেই) - যে তিনশোজন বোমার আঘাতে মারা গেছে, খোঁজ নিয়ে দেখলে জানা যাবে তার মধ্যে দুশোজনই সন্ত্রাসবাদী, আর পঞ্চাশজন 'ভবিষ্যতের সন্ত্রাসবাদী'৷ সেদিন চমকেছিলাম - কি অদ্ভুত সহজভাবে আমরা মানুষকে চিহ্নিত করে দিই...যে সাইঁত্রিশটা শিশু মারা গেলো, তাদের গায়ে আমরা সভ্য শিক্ষিত মানুষের দল কি অনায়াসেই ছাপ মেরে দিয়েছিলাম সেদিন...ওরা ভবিষ্যতের সন্ত্রাসবাদী...
"কত হাজার মরলে পরে, মানবে তুমি শেষে
বড্ড বেশি মানুষ গেছে বানের জলে ভেসে"
আজ নিজেকে সভ্য, শিক্ষিত বলতে লজ্জা করলো৷
Wednesday, July 26, 2006
একটা গানের খাতা
কলেজে পড়তে গিয়ে পাকেচক্রে জড়িয়ে গেছিলুম ছাত্র-রাজনীতিতে। বামপন্থী বাড়ি, ওই একই কলেজে দিদিও পড়তো, তার ইনফ্লুয়েন্স...ছাত্র ফেডারেশনই হল ঠিকানা। কার একটা ঘরে যেন (নাম মনে নেই) একটা পুরোনো টিনের বাক্স খুঁজে পেলুম, ছাত্র ফেডারেশনের সম্পত্তি - আগের কমরেডরা রেখে গেছে। সেই বাক্স ঘাঁটতে গিয়ে হাতে এলো একটা সাইক্লোস্টাইল করা খাতা...অসংখ্য গান লেখা - গণসঙ্গীত - কিছু চেনা, কিছু নতুন। পরের বছরগুলোতে ওই খাতাটা বুকের মধ্যে করে রাখতুম। কলেজে ছেড়ে চলে আসার আগের দিন, আমার উত্তরাধিকারী ধীমানকে দিয়ে এসেছিলুম।
গানগুলো সঙ্গ ছাড়েনি, এখনও গুণগুণিয়ে...ঘরে বা চানঘরে...ছেলেকে শোনানোর জন্যে...কয়েকদিন আগে একটা গান পুরোটা মনে না পড়াতে সেই খাতাটার কথা মনে পড়লো - কত যে গান ছিলো ওতে...
শমিক গানটা যোগার করে দিয়েছে, লক্ষ্মী ছেলে...
হুঁশিয়ার, ও সাথী কিষাণ মজদুর ভাইসব হুঁশিয়ার।
মৃত্যুর বিভীষিকা ছড়াতে ছড়াতে গ্রাম
জ্বালাতে জ্বালাতে মাটি
হিংস্র সাপের রাশি তুলেছে ফনা
কেড়ে নিতে বাঁচবার লড়বার অধিকার
রক্তে রক্তে বোনা ফসলের অধিকার
সাথীদের খুনে রাঙা পথে দ্যাখো
হায়েনার আনাগোনা...
জানি পারবে না কেড়ে নিতে জনতার অধিকার
পারবে না কেড়ে নিতে পারবে না,
পারবে না শত্রুরা পারবে না।
জাগ্রত জনতার রোষানলে পুড়ে যাবে
পুড়ে যাবে শত্রুর শাণিত ফনা।
পারবে না শত্রুরা পারবে না৷
তাই আহ্বান দিকে দিকে নয় আর দেরি নয়,
সময় তো নেই আর ভাই রে
জোটটাকে আমাদের বজ্রকঠিন করে
তুলে নাও হাতিয়ার ভাই রে
ছিঁড়ে ফ্যালো দৃঢ় হাতে চক্রান্তের জাল
বিভেদের কুমন্ত্রণা,
সাথীদের খুনে রাঙা পথে দ্যাখো
হায়েনার আনাগোনা...
জানি জ্বলছে জ্বলছে শত অগ্নিপাথার বুকে
চক্ষে চক্ষে জ্বলে তীব্র ঘৃণা
সাথীদের খুনে বুকে উল্কা-জ্বালার দাহ
রক্তিম শপথের ভরা চেতনা
সাথীদের খুনে রাঙা পথে দ্যাখো
হায়েনার আনাগোনা...
তাই আহ্বান
ও সাথী কিষাণ মজদুর ভাই শোন আহ্বান।
তাই আহ্বান দিকে দিকে নয় আর দেরি নয়,
সময় তো নেই আর ভাই রে
জোটটাকে আমাদের বজ্রকঠিন করে
তুলে নাও হাতিয়ার তাই রে
কালজয়ী সংগ্রাম শুরু করো বন্ধুরা
হেঁকে বলো সইব না, সইব না
সাথীদের খুনে রাঙা পথে পথে
হায়েনার আনাগোনা আর সইবো না।
সাথীদের খুনে রাঙা পথে দ্যাখো
হায়েনার আনাগোনা...
থ্যাঙ্ক ইউ, শমিক।
গানগুলো সঙ্গ ছাড়েনি, এখনও গুণগুণিয়ে...ঘরে বা চানঘরে...ছেলেকে শোনানোর জন্যে...কয়েকদিন আগে একটা গান পুরোটা মনে না পড়াতে সেই খাতাটার কথা মনে পড়লো - কত যে গান ছিলো ওতে...
শমিক গানটা যোগার করে দিয়েছে, লক্ষ্মী ছেলে...
হুঁশিয়ার, ও সাথী কিষাণ মজদুর ভাইসব হুঁশিয়ার।
মৃত্যুর বিভীষিকা ছড়াতে ছড়াতে গ্রাম
জ্বালাতে জ্বালাতে মাটি
হিংস্র সাপের রাশি তুলেছে ফনা
কেড়ে নিতে বাঁচবার লড়বার অধিকার
রক্তে রক্তে বোনা ফসলের অধিকার
সাথীদের খুনে রাঙা পথে দ্যাখো
হায়েনার আনাগোনা...
জানি পারবে না কেড়ে নিতে জনতার অধিকার
পারবে না কেড়ে নিতে পারবে না,
পারবে না শত্রুরা পারবে না।
জাগ্রত জনতার রোষানলে পুড়ে যাবে
পুড়ে যাবে শত্রুর শাণিত ফনা।
পারবে না শত্রুরা পারবে না৷
তাই আহ্বান দিকে দিকে নয় আর দেরি নয়,
সময় তো নেই আর ভাই রে
জোটটাকে আমাদের বজ্রকঠিন করে
তুলে নাও হাতিয়ার ভাই রে
ছিঁড়ে ফ্যালো দৃঢ় হাতে চক্রান্তের জাল
বিভেদের কুমন্ত্রণা,
সাথীদের খুনে রাঙা পথে দ্যাখো
হায়েনার আনাগোনা...
জানি জ্বলছে জ্বলছে শত অগ্নিপাথার বুকে
চক্ষে চক্ষে জ্বলে তীব্র ঘৃণা
সাথীদের খুনে বুকে উল্কা-জ্বালার দাহ
রক্তিম শপথের ভরা চেতনা
সাথীদের খুনে রাঙা পথে দ্যাখো
হায়েনার আনাগোনা...
তাই আহ্বান
ও সাথী কিষাণ মজদুর ভাই শোন আহ্বান।
তাই আহ্বান দিকে দিকে নয় আর দেরি নয়,
সময় তো নেই আর ভাই রে
জোটটাকে আমাদের বজ্রকঠিন করে
তুলে নাও হাতিয়ার তাই রে
কালজয়ী সংগ্রাম শুরু করো বন্ধুরা
হেঁকে বলো সইব না, সইব না
সাথীদের খুনে রাঙা পথে পথে
হায়েনার আনাগোনা আর সইবো না।
সাথীদের খুনে রাঙা পথে দ্যাখো
হায়েনার আনাগোনা...
থ্যাঙ্ক ইউ, শমিক।
একজন প্রতিবাদী গায়ক - পীট সীগার
দ্য নিউ ইয়র্কারে প্রকাশিত একটি আর্টিকল সকলের সাথে শেয়ার করার লোভ সামলাতে পারলাম না...
The New Yorker
April 17, 2006
THE PROTEST SINGER
Pete Seeger and American folk music.
BY ALEC WILKINSON
'You wouldn't have heard that speech fifty years ago," Toshi said.
The New Yorker
April 17, 2006
THE PROTEST SINGER
Pete Seeger and American folk music.
BY ALEC WILKINSON
It was the ambition of the singer and songwriter Pete Seeger, as a child, in the nineteen-twenties, to be an Indian, a farmer, a forest ranger, or possibly an artist, because he liked to draw. He went to Harvard, joined the tenor-banjo society, and studied sociology in the hope of becoming a journalist, but near the end of his second year he left, before taking his exams, and rode a bicycle north from New York through New England. He was tall and thin and earnest and polite. He would make a watercolor sketch of a farm from the fields, then knock on the farmhouse door and ask if he could trade the drawing for a meal.
In the nineteen-forties, Seeger was a member of a group called the Almanac Singers, which included Woody Guthrie. The name derived from their belief that many farming homes had two books: a Bible and an almanac. The Almanac Singers appeared mainly at strikes and at rallies held to support the rights of laborers. Seeger says that they were "famous to readers of the Daily Worker," the newspaper of the Communist Party. When the Almanac Singers broke up, Seeger played on his own for a while, then became a member of the Weavers, whose version of "Goodnight Irene," by Leadbelly, was, for thirteen weeks in 1950, the best-selling record in America. The Weavers quit playing in 1952, after an informant told the House Un-American Activities Committee that three of the four Weavers, including Seeger, were Communists. (Seeger knew students at Harvard who were Communists and, with the idea in mind of a more equitable world, he eventually became one himself.) Following the informant's testimony, the Weavers found fewer and fewer places to work. Seeger and his wife, Toshi, decided that Seeger should sing for any audience that would have him. They printed a brochure and sent it to summer camps, colleges, schools, churches, and any organization that they thought might be sympathetic. Seeger began engaging in what he calls "guerrilla cultural tactics." Arriving in a town he'd been hired to play in, he'd call the local radio station, where the disk jockey, remembering the Weavers, would usually invite him to talk on the air. Seeger would discuss his concert, then play that night, and be gone before anyone had time to object. In towns where his appearances were more widely publicized, he grew accustomed to pickets with signs saying things such as "Khrushchev's Songbird." In "How Can I Keep from Singing," a biography of Seeger, David Dunaway writes that a poll conducted during the period by Harvard said that fifty-two per cent of the American people thought Communists should be put in jail.
A promoter brought the Weavers back together in 1955 for a concert at Carnegie Hall—he had told each of them that the others wanted to do it. The concert sold out, and they began performing together again. Seeger left them in 1957. One of the songs from their catalogue, "Pay Me My Money Down," the lament of an indignant sailor, appears on "We Shall Overcome: The Seeger Sessions," Bruce Springsteen's new record, which will be released on April 25th. The other songs on the record are versions of folk songs that Seeger recorded and tended to sing on his own.
Springsteen began listening to Seeger in 1997, when he was asked to provide a song for a Seeger tribute record. To choose one, he told me, he "went to the record store and bought every Pete record they had. I really immersed myself in them, and it was very transformative. I heard a hundred voices in those old folk songs, and stories from across the span of American history—parlor music, church music, tavern music, street and gutter music. I felt the connection almost intuitively, and that certain things needed to be carried on; I wanted to continue doing things that Pete had passed down and put his hand on. He had a real sense of the musician as historical entity—of being a link in the thread of people who sing in others' voices and carry the tradition forward— and of the songwriter, in the daily history of the place he lived, that songs were tools, and, without sounding too pretentious, righteous implements when connected to historical consciousness. At the same time, Pete always maintained a tremendous sense of fun and lightness, which is where his grace manifested itself. It was cross-generational. He played for anyone who would listen. He played a lot for kids. When I set the musicians up in my house to make this record, and we started playing Pete's songs, my daughter said, 'That sounds like fun—what is that?'"
Seeger typically performed with the simplest instrumentation—by himself, with banjo and guitar, and, in the Weavers, with another guitar player. Springsteen is accompanied by drums, bass, piano, guitar, accordion, banjo, double fiddles, horns, and backup singers. His versions include more references than Seeger's did—Dixieland, Gospel, stringband music, rhythm and blues, and rock and roll among them. It is as if folk music, temporarily dormant, had been revived in a more populist and modern form. "The Seeger Sessions" does not include any songs that Seeger wrote, such as 'Turn! Turn! Turn!" which was a No. 1 record for the Byrds in 1965. Springsteen recorded "If I Had a Hammer," but felt that it asserted itself too forcefully among the other songs, possibly because it was so well known. The songs he chose, he said, are "ones that I heard my own voice in. When you're going through material that way, you're always trying to find your place in the story. With the songs I picked, I knew who those characters were, and I knew what I wanted to say through them to transform what we were doing. That's your part in the passing down of that music. You have to know what you're adding. Every time a folk song gets sung, something gets added to that song. Why did I pick Pete Seeger songs instead of songs by the Carter Family or Johnny Cash or the Stanley Brothers? Because Pete's library is so vast that the whole history of the country is there. I didn't feel I had to go to someone else's records. It was very broad. He listened to everything and collected everything and transformed everything. Everything I wanted, I found there."
Seeger is eighty-six—he was born in May of 1919. He and his wife, Toshi, who is half Japanese, live in Beacon, New York, about sixty miles north of Manhattan. They have been married for sixty-three years. Their house is remote and surrounded by woods. Seeger chops wood almost every day and complains when he can't. The woods around the house are so clean that it is as if someone had gone through them with a broom. Trying to recall a name or a fact, he sometimes places his hand over his forehead and closes his eyes. When he speaks at any length, he tends to look into the middle distance, as if reading the words there. He has a sharp nose and full, round cheeks. His eyes are blue and heavily lidded and so small that he seems to be regarding a person from some remove. His conversation passes quickly from one subject to another, as if many things were occurring to him at once. He never aspired to a career as a singer, and he dislikes being so well known. Celebrity, he thinks, comes for most people at the expense of others, whose accomplishments are more practical and serious. He and Bruce Springsteen met several years ago, either at a tribute to Woody Guthrie or at the Grammys; Springsteen thinks the former, and Seeger the latter. Seeger is pleased that Springsteen, whom he regards as a friend, has recorded songs from his past—he thinks they're good songs, and he is gratified by the thought that people will hear them—but he is not looking forward to the mail and the attention that will follow. He has work he wants to do. He gets so many letters as it is that he can answer them only with postcards. His nature is almost unflaggingly hopeful, but a line of melancholy runs through it. Once, after a performance in Spain that didn't go well, he wrote in a journal, "I seem to stagger about this agonized world as a clown, dressed in happiness, hoping to reach the hearts and minds of the young. When newspaper reporters ask me what effect my songs have, I try and make a brave reply, but I am really not so certain."
When Seeger was younger, his singing voice fell between the range of an alto and a tenor—what he calls a split tenor. It was robust, and even in complicated passages his pitch was precise. He had a dramatic falsetto that he could deliver as a moan or a shout. He sang without vibrato or with only an occasional trace of it. His phrasing was subtle but resourceful, enough to inflect meaning and character, and to enliven a narrative, but not so much as to deflect the listener toward the singer's personality. His presence onstage was confident, offhand, and compelling, but he regarded any attention paid him as a performer to be misplaced. He considered a singer to be a tool for a song. He believes that songs can make people feel powerful when they aren't by any measure except their own determination. As a young man, he embraced the conviction that songs are a way of binding people to a cause. A piece of writing may be read once or twice; a song is sung over and over. Performing, he did not expect the audience to attend to him so much as he tried to engage them. Seeger felt that folk songs sounded best when sung by a crowd, and whenever he could he tried to persuade people to sing with him. Every word in every song he ever sang was intelligible, which had a lot to do with the force of his performances. The issue at stake, he says, between him and Bob Dylan at the Newport Folk Festival in 1965, when he said that he wished he had an axe to cut the cord to Dylan's microphone, was not that Dylan had performed with electric instruments—there were no prohibitions against them, he points out; the Paul Butterfield Blues Band had been hired for the festival—but that no one could hear the words to Dylan's song. "It was a good song, too," Seeger says. " 'Maggie's Farm.' " He was sure that Dylan wanted the audience to hear the words—or what would be the purpose of singing the song—and that the people in charge of the microphones were failing him.
Folk songs frequently contain every kind of trouble and harm. A lot are about shipwrecks and strikes and mine collapses and heroes dying by the hands of cowards. Often, they are songs that people sang to themselves or with their neighbors to commemorate a disaster or to give themselves courage or to console themselves for losses and defeats and suffering and hardship. Sometimes they celebrate victories, but typically there is more misfortune than triumph. They have a lot of dark corners. They don't muse so much. They don't describe life from a balcony overlooking a harbor from which the boat is departing at sunset with your sweetheart. The folk-song version of that is we-were-to-wed, but-I-killed-her-instead. They can go on and on. Dylan's recordings of songs that were ten minutes long, verse upon verse, were radical in the context of rock and roll, but he was making use of a conventional folk-music form. It is no observation of my own that Seeger did more to make people aware of folk music in the middle of the twentieth century than any other performer. Not that everyone thanked him for it. David Dunaway writes that purists often resented Seeger's influence. Folk songs, they believed, were the product of refinements made by different singers in different places. A true folksinger knew not only the way a song was sung in Kentucky but also its variations in Oklahoma and Tennessee, not to mention its antecedents in Wales. Once Seeger recorded a song, they said, his version became so widely known that it effaced the others.
Seeger hasn't made a record or sung a concert by himself for several years—his voice is no longer reliable; he thinks he overused it—but he remains an accomplished banjo player and guitarist. Last week, he recorded some tracks in his living room, with his half brother, the old-time musician Mike Seeger, and the guitarist Ry Cooder, for a project of Cooder's. In March, I heard him sing several songs for an afternoon assembly of schoolchildren in Beacon. At the assembly, I sat next to Toshi. The children sat cross-legged on the floor. The principal introduced Seeger by saying, "He's probably the person who's done more for this country than anyone else I can think of."
'You wouldn't have heard that speech fifty years ago," Toshi said.
Seeger bought his land in Beacon in 1949. He and Toshi had two small children. (Later, they had another.) They were living in Greenwich Village with Toshi's parents, and they wanted to move to the country. Seeger was thirty, and Toshi was twenty-seven. He was becoming well known as a musician, but they had no money yet to speak of. A real-estate agent showed them properties he regarded as inexpensive. "I remember a big barn at one place and a little stream and some woods," Seeger told me. "Five thousand dollars. I said no, I couldn't afford it." The agent showed them an old barn with some land for three thousand dollars. "I said I couldn't afford that, either." The agent asked, "What can you afford?" Seeger said, "How about just some land." He showed them a patch of woods on the side of a mountain set back from the river. It had been part of a woodlot attached to one of the brickyards that used to operate along the riverbank. "Hand-made bricks," Seeger said. "All the yards had mountain land above them. They'd have wood carried to the river on a sledge and turned into charcoal and bricks. This parcel had been logged clean in 1911, but it had a cliff, and no one wanted to climb it. People thought it was too steep to build on, but I climbed up here and saw that it leveled off at the top for a bit, and there was room to put a house."
Seeger brought Toshi to the top of the cliff and said, "See what a nice view we'll have." Toshi is small and dark-haired. Her gaze is direct and measuring, and she is more pragmatic than Seeger. She looked around at the brush and the trees that enclosed them and said, "View of what?" They paid seventeen hundred and fifty dollars for seventeen and a half acres. That summer, they moved to the property with their children, who were one arid three, and lived in a trailer while Seeger chopped down trees. A stream ran through a ravine below their campsite. Toshi would carry her younger child on her hip and have the older one grab her skirt, and they would go down to the stream like pioneers and collect water for cooking and washing. Seeger was often gone on the weekends, working. At the end of August, he was to sing near Peekskill, fifteen miles away, on a stage in a field, at a concert to benefit the Harlem chapter of the Civil Rights Congress. The star of the concert was Paul Robeson, whose father had been a slave. Robeson had a law degree from Columbia, but he made his living as an actor and singer. He had played Othello in London and on Broadway, and he had appeared in the London stage version of "Show Boat" and, later, in the movie. In 1934, he went to Russia and became persuaded that Russian society was more just than America's. The Peekskill paper wrote that he was "violently and loudly pro-Russian." The Ku Klux Klan had a chapter in the area. Before the concert, vigilantes tore down the stage. The organizers built another stage on another lot, and the concert was rescheduled, for September 4th. Dunaway writes that, during the interval, the Ku Klux Klan sent a letter to an organization that Seeger had been part of, People's Artists, thanking it and Seeger for the seven hundred and twenty-two applications for membership it had received since the stage was destroyed.
Seeger and Toshi and their children, Toshi's father, and two friends of the Seegers drove to Peekskill for the concert. They passed men and women and children who shouted obscenities at them. There were woods on three sides of the field and a road on the fourth. Members of several unions surrounded the site so that no one could get in who wasn't supposed to be there, a means, they hoped, of keeping out the vigilantes. At the concert, a woman named Sylvia Kahn sang "The Star-Spangled Banner." "A pianist played Prokofiev, I think," Seeger said. "I played two or three songs, a country blues I learned from Woody called'T for Texas,' and I sang 'If I Had a Hammer,' for one of the first times. Paul Robeson sang for an hour. He sang 'Ol' Man River,' from 'Show Boat,' which he was famous for. He had a man standing behind him and one on either side, so that he wouldn't be hit by a sniper firing from the woods. I suppose they could have got him from the road in front, but you couldn't have someone stand in front of him while he sang."
The concert ended before nightfall—the organizers wanted everyone to be able to leave before dark. Robeson got into a car, then out the other side of it and into another and possibly into a third one. "Unless you were watching closely, you wouldn't have known what car he was in," Seeger said. Robeson's car was among the first to leave. A lot of people had arrived from Manhattan in chartered buses. Seeger left about an hour after the concert ended. When he tried to make the turn toward Beacon, a policeman diverted him. On the road were pieces of glass. "Around a corner was a young man throwing stones at each car that passed," Seeger said. "The cars were moving slowly, and he'd run right up beside them and launch the stones from four feet as hard as he could. They were about the size of a baseball. They came from piles of them that were built up beside the road. While we were singing, these people had been collecting stones."
Toshi's father put the children on the floor of the car and lay on top of them. Rocks broke all the windows except the back ones. Seeger saw a policeman farther up the road. "I stopped and shouted, 'Officer, aren't you going to do something?' All he said was 'Move on. Move on.'" When the chartered buses reached Manhattan that evening, riders told a reporter from the Times that, even as far away as Yonkers, nearly twenty-five miles, people had thrown stones at them.
Seeger drove to a campground that had showers—there was no running water at his place—and he and Toshi and her father washed the glass from the children's hair. They all had to move carefully in order not to be cut by shards that were hidden in their clothes.
When Seeger had cleared two acres, he went to the New York Public Library, on Forty-second Street, and looked up "log cabin." He planned to build a house from trees he had cut down. The Weavers were beginning to work in nightclubs. Seeger would either take an evening train to join them or drive. If he drove, he made his way back early in the morning up the West Side, and when he found a packing crate thrown out on the sidewalk he would knock it apart and take the wood home. Much of it he used to frame the roof. If he didn't drive, he would catch the night train delivering mail up the Hudson. The train stopped at each town. Seeger would sleep on the train and arrive home to have breakfast with his family.
People would visit from the city, and Seeger would hand them a shovel or a saw. He had intended, with their help, to haul logs from the woods to where he had dug the foundation, but the trees were too heavy. Instead, he found a man in Beacon with a draft horse. "His name was Watson Shannon," Seeger said. "I can still see the roof of his house from the lawn. He only died recently. How he got the draft horse here, I don't know. I guess he walked it. Anyway, he showed up in the morning, and he had a long chain. He walked up the hill from the house with the horse, and he'd wrap the chain around the log and slap the horse, and then he went running down after it, wrapping the reins around stones and tree trunks. He said once you got the horse started you didn't want it to stop."
Recently, Seeger took me through the cabin, which no one lives in anymore—he and Toshi live in a larger house built later, on the other side of a small clearing. Past the front door was a big room with tree-trunk beams, a stone fireplace, a kitchen, and a picture window. Through the window was the river, about a mile away. "That was our first extravagance," Seeger said of the window. "A hundred dollars." He stepped across the room and stood beside it. "I put up some shelves to hold records and books right here," he went on. "The baby's crib was under it. One night, we heard a terrible crash, and the shelf and all the books and records had come down on her crib. Fortunately, it was a strong oak crib." He shook his head. "That's the kind of stupid thing I've done all my life," he said plaintively. "I have taken greater risks than I should have in raising my children. I remember walking along the edge of a cliff with my son and not watching him closely. Because I could watch myself, I took it for granted that he could." He shrugged. "Anyway, my daughter's fifty-seven now."
He said that the bulk of the wood in the house was oak, but that he had also used maple and hickory. He hadn't expected ever to have enough money for electricity, so he made no allowance for the wires to enter the foundation. Three years later, to install them, he had to dig underneath it. Off the kitchen was a second room, where there was a bed and a rocking chair, some books, and another stone fireplace. "The first stonework was terrible," Seeger said, thrusting his chin toward the fireplace. "It didn't have any form or design. I made lots of mistakes. After that, I went around sketching all the old farmhouses in Westchester for their stonework, and I learned that the old masons would set their best stones at the corners and run a line between them, then build up the courses."
Several inches above the fireplace and toward one side were two stones that were smaller than the stones around them. One was about the size of a grapefruit, and the other had paving tar around it and gravel embedded like shrapnel in the tar. "They came into the car during the riot and didn't go out," Seeger said. "I thought that if I put them there I would never forget what had happened."
We closed the door on the cabin and walked over to the main house. Toshi was leaving to run errands in town. Everything we needed to make soup and salad for lunch was in the refrigerator, she said. She told Seeger that she was putting a pear tart in the toaster oven for dessert. "This is practice for Pete," she told me. "I want to be sure, in case I go join my ancestors, that he can take care of himself. I don't want to have to lower baskets of food from the heavens." Before she left, she took the phone off the hook. "It's been ringing all morning," she said.
We sat down to eat at a table by a window, with the river at our backs. Seeger began talking about his father, Charles, who was also a musician. "My father was a big influence on me," he said. Somewhat mournfully, he added, "He was overenthusiastic all his life. First about this, then about that." Seeger s older brother John told Dunaway, "The biggest danger for Peter was whether he'd be swallowed up in father's dreams."
As a teen-ager, Charles became an accomplished pianist. He liked to go to symphony concerts, and he could look at complicated scores and know what the music should sound like. "He thought the great symphonies would save the human race," Seeger said. "He thought they had something to teach us that couldn't be expressed in words." He went to Harvard, then he spent a year in Germany, and for a while he was a conductor in Cologne. While he was there, he realized that he could no longer hear the flutes and the piccolos, and that he was going deaf. He decided that he would become a composer instead. He returned to New York, where he met Seeger s mother, Constance de Clyver Edson, a violinist. Her grandfather was the headmaster of a fancy school in New York, and she had been brought up partly in Paris and Tunisia. The two of them performed together at society parties, "a soiree here, a soiree there," Seeger said.
They were married in 1911. Charles was hired to establish the music department at the University of California at Berkeley. A friend took him to the lettuce fields east of San Francisco where, Seeger said, "he saw children the same age as his own being worked to the bone," and he was never the same. When the First World War broke out, he made speeches denouncing it as an imperialist war. His wife asked him not to, but he persisted. Eventually, the university gave him an extended sabbatical, with the understanding that he wouldn't return.
"He bought a Ford Tin Lizzie," Seeger said, "a Model T, and he drove his family east. It was slow going, and on the way he got this grand scheme. He said to my mother, 'Rather than save our music for the rich people in the city, why not take it out and play it for people in the small towns?' He was going to be a one-family Chautauqua, bringing music to the workers."
Beginning in the winter of 1918, on his parents' new property in Patterson, New York, about sixty miles northeast of Manhattan, Charles carefully built a trailer to haul behind his car. It took a year and a half. Seeger turned in his chair and showed me on the wall, among a collection of family pictures, a small, shiny black-and-white photograph. Charles and his wife and the children—Seeger has two brothers—are standing on a sidewalk beside the black Model T. Behind the car is a portion of what looks a little like a covered wagon. The trailer's tires were made of solid rubber. Underneath it was a platform that could slide out to become a stage. His mother played the violin, and his father played a small organ, the kind that chaplains used in the First World War. The family slept in beds in the trailer. They left New York and drove slowly south, intending to reach Florida eventually. In Richmond, Virginia, Dunaway writes, the pavement was so hot that their tires sank into it. "The trip was a disaster," Seeger says. At night, his mother did the family's laundry in a pot of water over a fire. The night she pulled Peter, a year and a half old, from the embers was the night, he told me, she called it off.
The Seegers returned to Charles's parents' house in Patterson. For the summer, they lived in the barn. The kids would throw tennis balls against the wall and call it barn squash. At four, Seeger was sent to boarding school, he said, but he came home a year and a half later. His father had been appalled to leam that his son had had scarlet fever, and no one had told him. Charles and
Constance had in the meantime moved to Nyack, on the west bank of the Hudson. Constance wanted Seeger trained as a classical musician, but Seeger didn't care to be. When she insisted that he learn to read music, he said that he just wanted to have fun. She worried that he would grow up to be a musical illiterate. She left instruments around the house for him to find, and, by the time he was five or six, he could play songs on the organ, the marimba, the piano, and the squeezebox. 'Years later, I asked my father, "When do you think people should learn to read music?'" Seeger said. "And he told me, 'When they know what kind of music they want to play.' He said, You don't learn to read before you speak, and you don't learn to dance before you walk.'"
The librarian in Nyack gave Seeger novels by Ernest Thompson Seton, who helped start the Boy Scouts. "Camping and woodcraft," Seeger said. "The first one I really liked was called "Rolf in the Woods.' Rolf was fifteen years old in 1810. He was being beaten by his uncle, and his mother dies. He runs away and finds in the woods a wigwam with an old Indian living in it, trapping animals and exchanging their skins at the hardware store for tools and nails. The boy asks if he can stay with him, and the Indian points to a corner, and the boy falls asleep. The uncle comes along later and says, "I see you're with the Indian, I'll go get my gun," so Rolf and the Indian run off together, and they end up in the Adirondacks. Anyway, you can see how it goes."
Seeger's brother John joined the Boy Scouts, "but I thought it was for the birds," Seeger says, "saluting the flag." He bought a length of muslin and took it to a neighbor and had her sew it into a shape he could use to make a teepee. Among the photographs on the wall is one of him as a scrawny little boy, without a shirt, and holding a bow and arrow. "That's me pretending to be an Indian," he said.
When Seeger was eight, in 1927, his parents separated. His father eventually married a modernist composer named Ruth Crawford. They moved to Maryland, and began working in Washington. In 1932, Seeger was enrolled, on a scholarship, at Avon Old Farms, a boys' school in Connecticut. Briefly, to make money, he shined the other boys' shoes. He acted in the school plays: "Saint Joan," by George Bernard Shaw, and "Hamlet." "At thirteen, I played the female parts, with my hair curled and falsies," he said. He also worked on the woods crew. "There was a nice French Canadian in charge of teaching us how to sharpen the axe with a file, and how to chop without hurting ourselves. He'd go through a piece of forest and blaze trees that had to come down—a weeding process—and we'd cut them." Seeger also had his own newspaper, which he mimeographed and handed out. The playwright and poet Edna St. Vincent Millay visited the school to see a production of one other plays. "They told me that, with my newspaper, I should interview her," Seeger said. "I had never interviewed anyone famous. I didn't know what to ask. Finally I blurted out, 'What do you think of Shakespeare?' I don't remember anything else of the interview."
After three years at Avon Old Farms, Seeger went to Harvard on a scholarship. "I roomed right above the Harvard Union, which was a big dining hall, and I made a little bit of money as a waiter," he said. "Then I went to a place where I could get free meals if I washed pots." Visiting his father in the summers, he had heard rural American music and become captivated by the banjo.
As a sophomore, he failed one of his winter exams and lost his scholarship. "I wasn't sorry to leave Harvard," he said. "I was disgusted by what I considered the cynicism displayed by one of my professors. He would say, 'Every society has a spring, a winter, a summer, and a fall,' and scoff at us trying to stop Hitler. He said, 'All you can do is accommodate.' I was young and idealistic." Crossing the campus shortly before he departed, he passed one of his classmates, John F. Kennedy. "He was walking with someone who was carrying papers for him, I think, and saying something about being very annoyed at not having been able to reach someone on the phone."
His father, he said, was part of a group of musicians and composers, including Aaron Copland, called the Composers' Collective. The Composers' Collective concerned itself with writing music for strikes and unemployment lines, and for the new world order, "The closest they all got to writing real songs was when they wrote rounds," Seeger said. "My father wanted to publish a book called 'Rounds About the Very Rich.' He was fond of one that was sung in three parts, like 'Row, Row Your Boat.' It went like this." Seeger put down his fork and, with his chin raised, began to sing, "Oh, joy upon this earth/ to live and see the day/when Rockefeller senior/shall up to me and say/ Comrade, can you spare a dime?'"
Charles liked Appalachian music—Seeger said that he may have inspired Copland to write "Appalachian Spring." In any case, he introduced his son to a woman from Kentucky who called herself Aunt Molly Jackson. "She sang, 'I am a union woman/ just as brave as I can be/I do not like the bosses/and the bosses don't like me,'" Seeger said. "And that was how I began to hear folk music."
Seeger s father believed that music's most important purpose was social. For a while, he worked in Washington for the W.P.A. music project. He wrote out what he called his ten purposes of music. Seeger went upstairs to a loft where he keeps his office to look for a copy. I heard him going through papers. "What did I do with that file?" he said. "What did I do? This is ridiculous. Absolutely ridiculous. Aah, here it is." He came downstairs and handed it to me. The first principle was "Music, as any art, is not an end in itself but is a means for achieving larger ends." Another was "Music as a group activity is more important than music as an individual accomplishment." He also wrote that the necessary question to ask was not" 'Is it good music?' but 'What is the music good for?'; and if it bids fair to aid in the welding of the people into more independent, capable and democratic action, it must be approved."
While I was reading, Seeger abruptly stood up and said, "I forgot the pear tart." He brought the tart to the table, then he went to the freezer and came back with a column of ice-cream containers—the Seegers had recently had a birthday party. While we ate the tart and the ice cream, we got to talking about the beautiful stone walls in the countryside around Beacon.
"In my mind's eye, there's two teenagers, and the father's saying, 'Boys, you get ten feet of wall built, or you don't get any supper,' " Seeger said. "And one of them says to the other, 'Next year I'll be fourteen, and I'm going to get a job at the factory—they pay you two dollars a week. He don't see that much money in a month.' The father says, what will I do without you? The farm will go back to forest.'"
He finished his tart and put his hands in his lap, like a penitent. "The opening of the American West meant the reforestation of the East," he said. "That's important." Then he began collecting the dishes.
Seeger's politics are of the most extravagantly conservative kind. He believes ardently in the Constitution and the Bill of Rights. His interpretation of them is literal. In all his years of activism, through the movements for workers' rights and civil rights, the movement against the Vietnam War, and the ecological movement, in all of which he figured prominently, there is no conceit that he has more emphatically embraced than that all human beings are created equal. In the early and middle part of the twentieth century, such a conviction made a person not a patriot but a socialist. When Seeger moved to the country, he held a couple of meetings with a middle-aged couple, the only other Communists around, then quit the Party. "I thought it was pointless," he said. "I realized I could sing the same songs I sang whether I belonged to the Communist Party or not, and I never liked the idea anyway of belonging to a secret organization."
After lunch, we went out and looked at the river, and I could see where Seeger had been standing, in 1955, when a car arrived, and the man driving it asked if he was Pete Seeger. Then he handed Seeger an envelope and left. Seeger opened the envelope and called out to Toshi, "They've finally got around to me." He had been summoned to testify before the House Un-American Activities Committee. He might have cited the Fifth Amendment, as many people did, but he didn't, because doing so suggested that he had something to hide. He decided to rely instead on the protection of the First Amendment.
"Mr. Seeger, prior to your entry in the service in 1942," he was asked, "were you engaged in the practice of your profession in the area of New York?"
"It is hard to call it a profession," Seeger said. "I kind of drifted into it and I never intended to be a musician, and I am glad I am one now, and it is a very honorable profession, but when I started out actually I wanted to be a newspaperman, and when I left school—"
"Will you answer the question, please?"
"I have to explain that it really wasn't my profession," Seeger said. "I picked up a little change in it."
"Did you practice your profession?"
"I sang for people, yes, before World War II, and I also did as early as 1925."
"And upon your return from the service in December of 1945, you continued in your profession?"
"I continued singing," Seeger said, "and I expect I always will."
Then he was asked whether he had appeared at an event that had been announced in the Daily Worker.
"I am not going to answer any questions as to my association, my philosophical or religious beliefs or my political beliefs, or how I voted in any election, or any of these private affairs," he said. "I think these are very improper questions for any American to be asked, especially under such compulsion as this. I would be very glad to tell you my life if you want to hear of it."
They didn't. What the committee members wanted was to have him say that he had been a Communist and to give them names of others who had been, and he wouldn't. Again and again, he said, "My answer is the same as before." Eventually, they gave up.
He left the hearing knowing that he was certain to be indicted for contempt of Congress, and, on March 26, 1957, he was, by a federal grand jury, on ten counts. The indictment meant that he couldn't leave the Southern District of New York without permission. Every time he went somewhere to work, he had to send a telegram saying where he was going and how he was getting there. At one night club, the announcer introduced him by saying, "Here's Pete Seeger, out on bail." In hotel rooms, he had to check the closets to be sure that he wasn't about to be set up. According to Dunaway, a group called Texans for America persuaded textbook publishers to remove any mention of him. A woman who had him sing at a barbecue in her back yard received a summons from HUAC. He was to play two nights in Nyack. The American Legion discovered, in time to prevent the second night's performance, that the theatre had an expired license. To renew it, the owner of the theatre had to pay a fee. The town offices closed before he could, and the mayor and the clerk left town.
Seeger's trial was not held until March of 1961. The jury took an hour and twenty minutes to decide that he was guilty. He was sentenced to a year in jail. In May of 1962, an appeals court ruled that the indictment was flawed and overturned the conviction. As we stood in the yard, he quoted a line from the decision: " 'We are not inclined to dismiss lightly claims of Constitutional stature because they are asserted by one who may appear unworthy of sympathy.' " He said again, " 'Unworthy of sympathy,'" and shook his head.
Before Seeger's confrontation with HUAC, people sometimes regarded his optimism as childish, and unrealistic, as a habit of mind inconsistent with the moral rigor of a serious person. Afterward, he became a figure of undeniable stature. He had stared down jail time. He had stood amid peril for his beliefs. He had typified the principles of all the brave people he had sung about.
Here is a story told to me lately by a man named John Cronin, who is the director of the Pace Academy for the Environment, at Pace University. Cronin has known Seeger for thirty years. "About two winters ago, on Route 9 outside Beacon, one winter day, it was freezing—rainy and slushy, a miserable winter day—the war in Iraq is just heating up and the country's in a poor mood," Cronin said. "I'm driving north, and on the other side of the road I see from the back a tall, slim figure in a hood and coat. I'm looking, and I can tell it's Pete, He's standing there all by himself, and he's holding up a big piece of cardboard that clearly has something written on it. Cars and trucks are going by him. He's getting wet. He's holding the homemade sign above his head—he's very tall, and his chin is raised the way he does when he sings—and he's turning the sign in a semicircle, so that the drivers can see it as they pass, and some people are honking and waving at him, and some people are giving him the finger. He's eighty-four years old. I know he's got some purpose, of course, but I don't know what it is. What struck me is that, whatever his intentions are, and obviously he wants people to notice what he's doing, he wants to make an impression—anyway, whatever they are, he doesn't call the newspapers and say, 'I'm Pete Seeger, here's what I'm going to do.' He doesn't cultivate publicity. That isn't what he does. He's far more modest than that. He would never make a fuss. He's just standing out there in the cold and the sleet like a scarecrow. I go a little bit down the road, so that I can turn and come back, and when I get him in view again, this solitary and elderly figure, I see that what he's written on the sign is 'Peace.'"
Monday, July 17, 2006
রোজবেরি টপিং, ফাটা প্যান্ট এবং মাউন্টেন রেসকিউ
আরেট্টু হলে রবিবার নিউক্যাসল জার্নালে হেডলাইন হচ্ছিলো - "মাউন্টেন রেসকিউ সেভস কাপল ফ্রম রোজবেরি স্লোপ" বা "আ ডেয়ারিং রেসকিউ বাই দ্য মাউন্টেন রেসকিউ টীম"...
গপ্পোটা বলি শোন৷
প্রতি হপ্তাতেই প্রায় কোথাও না কোথাও যাই - বয়স হচ্ছে, ওজন বাড়ছে - তাই হাঁটতে, বেড়ানোও হয়, সাথে একটু গা-ঘামানো, এই করেই যদি ওজনটা কমে৷ ব্রিটিশরা হাঁটতে খুব ভালোবাসে, তাই হাঁটার রুট নিয়ে প্রচুর সাইট আছে, ওয়াকিং রুটগুলো খুব ভালো করে মেনটেন করা হয়, রীতিমতন ভালো ডিরেকশন দেওয়া...তো সেই রকম এক সাইট থেকে "রোজবেরি টপিং" এর খবর জোগাড় হল৷ মিডলসবরোর কাছে "নর্থ-ইয়র্ক মুর"-এর একদম শুরুর দিকে, মাইল চারেকের পথ, ক্যাটেগরি "strenuous" (যদিও সেটা আগে খেয়াল করে দেখা হয়নি) - হেঁটে একটা পাহাড়ের মাথায় ওঠা এবং নামা, পথটা একটা বনের মধ্যে দিয়ে গেছে, আশেপাশের দৃশ্য অতীব সুন্দর - এরকমই দাবি ছিলো লিফলেটে৷ তাই গেলুম, পার্কিং লটে গাড়ি রেখে একটু খেয়ে হাঁটার শুরু৷
কিছুদূর গিয়ে দেখলুম রাস্তা দুভাগ হয়েছে, একটা পথ বাঁদিকে চলে গেছে, দিব্যি সুন্দর হাঁটা রাস্তা, আরেকটা সিধে ওপরদিকে উঠেছে, ভালো চড়াই (সেটা কতদূর ভালো সেটা ক্রমশ প্রকাশ্য)৷ সিধে রাস্তাতে দেখলাম বেশ ওপরে জনাদুই লোক উঠছে, আমরাও ভাবলুম এটাতেই যাই৷ আমি একবার সাবধানবাণী উচ্চারণ করেছিলুম - একটা পুঁচকে ছেলে আছে, ফুটপাথ ধরেই যাই, কিন্তু...তো যাই হোক, এই ভোটের ফল তো জানা - ভোট নয়, ভেটো - চড়াইটাই ধরা ঠিক হল৷
চড়াইয়ে তিনটে ধাপ, প্রথম ধাপটা ছোট, পঞ্চাশ ফুট মতন - খুব বেশি খাড়া নয়, কিন্তু ঝুড়ো মাটি৷ তার মধ্যে যে পাথর-টাথরগুলো আটকে রয়েছে সেই ধরে প্রথম ধাপ অবধি তো পৌঁছনো গেলো৷ সেখানে আবার সেই জনসাধারণের জন্যে নির্মিত পথখানা...চড়াইয়ে উঠছি, তাই সেখানাকে ইগনোর মোডে ফেলে দেওয়া গেলো৷ এবার দ্বিতীয় ধাপ৷ প্রথম কুড়ি-তিরিশ ফুট অবধি ঠিকঠাক, কিন্তু হাত ব্যবহার না করলে হেঁটে ওঠা অসম্ভব৷ আমি সুমনাকে বল্লুম তুমি আর ঋক আগে ওঠ, আমি পিছনে আসছি, দরকারে আমি ধরতে পারবো - কেউ যদি গড়ায় আর কি৷ সে প্ল্যান খাটলো না৷ ঋকবাবু মায়ের সঙ্গে যাবেন না, এবং তাঁর প্রথম আপত্তি হল হাতে মাটি লাগবে৷ একটু চেষ্টা-চরিত্তির করতে করতেই তিনি একবার ধপাস হয়ে ভ্যাঁ জুড়লেন - অগত্যা আমার হাত ধরে তাঁর ওঠা শুরু হল৷ আমি এক হাতে ঋককে একটু করে তুলছি, তারপর নিজে উঠছি, পিঠে ব্যাগ, পিছনে সুমনা আসছে৷ এবার যত উঠি, দেখি স্লোপটা তত খাড়া হচ্ছে৷ সামনের প্রায় শ তিনেক ফুট বেশ খাড়া - আমাকেও হাত-পা ব্যবহার করে রীতিমতন স্ক্র্যাম্বল করতে হচ্ছে৷ এবং ঋককে নিয়ে ওঠা ক্রমশ: মুশকিল হচ্ছে৷ কিন্তু ততক্ষণে প্রায় পঞ্চাশফুট উঠে এসেছি, ঐ পথে নামা আরো কঠিন৷ আমি আগে পুরুলিয়ায় পাহাড়ে চড়েছি দড়িদড়া নিয়ে - আমি পারলেও, ঋককে নামাতে পারবো না, সুমনা বলেই দিলো ও নামবে না, মানে পারবে না৷ সুতরাং উঠে যাওয়াই একমাত্র উপায়৷
প্রায় মাঝামাঝি যখন পৌঁছেছি, তখন আরেকটা কোনক্রমে দাঁড়ানো বা বসার জায়গা, সেখানে ঋককে বসিয়ে ভালো করে ওপর-নীচ খতিয়ে দেখলুম৷ সামনে আরো অন্তত: দেড়শো ফুট, প্রায় ন্যাড়া, মাটিতে অল্প ঘাস, কিন্তু সে ঘাস ধরে ওঠার চেষ্টা করলে ঘাস উপড়ে আসবে৷ আগে অন্যান্য লোক গেছে বলে (এবং ভেজা অবস্থায় গেছে নির্ঘাত) কিছু খোঁদল রয়েছে - জুতোর খোঁদল৷ ওগুলো ধরে ওঠা ছাড়া কোন গতিক নেই৷ আরেকবার ভাবলুম নেমে যাবো কিনা - কিন্তু তখন নামা অসম্ভব হয়ে গেছে৷ সুমনা ঐ ছোট ধাপের কাছাকাছি যখন পৌঁছেছে, তখন আমি ঋককে নিয়ে আবার উঠতে শুরু করলুম - এবার আর কোথাও দাঁড়ানোর উপায় নেই৷ নিচে সুমনাকে যে টেনে তুলবো, তাও সম্ভব নয়৷ এক হাতে ঋককে একটু করে তুলছি, এবার ওকে বাধ্য হয়ে হাত দিয়েও খামচে উঠতে হচ্ছে, একটা জুতোর গর্তে ঋক যখন পা রাখছে, ওকে পিছন থেকে ধরে আমি নিজে এক ধাপ উঠছি৷ মাঝে মাঝেই ঋক আমার ঘাড়ে ওঠার জন্যে বায়না করছে - ঘাড়ে উঠবে কি - পিঠে বাঁধা গেলে হয়তো ওঠা সম্ভব৷ হঠাত্ "ফড়াত্" - আমার সাধের আউটডোর ট্রাউজারের পায়ের ভিতরের দিকে যে সেলাই থাকে সেখানে ফাটলো৷ প্রথমে ছোট৷ তারপরে এক একটা ধাপ উঠছি, আরেকটু ফড়াত্...ঋকের কান্না, ঐ ফড়াত্ ফড়াত্, আর সুমনার "এবার কোনদিকে" শুনতে শুনতে আর ঋককে কোনমতে ঠেলতে ঠেলতে দ্বিতীয় ধাপের মাথায় তুলে ধপ করে বসে পড়লুম৷ ঋককে একটা পাথরের পাশে বসিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে দেখে চমত্কৃত৷ ওখান থেকে পড়লে আর দেখতে হবে না...গড়গড়িয়ে সিধে নীচে, তাতে মরণ না হলেও হাসপাতালে গমন অবশ্যম্ভাবী৷ দ্বিতীয় চমক নিজেকে দেখে - বেল্টের ঠিক নীচ থেকে হাঁটুর তলা অবধি - প্যান্টটা পুরো পতাকা হয়ে ঝুলছে, পুলিশে চাইলে ইনডিসেন্ট এক্সপোজারের জন্যে হাজতে ভরতে পারে, একদম কেলেংকারী কেস নয় যদিও, তবুও...
এবার তৃতীয় সমস্যা হল সুমনাকে দেখতে পাচ্ছি না৷ আমরা যেখানে দাঁড়িয়ে, তার নীচের বেশ কিছুটা অতি খাড়া, তার নীচে খান কয়েক ঝোপঝাড়, কিন্তু সুমনা নেই৷ হাঁক পাড়লুম - ঝোপের আড়াল থেকে সাড়া এলো৷ সুমনা ওখানে আটকে আছে, আর এগোতে পারছে না৷ অনেক হাঁকডাকের পর মাথাটা বেরলো, তারপর বাকিটা - ওখানে চারটে খোঁদলে হাত-পা আটকে সুমনা প্রায় ত্রিশঙ্কু৷ বেশ কিছুটা মেহনত করে ফুট কয়েক উঠলো, কিন্তু এমন একটা জায়গায় চলে গেছে যেখান থেকে ধরে ওঠার মতন আর কিছু নেই৷ আমি যে গর্তগুলো বেয়ে উঠেছি সেগুলো থেকে বেশ কিছুটা ডানদিকে সরে গেছে৷ এবার আমি যত বলি গর্তগুলোর কাছে এসো, সে আর পারে না৷ বলে আমি আর উঠতে পারবো না, নামতেও পারবো না - তুমি এমার্জেন্সী ডায়াল করো৷ মুশকিল হল আমি ঋককে বসিয়ে যেতে পারছি না, কারণ আমি নামলেই তিনি ধারে এসে পর্যবেক্ষণ শুরু করবেন - তাহলে পড়ে যাবার প্রভুত চান্স৷ দড়িও নেই যে দড়ি নামিয়ে দেবো...আর অন্য কেউও সেদিক দিয়ে আসছে না যে সাহায্য করবে৷ গতিক না দেখে করলুম ৯৯৯ - তারা বলে "ফায়ার, অ্যামবুলেন্স না পুলিশ" - আমি বল্লুম "মাউন্টেন রেসকিউ" - তো সেখানে ট্রান্সফার করে দিলো৷ ওদের পুরো অবস্থাটা বল্লুম - যে আমার বউ রোজবেরি টপিংয়ের স্লোপে ঝুলছে, উঠতেও পারছে না, নামা সম্ভব নয় - বাঁচাও...সে কত প্রশ্ন - তোমার নাম কি, বউয়ের নাম কি, বয়স কত, তোমার সাথে আর কেউ আছে কিনা, বাচ্চা-টাচ্চা - বল্লুম হ্যাঁ, একটা ছোট ছেলে আছে, কিন্তু সে সেফ...তখন বল্লে যে আমরা আসছি৷
এর ঠিক পরেই দেখি একটা অল্পবয়সী ছেলে আর তার বাবা ঐ পথেই উঠছে৷ ছেলেটা রীতিমতন মাউন্টেনিয়ারিং জানে, চটপট উঠছে, তার বাবাও তাই৷ ওরা পাশ দিয়ে আসার সময় সুমনাকে বললো যে ওরা যেখান দিয়ে যাচ্ছে, সেখান দিয়ে আসতে৷ ছেলেটার বাবা বেশ ভারিক্কী চেহারার, ওকে দেখে সুমনার ভরসা মনে হয় বাড়লো কিছুটা, হাঁচোড়-পাঁচোড় করে মাথা অবধি চলে আসার পরে আমি টেনে নিলুম৷ সাথে সাথেই মাউন্টেন রেসকিউয়ের ফোন - যে আমরা রওনা দিচ্ছি - তোমরা ঠিক আছো কি? আমি বল্লুম যে আরেকটা টীম আসছিলো, তারা সাহায্য করেছে, আমার বউ উঠে এসেছে...
এর পর আর গপ্পো নেই৷ আমার প্যান্ট তো ঐরকম পতাকা হয়ে রয়েছে, ব্যাগ থেকে ঋকের একটা স্পেয়ার শার্ট নিয়ে পায়ের ফাঁক দিয়ে বাঁধলুম, হাঁটুর কাছে নিজের রুমালটা বাঁধলুম, সুমনার কাছে সেফটিপিন ছিলো - সেই দিয়ে নিজের জামাটা প্যান্টের সঙ্গে আটকে দিলুম - যাতে কোনরকমে রেখেঢেকে রাখা যায়৷ কিন্তু মুশকিল হল এক পা করে হাঁটছি, আর ফুট করে আরেকটু ছিঁড়ছে...দেখলুম ঐ করে আর পুরো পাহাড়ের মাথা অবধি যাওয়া যাবে না, তাইলে আর প্যান্টটাই থাকবে না...অগত্যা নেমে গেলুম - এবার রাস্তা দিয়ে৷ অবশ্য সুমনার অলরেডী তখন প্যানিক হয়ে গেছে - রাস্তাটা মোটামুটি ঢালু - কিন্তু তাতেও ভয় পাচ্ছে...ধরে ধরে নামলো...
কি শিখলুম?
(১) আউটডোর ট্রাউজার কক্ষণো সেল-এ কিনতে নেই৷
(২) আবার যাবো - কিন্তু এবার একটা দড়ি আর দুটো হুক নিয়ে৷
(৩) সুমনা বলেছে আর কক্ষণো ফুটপাথ ছেড়ে শর্টকাট ধরবে না৷
গপ্পোটা বলি শোন৷
প্রতি হপ্তাতেই প্রায় কোথাও না কোথাও যাই - বয়স হচ্ছে, ওজন বাড়ছে - তাই হাঁটতে, বেড়ানোও হয়, সাথে একটু গা-ঘামানো, এই করেই যদি ওজনটা কমে৷ ব্রিটিশরা হাঁটতে খুব ভালোবাসে, তাই হাঁটার রুট নিয়ে প্রচুর সাইট আছে, ওয়াকিং রুটগুলো খুব ভালো করে মেনটেন করা হয়, রীতিমতন ভালো ডিরেকশন দেওয়া...তো সেই রকম এক সাইট থেকে "রোজবেরি টপিং" এর খবর জোগাড় হল৷ মিডলসবরোর কাছে "নর্থ-ইয়র্ক মুর"-এর একদম শুরুর দিকে, মাইল চারেকের পথ, ক্যাটেগরি "strenuous" (যদিও সেটা আগে খেয়াল করে দেখা হয়নি) - হেঁটে একটা পাহাড়ের মাথায় ওঠা এবং নামা, পথটা একটা বনের মধ্যে দিয়ে গেছে, আশেপাশের দৃশ্য অতীব সুন্দর - এরকমই দাবি ছিলো লিফলেটে৷ তাই গেলুম, পার্কিং লটে গাড়ি রেখে একটু খেয়ে হাঁটার শুরু৷
কিছুদূর গিয়ে দেখলুম রাস্তা দুভাগ হয়েছে, একটা পথ বাঁদিকে চলে গেছে, দিব্যি সুন্দর হাঁটা রাস্তা, আরেকটা সিধে ওপরদিকে উঠেছে, ভালো চড়াই (সেটা কতদূর ভালো সেটা ক্রমশ প্রকাশ্য)৷ সিধে রাস্তাতে দেখলাম বেশ ওপরে জনাদুই লোক উঠছে, আমরাও ভাবলুম এটাতেই যাই৷ আমি একবার সাবধানবাণী উচ্চারণ করেছিলুম - একটা পুঁচকে ছেলে আছে, ফুটপাথ ধরেই যাই, কিন্তু...তো যাই হোক, এই ভোটের ফল তো জানা - ভোট নয়, ভেটো - চড়াইটাই ধরা ঠিক হল৷
চড়াইয়ে তিনটে ধাপ, প্রথম ধাপটা ছোট, পঞ্চাশ ফুট মতন - খুব বেশি খাড়া নয়, কিন্তু ঝুড়ো মাটি৷ তার মধ্যে যে পাথর-টাথরগুলো আটকে রয়েছে সেই ধরে প্রথম ধাপ অবধি তো পৌঁছনো গেলো৷ সেখানে আবার সেই জনসাধারণের জন্যে নির্মিত পথখানা...চড়াইয়ে উঠছি, তাই সেখানাকে ইগনোর মোডে ফেলে দেওয়া গেলো৷ এবার দ্বিতীয় ধাপ৷ প্রথম কুড়ি-তিরিশ ফুট অবধি ঠিকঠাক, কিন্তু হাত ব্যবহার না করলে হেঁটে ওঠা অসম্ভব৷ আমি সুমনাকে বল্লুম তুমি আর ঋক আগে ওঠ, আমি পিছনে আসছি, দরকারে আমি ধরতে পারবো - কেউ যদি গড়ায় আর কি৷ সে প্ল্যান খাটলো না৷ ঋকবাবু মায়ের সঙ্গে যাবেন না, এবং তাঁর প্রথম আপত্তি হল হাতে মাটি লাগবে৷ একটু চেষ্টা-চরিত্তির করতে করতেই তিনি একবার ধপাস হয়ে ভ্যাঁ জুড়লেন - অগত্যা আমার হাত ধরে তাঁর ওঠা শুরু হল৷ আমি এক হাতে ঋককে একটু করে তুলছি, তারপর নিজে উঠছি, পিঠে ব্যাগ, পিছনে সুমনা আসছে৷ এবার যত উঠি, দেখি স্লোপটা তত খাড়া হচ্ছে৷ সামনের প্রায় শ তিনেক ফুট বেশ খাড়া - আমাকেও হাত-পা ব্যবহার করে রীতিমতন স্ক্র্যাম্বল করতে হচ্ছে৷ এবং ঋককে নিয়ে ওঠা ক্রমশ: মুশকিল হচ্ছে৷ কিন্তু ততক্ষণে প্রায় পঞ্চাশফুট উঠে এসেছি, ঐ পথে নামা আরো কঠিন৷ আমি আগে পুরুলিয়ায় পাহাড়ে চড়েছি দড়িদড়া নিয়ে - আমি পারলেও, ঋককে নামাতে পারবো না, সুমনা বলেই দিলো ও নামবে না, মানে পারবে না৷ সুতরাং উঠে যাওয়াই একমাত্র উপায়৷
প্রায় মাঝামাঝি যখন পৌঁছেছি, তখন আরেকটা কোনক্রমে দাঁড়ানো বা বসার জায়গা, সেখানে ঋককে বসিয়ে ভালো করে ওপর-নীচ খতিয়ে দেখলুম৷ সামনে আরো অন্তত: দেড়শো ফুট, প্রায় ন্যাড়া, মাটিতে অল্প ঘাস, কিন্তু সে ঘাস ধরে ওঠার চেষ্টা করলে ঘাস উপড়ে আসবে৷ আগে অন্যান্য লোক গেছে বলে (এবং ভেজা অবস্থায় গেছে নির্ঘাত) কিছু খোঁদল রয়েছে - জুতোর খোঁদল৷ ওগুলো ধরে ওঠা ছাড়া কোন গতিক নেই৷ আরেকবার ভাবলুম নেমে যাবো কিনা - কিন্তু তখন নামা অসম্ভব হয়ে গেছে৷ সুমনা ঐ ছোট ধাপের কাছাকাছি যখন পৌঁছেছে, তখন আমি ঋককে নিয়ে আবার উঠতে শুরু করলুম - এবার আর কোথাও দাঁড়ানোর উপায় নেই৷ নিচে সুমনাকে যে টেনে তুলবো, তাও সম্ভব নয়৷ এক হাতে ঋককে একটু করে তুলছি, এবার ওকে বাধ্য হয়ে হাত দিয়েও খামচে উঠতে হচ্ছে, একটা জুতোর গর্তে ঋক যখন পা রাখছে, ওকে পিছন থেকে ধরে আমি নিজে এক ধাপ উঠছি৷ মাঝে মাঝেই ঋক আমার ঘাড়ে ওঠার জন্যে বায়না করছে - ঘাড়ে উঠবে কি - পিঠে বাঁধা গেলে হয়তো ওঠা সম্ভব৷ হঠাত্ "ফড়াত্" - আমার সাধের আউটডোর ট্রাউজারের পায়ের ভিতরের দিকে যে সেলাই থাকে সেখানে ফাটলো৷ প্রথমে ছোট৷ তারপরে এক একটা ধাপ উঠছি, আরেকটু ফড়াত্...ঋকের কান্না, ঐ ফড়াত্ ফড়াত্, আর সুমনার "এবার কোনদিকে" শুনতে শুনতে আর ঋককে কোনমতে ঠেলতে ঠেলতে দ্বিতীয় ধাপের মাথায় তুলে ধপ করে বসে পড়লুম৷ ঋককে একটা পাথরের পাশে বসিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে দেখে চমত্কৃত৷ ওখান থেকে পড়লে আর দেখতে হবে না...গড়গড়িয়ে সিধে নীচে, তাতে মরণ না হলেও হাসপাতালে গমন অবশ্যম্ভাবী৷ দ্বিতীয় চমক নিজেকে দেখে - বেল্টের ঠিক নীচ থেকে হাঁটুর তলা অবধি - প্যান্টটা পুরো পতাকা হয়ে ঝুলছে, পুলিশে চাইলে ইনডিসেন্ট এক্সপোজারের জন্যে হাজতে ভরতে পারে, একদম কেলেংকারী কেস নয় যদিও, তবুও...
এবার তৃতীয় সমস্যা হল সুমনাকে দেখতে পাচ্ছি না৷ আমরা যেখানে দাঁড়িয়ে, তার নীচের বেশ কিছুটা অতি খাড়া, তার নীচে খান কয়েক ঝোপঝাড়, কিন্তু সুমনা নেই৷ হাঁক পাড়লুম - ঝোপের আড়াল থেকে সাড়া এলো৷ সুমনা ওখানে আটকে আছে, আর এগোতে পারছে না৷ অনেক হাঁকডাকের পর মাথাটা বেরলো, তারপর বাকিটা - ওখানে চারটে খোঁদলে হাত-পা আটকে সুমনা প্রায় ত্রিশঙ্কু৷ বেশ কিছুটা মেহনত করে ফুট কয়েক উঠলো, কিন্তু এমন একটা জায়গায় চলে গেছে যেখান থেকে ধরে ওঠার মতন আর কিছু নেই৷ আমি যে গর্তগুলো বেয়ে উঠেছি সেগুলো থেকে বেশ কিছুটা ডানদিকে সরে গেছে৷ এবার আমি যত বলি গর্তগুলোর কাছে এসো, সে আর পারে না৷ বলে আমি আর উঠতে পারবো না, নামতেও পারবো না - তুমি এমার্জেন্সী ডায়াল করো৷ মুশকিল হল আমি ঋককে বসিয়ে যেতে পারছি না, কারণ আমি নামলেই তিনি ধারে এসে পর্যবেক্ষণ শুরু করবেন - তাহলে পড়ে যাবার প্রভুত চান্স৷ দড়িও নেই যে দড়ি নামিয়ে দেবো...আর অন্য কেউও সেদিক দিয়ে আসছে না যে সাহায্য করবে৷ গতিক না দেখে করলুম ৯৯৯ - তারা বলে "ফায়ার, অ্যামবুলেন্স না পুলিশ" - আমি বল্লুম "মাউন্টেন রেসকিউ" - তো সেখানে ট্রান্সফার করে দিলো৷ ওদের পুরো অবস্থাটা বল্লুম - যে আমার বউ রোজবেরি টপিংয়ের স্লোপে ঝুলছে, উঠতেও পারছে না, নামা সম্ভব নয় - বাঁচাও...সে কত প্রশ্ন - তোমার নাম কি, বউয়ের নাম কি, বয়স কত, তোমার সাথে আর কেউ আছে কিনা, বাচ্চা-টাচ্চা - বল্লুম হ্যাঁ, একটা ছোট ছেলে আছে, কিন্তু সে সেফ...তখন বল্লে যে আমরা আসছি৷
এর ঠিক পরেই দেখি একটা অল্পবয়সী ছেলে আর তার বাবা ঐ পথেই উঠছে৷ ছেলেটা রীতিমতন মাউন্টেনিয়ারিং জানে, চটপট উঠছে, তার বাবাও তাই৷ ওরা পাশ দিয়ে আসার সময় সুমনাকে বললো যে ওরা যেখান দিয়ে যাচ্ছে, সেখান দিয়ে আসতে৷ ছেলেটার বাবা বেশ ভারিক্কী চেহারার, ওকে দেখে সুমনার ভরসা মনে হয় বাড়লো কিছুটা, হাঁচোড়-পাঁচোড় করে মাথা অবধি চলে আসার পরে আমি টেনে নিলুম৷ সাথে সাথেই মাউন্টেন রেসকিউয়ের ফোন - যে আমরা রওনা দিচ্ছি - তোমরা ঠিক আছো কি? আমি বল্লুম যে আরেকটা টীম আসছিলো, তারা সাহায্য করেছে, আমার বউ উঠে এসেছে...
এর পর আর গপ্পো নেই৷ আমার প্যান্ট তো ঐরকম পতাকা হয়ে রয়েছে, ব্যাগ থেকে ঋকের একটা স্পেয়ার শার্ট নিয়ে পায়ের ফাঁক দিয়ে বাঁধলুম, হাঁটুর কাছে নিজের রুমালটা বাঁধলুম, সুমনার কাছে সেফটিপিন ছিলো - সেই দিয়ে নিজের জামাটা প্যান্টের সঙ্গে আটকে দিলুম - যাতে কোনরকমে রেখেঢেকে রাখা যায়৷ কিন্তু মুশকিল হল এক পা করে হাঁটছি, আর ফুট করে আরেকটু ছিঁড়ছে...দেখলুম ঐ করে আর পুরো পাহাড়ের মাথা অবধি যাওয়া যাবে না, তাইলে আর প্যান্টটাই থাকবে না...অগত্যা নেমে গেলুম - এবার রাস্তা দিয়ে৷ অবশ্য সুমনার অলরেডী তখন প্যানিক হয়ে গেছে - রাস্তাটা মোটামুটি ঢালু - কিন্তু তাতেও ভয় পাচ্ছে...ধরে ধরে নামলো...
কি শিখলুম?
(১) আউটডোর ট্রাউজার কক্ষণো সেল-এ কিনতে নেই৷
(২) আবার যাবো - কিন্তু এবার একটা দড়ি আর দুটো হুক নিয়ে৷
(৩) সুমনা বলেছে আর কক্ষণো ফুটপাথ ছেড়ে শর্টকাট ধরবে না৷
Monday, June 26, 2006
কমার্শিয়াল পার্টনারশিপ
একটা মজার কথা বলি।
আমার ছেলের পাসপোর্ট রিনিউ করতে হবে। ঘটনাচক্রে এই ক্ষুদ্র ব্যক্তি আমেরিকান নাগরিক (এ এক যন্ত্রণা - সেই কবে পনেরো বছর হবে, তবে সে এই নাগরিকত্ব সারেণ্ডার করতে পারবে) - তাই আমেরিকান এমব্যাসীর নিয়ম দেখতে হচ্ছে। আমেরিকান এমব্যাসীতে সব পাসপোর্ট সাইজ ছবি নেয় না - নানা রকম রিক্যোয়ারমেন্ট আছে - আর ছবি তোলার মেশিন থেকে তোলা ছবি নেয় না। ওদের সাইটে বলেছে "আমরা কোন ফোটোগ্রাফার সাজেস্ট করতে পারি না, তবে এর আগে অমুক অমুক দোকান থেকে তোলা ছবি আমরা অ্যাকসেপ্ট করেছি" - দিয়ে একটা লম্বা লিস্টি - আমাদের সবচেয়ে কাছাকাছি বলতে মাইল পনেরো দূরে চেস্টার-লি-স্ট্রীটে একটা দোকান৷ শনিবার সেখেনে গেলুম - তো সকলে বিয়ের ফোটো তুলতে বাইরে গেছে, সামনের শনিবারের জন্যে অ্যাপয়েন্টমেন্ট করতে হল৷ এমনি পাসপোর্ট ফোটো তুলতে লাগে আট পাউণ্ড (চার কপি, সাথে সাথে দেয়) - আমেরিকান পাসপোর্টের ফোটো তুলতে বিশ পাউণ্ড!!! আমি বল্লুম নির্ঘাত কমিশন দেয়, আমার বউ বল্ল "না - এটা কমার্শিয়াল পার্টনারশিপ - ওসব তুমি বুঝবে না":-))
আমার ছেলের পাসপোর্ট রিনিউ করতে হবে। ঘটনাচক্রে এই ক্ষুদ্র ব্যক্তি আমেরিকান নাগরিক (এ এক যন্ত্রণা - সেই কবে পনেরো বছর হবে, তবে সে এই নাগরিকত্ব সারেণ্ডার করতে পারবে) - তাই আমেরিকান এমব্যাসীর নিয়ম দেখতে হচ্ছে। আমেরিকান এমব্যাসীতে সব পাসপোর্ট সাইজ ছবি নেয় না - নানা রকম রিক্যোয়ারমেন্ট আছে - আর ছবি তোলার মেশিন থেকে তোলা ছবি নেয় না। ওদের সাইটে বলেছে "আমরা কোন ফোটোগ্রাফার সাজেস্ট করতে পারি না, তবে এর আগে অমুক অমুক দোকান থেকে তোলা ছবি আমরা অ্যাকসেপ্ট করেছি" - দিয়ে একটা লম্বা লিস্টি - আমাদের সবচেয়ে কাছাকাছি বলতে মাইল পনেরো দূরে চেস্টার-লি-স্ট্রীটে একটা দোকান৷ শনিবার সেখেনে গেলুম - তো সকলে বিয়ের ফোটো তুলতে বাইরে গেছে, সামনের শনিবারের জন্যে অ্যাপয়েন্টমেন্ট করতে হল৷ এমনি পাসপোর্ট ফোটো তুলতে লাগে আট পাউণ্ড (চার কপি, সাথে সাথে দেয়) - আমেরিকান পাসপোর্টের ফোটো তুলতে বিশ পাউণ্ড!!! আমি বল্লুম নির্ঘাত কমিশন দেয়, আমার বউ বল্ল "না - এটা কমার্শিয়াল পার্টনারশিপ - ওসব তুমি বুঝবে না":-))